টয়লেটে শিশুর ব্যবহৃত ডায়াপার বা বেবি ওয়াইপস ফ্ল্যাশ করবেন না
টয়লেটে শিশুর ব্যবহৃত ডায়াপার বা বেবি ওয়াইপস  ফ্ল্যাশ করবেন না

রান্নাঘর ও টয়লেটে যে ৬টি কাজ কখনোই করবেন না

কিছু অভ্যাস আছে আমাদের, যা পুরোপুরি এড়াতে পারলে রান্নাঘর ও টয়লেটের কিছু বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব। তেমনই কয়েকটি অভ্যাসের কথা মনে করিয়ে দিচ্ছি এখানে, কখনোই করা উচিত নয়—

টয়লেটে শিশুর ব্যবহৃত ডায়াপার বা বেবি ওয়াইপস ফ্ল্যাশ করবেন না

বেবি ওয়াইপসের মোড়কে মাঝেমধ্যে লেখা থাকে, ‘ফ্ল্যাশ করার উপযোগী’। কিন্তু সত্যটা হলো, টয়লেট পেপার এবং মানুষের বর্জ্য ছাড়া আর কোনো কিছুই টয়লেটে ফ্ল্যাশ করা উচিত নয়। অন্য কিছু ফ্ল্যাশ করলে তাৎক্ষণিকভাবে না হলেও শেষ পর্যন্ত সেসব পাইপে আটকে বাধার সৃষ্টি করবে। শিশুর ওয়াইপস, ডায়াপার, স্যানিটারি ন্যাপকিন, পেপার টাওয়েল ইত্যাদি পুরো পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থাকেই বাধাগ্রস্থ করতে পারে। তাই শিশুর ওয়াইপস ও ডায়াপার সব সময় ডাস্টবিনে ফেলুন।

ড্রেনে কড়া কোনো কেমিক্যাল ব্যবহার করবেন না

আপনি যদি বেসিন পরিষ্কারের জন্য দোকান থেকে কেনা কোনো ড্রেন ক্লিনার ব্যবহার করেন, তাহলে আজই তা বাদ দিয়ে দিন। এসব ড্রেন ক্লিনার বেসিন পরিষ্কারের ক্ষেত্রে কার্যকর নয়। তার ওপর এসব বেসিন ক্ষয় করে ফেলে। রাসায়নিক ক্লিনারগুলো পাইপ জ্বালিয়ে ফেলতে পারে। এমনকি ওসব স্পর্শ করলে আপনার ত্বকও পুড়ে যেতে পারে।

চুল গলিয়ে ফেলার ক্লিনার ব্যবহার করবেন না

রাসায়নিক ক্লিনারগুলো কিছু চুল এবং আঠালো বর্জ্য আংশিকভাবে দূর করতে পারে। কিন্তু এসব বর্জ্য আবারও জমাট বাঁধে। এসব ক্লিনার শুধু বর্জ্যগুলো ধাক্কা দিয়ে নিচে সরিয়ে দেয়, যেখানে কেমিক্যাল পৌঁছায় না। এ ক্ষেত্রে এনজাইমেটিক ক্লিনার ব্যবহারের পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞেরা। আর বেসিন পরিষ্কার করার কাজে কখনোই কাপড় ঝোলানোর হ্যাঙ্গার ব্যবহার করা উচিত নয়। দৃঢ় কোনো কিছু দিয়ে বেসিন পরিষ্কার করতে গেলে বেসিনের পাইপ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। এতে পাইপ ফেটে যাওয়া, সিল ভেঙে যাওয়া, দুর্গন্ধ ছড়ানো, কীটপতঙ্গের উপদ্রবসহ আরও নানা সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।

রান্নার পর কখনোই তেল–চর্বি ইত্যাদি সিঙ্কে ফেলা যাবে না

রান্নাঘরের সিঙ্কে তেল বা চর্বি ফেলবেন না

রান্নার পর কখনোই তেল–চর্বি ইত্যাদি সিঙ্কে ফেলা যাবে না। সিঙ্কে ফেললে এসব শুরুতে পাইপে জমতে থাকবে। শেষ পর্যন্ত এসব তেল-চর্বির কিছু অংশ চলে যাবে সুয়ারেজ লাইনে। সেখানে গিয়ে অন্যান্য অবাঞ্ছিত ময়লার (যেমন শিশুর ডায়াপার) সঙ্গে মিশবে। এর ফলে সব ময়লা একসঙ্গে জমে পাথরের মতো শক্ত ‘ফ্যাটবার্গ’ সৃষ্টি হয়। ফ্যাটবার্গ পুরো সুয়ারেজ লাইনকেই বিকল করে দিতে পারে। গত বছর ইংল্যান্ডের বর্জ্য পরিশোধন বিভাগ ৬০ মিটারের বেশি লম্বা একটি ফ্যাটবার্গ আবিষ্কার করেছিল। এ ধরনের ভোগান্তি এড়াতে পরামর্শ হলো, হাঁড়িপাতিলের তেল-চর্বি ঘষে ময়লার বালতিতে ফেলে দিন। কিংবা গরম তেল-চর্বি একটি পাত্রে ঢেলে রাখুন, পরে ফেলে দিন। অনেকে পরবর্তী সময় ব্যবহারের জন্যও তেল-চর্বি সংরক্ষণ করেন।

রক্ষণাবেক্ষণের কাজ ফেলে রাখবেন না

পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থারও গাড়ির মতো নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন আছে। এমনকি যখন কোনো সমস্যা থাকে না, তখনও। বাড়িতে কোথাও কোনো পাইপ ফেটে আছে কি না, কিংবা ব্লক আছে কি না, নিয়মিত পরীক্ষা করুন। খেয়াল রাখবেন, আপনার টয়লেটের বেসিন, কমোড, বাথটাব বা শাওয়ারের কোনো অংশ যেন ভাঙা না থাকে।

পয়োনিষ্কাশনের ব্যবস্থারও গাড়ির মতো নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের প্রয়োজন আছে

সমস্যা চিহ্নিত করতে দেরি করবেন না

আপনার যদি সন্দেহ হয় যে বাসার কোথাও কোনো পাইপ ফুটো হয়ে পানি পড়ছে, তাহলে সমস্যা আরও প্রকট হওয়ার আগেই পাইপটি পরীক্ষা করান এবং প্রয়োজন হলে মেরামত করানোর ব্যবস্থা নিন। প্লাম্বিংয়ের সমস্যা এমন নয় যে নিজে নিজেই সেরে যাবে।

সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট