চতুর্থ শিল্পবিপ্লব কিংবা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার উত্থানের কথা মাথায় রেখে অনেক শিক্ষার্থীই এখন যুগোপযোগী শিক্ষা গ্রহণে আগ্রহী হচ্ছেন। এমন নানা সুযোগ নিয়েই দেশে হাজির হয়েছে ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি। মালয়েশিয়ার এই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের বাংলাদেশ ক্যাম্পাস চালু করেছে এ বছর। মালয়েশিয়ায় ১৯৮৬ সাল থেকে চলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম।
মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন আগে থেকেই আলোচিত। এখন শিক্ষার ক্ষেত্রেও এশিয়ায় দেশটি আলোচিত। আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থীরা নানা বিষয়ে পড়তে মালয়েশিয়ায় ভিড় করছেন। মালয়েশিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশে ক্যাম্পাস চালু করায় এটি বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্যও বড় সুযোগ। সরকারের অনুমতি নিয়ে ঢাকার বনানীতে ইউসিএসআই তাদের বাংলাদেশ শাখার কার্যক্রম শুরু করেছে।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছে, ২৪টি বিষয়ে তাদের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর প্রোগ্রাম চালু আছে। সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয় মাথায় রেখে আধুনিক সব বিষয় পাঠ্যক্রমে যুক্ত করার প্রচেষ্টা চলছে। ব্যবসায় প্রশাসন, ব্যবস্থাপনা, স্থাপত্য, কম্পিউটার বিজ্ঞান, হসপিটালিটি ও ট্যুরিজম ম্যানেজমেন্ট, প্রকৌশল, গণযোগাযোগ, মনোবিজ্ঞান, ফ্যাশন ডিজাইনসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষার্থীরা পড়তে পারবেন। ইউসিএসআই বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠদানের সঙ্গে ভিনদেশের অভিজ্ঞ শিক্ষকেরাও যুক্ত থাকছেন। ফলে বাইরের বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়েই চলবে এখানকার আধুনিক পাঠ্যক্রম। এ ছাড়াও বাংলাদেশের শিক্ষা-সংস্কৃতিকে গুরুত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা সহশিক্ষা কার্যক্রমের সুযোগ তৈরি হবে।
এশিয়ার আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে মালয়েশিয়ার ইউসিএসআই বিশ্ববিদ্যালয় অন্যতম। ওয়ার্ল্ড কিউএস র্যাঙ্কিংয়ে বিশ্বের ৩০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এর অবস্থান। এ ছাড়া বিশ্বসেরা ১ শতাংশ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে মালয়েশিয়ার ইউসিএসআই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম আছে। কিউএস র্যাঙ্কিং এশিয়ায় এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ৭২তম আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ১৬তম। এত নামী একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ক্যাম্পাসেও সুনাম বজায় রাখবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশে ইউসিএসআই প্রথমবারের মতো বিএসসি ইন অ্যাকচুয়ারিয়াল সায়েন্স কোর্স চালু করেছে। এই কোর্সের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা দেশি-বিদেশি অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে চাকরির সুযোগ পেতে পারে।
ইউসিএসআই বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাসে পাঠদানের জন্য আধুনিক ক্লাসরুমের পাশাপাশি কম্পিউটার ল্যাব, ফ্যাশন ডিজাইন ল্যাব, গ্রাফিকস অ্যান্ড মাল্টিমিডিয়া ল্যাব, ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল ল্যাবসহ সমৃদ্ধ গ্রন্থাগার আছে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীরা মালয়েশিয়ার মূল ক্যাম্পাসের অনলাইন লাইব্রেরি ও ল্যাব ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। কর্তৃপক্ষ বলছে, শিক্ষার্থীরা চাইলে মালয়েশিয়ার মূল ক্যাম্পাসে ক্রেডিট ট্রান্সফারেরও সুযোগ পাবেন।
বনানী ক্যাম্পাসে আছে ইনডোর গেমসের ব্যবস্থা। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ও আবেগকেন্দ্রিক বুদ্ধিমত্তা বিকাশে নানা ধরনের কাউন্সেলিং সেবার ব্যবস্থাও আছে।
ইউসিএসআই মালয়েশিয়া ক্যাম্পাসের অ্যালামনাইরা বিশ্বের নানা স্বনামধন্য প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন। বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা দিতে ও সহায়তা করতে তাঁরাও ভূমিকা রাখবেন বলে জানাচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিভিন্ন সেমিনার ও কর্মশালায় অ্যালামনাইরা যুক্ত থাকবেন।
বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে আগ্রহী। বাংলাদেশে থেকেই তাঁরা যেন কম খরচে বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষার সুযোগ নিতে পারেন, সে জন্য ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস আন্তর্জাতিক ডিগ্রি দিচ্ছে। বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাসের টিউশন ফি মূল ক্যাম্পাসের টিউশন ফির প্রায় অর্ধেক। এ ছাড়া মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য ২০ থেকে শুরু করে ১০০ ভাগ বৃত্তির ব্যবস্থা আছে। শিক্ষার্থীদের এইচএসসির ফলাফল ও ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলের ওপর ভিত্তি করেও বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। ভর্তির পরও সেমিস্টারের ফলাফলের ওপর ভিত্তি করে টিউশন ফি মওকুফ হতে পারে।
ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটির বাংলাদেশ ক্যাম্পাস শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন ধরনের একাডেমিক প্রোগ্রাম ও কোর্স অফার করছে। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের বৈশ্বিক শিক্ষার সুযোগ দিতে কাজ করছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাসের পড়াশোনা ও গবেষণার মান মালয়েশিয়ার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রণালয় ও মালয়েশিয়ান কোয়ালিফিকেশন সংস্থা দ্বারা স্বীকৃত। এই বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বের শীর্ষ ৩০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম। শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম তৈরি করা হয়েছে। বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থীরা প্রধান ক্যাম্পাস ও বিশ্বের শীর্ষ ৩০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্রেডিট স্থানান্তর করার সুযোগ পাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বিকাশে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক আয়োজন ও সহশিক্ষার সুযোগ আছে। পেশাগত বিভিন্ন দক্ষতা বাড়ানোর জন্য কর্মশালা, ইন্টার্নশিপ, সেমিনার, শিক্ষাসফরসহ নানা বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। স্মার্ট বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের আগ্রহী করে তুলতে নানা প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। লার্নিং ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম, আধুনিক ল্যাবরেটরি, বহুমাত্রিক লাইব্রেরিসহ অত্যাধুনিক ক্লাসরুমে শিক্ষার সব ধরনের সুযোগ পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা।অধ্যাপক মোহাম্মদ সালেহ বিন জাফর, উপ-উপাচার্য, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস