শজনেতে প্রচুর আঁশ আছে
শজনেতে প্রচুর আঁশ আছে

শজনে না খেয়ে যেসব পুষ্টি উপাদান থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন

চৈত্রের তাপপ্রবাহের পালা পেরিয়ে বৈশাখ সমাগত। তীব্র গরমের সময়টায় বহু ধরনের অস্বস্তি হয়। খাবারেও অরুচি হয় অনেকের। কোন খাবার খেলে স্বস্তি মিলবে, কোন খাবার খেলে ভালো থাকবেন—এসবও হয়ে ওঠে ভাবনার বিষয়। স্বস্তি পেতে শজনের মতো সাদামাটা, দেশি খাবার খাওয়া হয় এই সময়। এর গুণাগুণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

চৈত্রের তাপপ্রবাহের পালা পেরিয়ে বৈশাখ সমাগত। তীব্র গরমের সময়টায় বহু ধরনের অস্বস্তি হয়। খাবারেও অরুচি হয় অনেকের। কোন খাবার খেলে স্বস্তি মিলবে, কোন খাবার খেলে ভালো থাকবেন—এসবও হয়ে ওঠে ভাবনার বিষয়। স্বস্তি পেতে শজনের মতো সাদামাটা, দেশি খাবার খাওয়া হয় এই সময়। এর গুণাগুণ সম্পর্কে জেনে নেওয়া যাক।

শজনে নানাভাবে খাওয়া যেতে পারে। তবে কম তেল আর হালকা মসলার রান্নাই এ সময়ের জন্য স্বস্তিদায়ক। তাই চচ্চড়ি–জাতীয় পদের চেয়ে ঝোল রেখে রান্না করাই ভালো। এমন পদ খেলে দেহে পানির চাহিদা মিটবে, স্বস্তিতে থাকবেন। আর সুস্বাদু শজনে থেকে পুষ্টিও মিলবে। এমনটাই বলছিলেন টাঙ্গাইলের সরকারি কুমুদিনী কলেজের গার্হস্থ্য অর্থনীতি বিভাগের প্রধান শম্পা শারমিন খান

আঁশে দারুণ উপকার

শজনেতে প্রচুর আঁশ আছে। তবে শক্ত আঁশের পুরোটা খাওয়া সম্ভব না-ও হতে পারে। তারপরও যতটা সম্ভব, ভালোভাবে চিবিয়ে খেয়ে নিতে চেষ্টা করুন। আঁশযুক্ত খাবার কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে সহায়তা করে। ফলে পেটের অস্বস্তি থেকে বাঁচতে পারবেন। তা ছাড়া পর্যাপ্ত আঁশজাতীয় খাবার খেলে রক্তের খারাপ চর্বি নিয়ন্ত্রণে থাকে। ডায়াবেটিস এবং হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির জন্যও শজনে উপকারী।

সরষেবাটায় শজনে চচ্চড়ি

খনিজ উপাদান

ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়ামের দারুণ উৎস শজনে। ক্যালসিয়াম আপনার হাড়ক্ষয়ের ঝুঁকি কমাবে। হৃদ্‌যন্ত্রের স্বাভাবিক স্পন্দনের জন্য পটাশিয়াম ও ক্যালসিয়ামের মাত্রা একটি নির্দিষ্ট সীমায় থাকা প্রয়োজন। বুঝতেই পারছেন, খাবার থেকে রোজই ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম গ্রহণ করতে হবে আপনাকে। তাই বেছে নিতে পারেন শজনে।

শজনে থেকে খানিকটা আয়রনও মিলবে। এই আয়রন দেহে শোষণ করার জন্য অবশ্যই এর সঙ্গে তাজা টক ফল খাবেন। কারণ, উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে দেহে আয়রন শোষণের জন্য চাই ভিটামিন সি। লেবুর খোসা কামড়ে খেতে পারেন ভাতের সঙ্গে। লেবুর খোসা ভিটামিন সির ভালো উৎস।

উপকারী আমিষও পাবেন

শজনের শাঁস থেকে আমিষও পাবেন। তবে শজনেতে আমিষের পরিমাণ কম। তা ছাড়া এটি উদ্ভিজ্জ আমিষ। অর্থাৎ এটি থেকে আপনি দেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় সব অ্যামিনো অ্যাসিড পাবেন না। তবে ডালের সঙ্গে শজনে যোগ করলে এই দুটি উদ্ভিজ্জ আমিষ থেকে আপনার প্রয়োজনীয় অ্যামিনো অ্যাসিডের চাহিদা কিছুটা পূরণ হবে। মাছের পাতলা ঝোলেও দিতে পারেন শজনে। কেবল মাছ খেলে যে পরিমাণ আমিষ পাবেন, শজনে দেওয়া এই পদটি থেকে তার চেয়ে কিছুটা বেশি পরিমাণ আমিষ মিলবে।

শজনে ডাঁটার ঝালি

সতর্কতা

যাঁদের ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে যাওয়ার প্রবণতা আছে কিংবা যাঁরা দীর্ঘমেয়াদি কিডনির রোগে ভুগছেন, তাঁদের জন্য শজনে এবং এর বীজ ক্ষতিকর হতে পারে। এমন রোগ থেকে থাকলে কতটা শজনে খাওয়া যাবে, সে ব্যাপারে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে নেবেন।

কারও কারও অবশ্য অতিরিক্ত আঁশ খেলে পেটে অস্বস্তি বা ব্যথা কিংবা পেট ফাঁপার মতো সমস্যা দেখা দেয়। তাঁদের জন্য অনেক বেশি পরিমাণ শজনে ভালো নয়। কারও কারও অ্যালার্জিও হয়। এসব ক্ষেত্রেও বিশেষজ্ঞের সঙ্গে কথা বলুন।