গণভবনের একটি জার্মান শেফার্ড প্রজাতির কুকুরকে নিয়ে দুই দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে চর্চা। কুকুরটি উদ্ধার করে নিজের কাছে রাখেন ‘মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০২৩’–এর মুকুটজয়ী শাম্মী ইসলাম নীলা। কুকুরটির বর্তমান অবস্থা নিয়ে কথা হলো এই তরুণীর সঙ্গে।
কুকুরটিকে কীভাবে পেলেন?
আগেই ফেসবুকে কুকুরটির ছবি দেখেছিলাম। অনেকে খোঁজ জানতে চাইছিলেন যে কুকুরটি কেমন আছে। আমিও ওকে নিয়ে ভাবনায় ছিলাম। এমন সময় একটা ছেলে আমাকে জানায় যে একটা বাড়ির সামনে ও কুকুরটিকে দেখেছে। অবস্থা বেশি ভালো নয়। যিনি গণভবন থেকে নিয়েছিলেন, তিনি ঠিকমতো রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারেননি।
পরে ছেলেটি কুকুরটিকে উদ্ধার করে আপনার কাছে দেয়?
হ্যাঁ। আমি সঙ্গে সঙ্গে ওকে পশু হাসপাতালে নিয়ে যাই। তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান যে ও জার্মান শেফার্ড প্রজাতির। দাঁত দেখে বলেন যে বয়স ৮ থেকে ১০ বছর হবে। ওজন ৪৪ কেজি। ওই চিকিৎসকই জানান যে ও খুবই ভয়ে ছিল। হার্ট দুর্বল ছিল। রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা কমে গেছে। রোগ প্রতিরোধক্ষমতাও কমে গেছে। অণ্ডকোষে, লেজে পোকা ধরেছিল। সেগুলো পরিষ্কার করে ব্যান্ডেজ করা হয়েছে। উনি প্রাথমিক চিকিৎসা দেন। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ইনজেকশন দেন আর ওষুধ লিখে দেন।
তারপর...
তারপর আমি আমার বাসায় নিয়ে আসি। আমার শোবার ঘরেই ছিল। প্রথমে স্যালাইন খাওয়াই। কিছুক্ষণ পর মুরগির মাংস দিই।
কেমন খরচ হলো?
প্রথমবার চিকিৎসকের বিল, টেস্ট, ওষুধ, ইনজেকশন মিলিয়ে খরচ হয়েছে ১২ হাজার ৬০০ টাকা। এ ছাড়া খাবার কিনেছি। এগুলো আমি নিজের জমানো টাকা থেকে খরচ করেছি।
‘ক্রাউড ফান্ডিং’ করলেন কেন?
ওই ২০ হাজার টাকা কিন্তু আমি নিজে থেকেই খরচ করেছি। ওকে ১৪ দিন ২ বেলা করে ইনজেকশন দিতে হবে। আর প্রতিদিন ইনজেকশন দিতে ডাক্তারের ফিসহ খরচ হয় ৩ হাজার টাকা। সে জন্য বিকাশে অন্যদেরও এগিয়ে আসতে বলি।
কত টাকা উঠেছিল?
ভালোই। ৬০ হাজারের মতো। এরপর আমি আর কাউকে টাকা পাঠাতে নিষেধ করি।
এখন কেমন আছে কুকুরটা?
কী জানি। ভালোই থাকার কথা। ফেরত দিয়ে এসেছি। আমি নাকি কুকুরটাকে জোর করে তুলে নিয়ে এসে নিজের বেডরুমে আটকে রেখেছি—এরকম ফেসবুক পোস্ট দেওয়া হয়। সেখান থেকে নানা ধরনের গুজব, মিথ্যা তথ্য ছড়ানো শুরু হলো। এত খারাপ লাগল যে একপর্যায়ে আমি ঠিক করলাম, গণভবনে গিয়ে সেনাবাহিনীকে ফেরত দিয়ে আসব। যদিও আমি চাইছিলাম ওকে পুরোপুরি সুস্থ করে তারপর ফেরত দিতে।
তারপর ফেরত দিয়ে এলেন?
আজ সকালে গণভবনে গেলাম। সেনাবাহিনীর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা বললেন, ‘কয়েকটা দিন আপনার কাছেই রাখেন। ওর জন্য ভালো হবে। আমরা এদিকটা একটু গুছিয়ে নিই। এখানে আপাতত পশুচিকিৎসকও নেই। পরে ফেরত দিয়ে যাইয়েন।’ আমিই জোর করে দিয়ে এসেছি আজ সকালে। তবে নিশ্চিত করে এসেছি যে সন্ধ্যায় ওকে একজন চিকিৎসক গিয়ে দেখবে।
অভিমান করে ফেরত দিয়ে এলেন? এখন কি সব ঠিক আছে?
এখন তো আবার দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছে। এক পক্ষ বলছে, ঠিক করেছেন। আর বেশির ভাগই বলছে, ‘আপু, আপনার কাছে রাখলেই ঠিক করতেন। ফেরত দেওয়া ঠিক হয়নি।’ মানে যা করব, তাতেই সমস্যা।
টাকাগুলো কী করলেন?
ইতিমধ্যে বেশির ভাগই ফেরত দেওয়া হয়েছে। বিকাশে যে নম্বর থেকে যত টাকা উঠেছে, সেই নম্বরে তত টাকা ফেরত দিচ্ছি। সন্ধ্যার ভেতরে যিনি যত টাকা দিয়েছিলেন, ফেরত পাবেন। স্ক্রিনশটগুলো নিয়ে আরেকটা পোস্ট করব।