দিনটিকে সেদিন নানা রঙে রাঙিয়ে তুলেছিলাম

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা
ছবি: সংগৃহীত

দেখতে দেখতে চারটি বছর কীভাবে চলে গেল!

এই তো সেদিন। আমরা প্রথম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ক্লাস করতে এলাম। চষে বেড়ালাম প্রিয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের করিডর। কত কত নতুন মুখ। প্রথম দিন ক্লাসে স্যার আমাদের সবার নাম আর এলাকা জেনে বলেছিলেন, ‘দেখো, পুরো বাংলাদেশটাই যেন এখানে চলে এসেছে।’ সত্যিই! দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এসে একই বিভাগের ছাদের নিচে জড়ো হয়েছিলাম আমরা।

২০১৮ সালে স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষে ভর্তি হই। দুই বছর ভালোভাবে পার হলেও ২০২০ সালে করোনার থাবায় সব কিছু কেমন যেন স্থবির হয়ে গেল। প্রায় দেড় বছর কারও সঙ্গে দেখা নেই। সরাসরি ক্লাস করা হয় না, যা কিছু যোগাযোগ সব অনলাইনে।

নিজেরা মিলে সুন্দর সময় কাটিয়েছেন এই শিক্ষার্থীরা

আস্তে আস্তে সব আবার স্বাভাবিক হলো। আবার আগের সময় ফিরে পেলাম। দিনব্যাপী ক্লাস, চাকরি, আড্ডা, টিএসসি–ভিত্তিক সংগঠনের কাজ—সব মিলিয়ে আবার আগের সেই ব্যস্ত দিন। দেখতে দেখতে চার বছরের স্নাতক পাঁচ বছরে শেষ হচ্ছে। কিন্তু তা–ও যেন মনে হচ্ছে, সময়টা খুব অল্প ছিল।

আমরা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। ২ নভেম্বর নিজেরা মিলে সুন্দর সময় কাটাতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও বারবিকিউ পার্টির আয়োজন করেছিলাম। দিনটিকে চিররঙিন করে রাখতে নিজেদের সেদিন নানা রঙে রাঙিয়ে তুলেছিলাম। বন্ধু আতিকুর রহমান বলল, ‘কবে যে সবাই এত আপন হয়ে গেছি, বুঝতেই পারিনি।’ সত্যিই আমরা বুঝে উঠতে পারিনি, জীবনের সবচেয়ে সুন্দর সময় আমরা এখানে পেয়ে গেছি।

সমাপনী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে আমাদের ব্যাচের ক্লাস রিপ্রেজেন্টেটিভ এসে বলল, ‘আর হয়তো তোদের অ্যাসাইনমেন্টের ডেডলাইন জানাতে পারব না!’

কথাগুলো শুনে চোখে কেমন পানি চলে এল।

স্কুলের পর ছাত্রজীবনের সবচেয়ে দীর্ঘ সময় স্নাতক পর্যায়ে পার করে মানুষ। আমরাও পার করছি। এই দীর্ঘ সময়ে আমাদের প্রায় সবার জীবনে নানা পরিবর্তন এসেছে। সেই পরিবর্তন ঠিক করে দিচ্ছে সামনের গতিপথ। এখান থেকে বেরিয়ে সবার সামনে অবারিত পথ থাকবে। সবাই যার যার রাস্তায় চলে যাবে। শুধু পেছনে পড়ে থাকবে স্বর্ণালি দিনের নানা স্মৃতি। নানা ব্যস্ততায় অনেক দিন পর হয়তো আমাদের দেখা হবে। কিন্তু তখনো হয়তো বলে উঠব, ‘আবার দেখা যদি হল, সখা, প্রাণের মাঝে আয়।’