এই মৌসুমে থাইল্যান্ড ঘোরার টিপস

জনপ্রিয় ভ্রমণের গন্তব্য এখন থাইল্যান্ড
জনপ্রিয় ভ্রমণের গন্তব্য এখন থাইল্যান্ড

হাতে সময় অল্প, কিন্তু বিদেশ ভ্রমণের ইচ্ছা প্রবল। এমন অবস্থায় থাইল্যান্ড আদর্শ গন্তব্য। থাইল্যান্ডে যেমন আছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, তেমনি আছে শহুরে জীবনের বিপুল উত্তেজনা। তাইতো, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণ গন্তব্য এখন থাইল্যান্ড। তা ছাড়া সামনেই আসছে তিন দিনের লম্বা ছুটি। তাই আজ আমরা নিয়ে এসেছি থাইল্যান্ডে কী করবেন, কোথায় যাবেন, কী খাবেন ইত্যাদি তথ্যসহ ভ্রমণের টিপস।

কীভাবে যাবেন

বাংলাদেশ থেকে থাইল্যান্ড যাওয়ার ক্ষেত্রে বিমান ছাড়া বিকল্প নেই। বেশ কয়েক দিন ফ্লাইট খরচ আকাশচুম্বী থাকার পর ধীরে ধীরে আবার সাধ্যের মধ্যে আসা শুরু করেছে। বিশেষ করে জনপ্রিয় গন্তব্যের ফ্লাইট এখন পাওয়া যাচ্ছে মাঝারি খরচের পরিসীমাতেই।

থাইল্যান্ডের ফ্লাইটের টিকিট কাটার ক্ষেত্রে প্রথমেই সচেতন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নিজে ফ্লাইটের দাম যাচাই–বাছাই করে বুকিং দিতে হবে। বিভিন্ন এয়ারলাইনসের দাম তুলনা করে দেখে সুবিধা অনুযায়ী ফ্লাইট বুক করা দরকার। তা ছাড়া বুক করে ফেলতে হবে একটু আগে থেকে। শেষ মুহূর্তে ফ্লাইট বুক করলে দাম বেশি পড়ার পাশাপাশি ফ্লাইট না পাওয়ার ঝুঁকিও থাকে। তাই কমপক্ষে দু–তিন সপ্তাহ আগে টিকিট বুক করে রাখা উচিত।

নিজে নিজে ফ্লাইট বুক করতে ঢু মারতে পারেন গোযায়ান–এ। এখানে নিজের ভ্রমণের তারিখ ও গন্তব্য দিয়ে সার্চ করলে পেয়ে যাবেন ফ্লাইটের অনেক বিকল্প। দাম, সুযোগ-সুবিধা, ফ্লাইটের সময় ইত্যাদির ভিত্তিতে পছন্দ করতে পারবেন আপনার ফ্লাইট।

কোথায় ঘুরবেন

থাইল্যান্ডে ঘুরে দেখার জায়গার অভাব নেই। সব ধরনের পর্যটকদের জন্যই কিছু না কিছু আছে। সাধারণত, পর্যটকেরা বিমান থেকে রাজধানী ব্যাংককে নামেন। অল্প সময়ের ট্যুরের জন্য শুধু ব্যাংকক ঘোরাই যথেষ্ট। ব্যাংকক শহরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য উপভোগ করতে দেখতে পারেন ওয়াট ফো মন্দির, গ্র্যান্ড প্যালেস, ব্যাংকক জাতীয় জাদুঘর, ওয়াট আরুন মন্দির, এরা ওয়ান মন্দির ইত্যাদি। কেনাকাটার জন্যও ব্যাংকক শহর সুপরিচিত। নামীদামি যাবতীয় সব ব্র্যান্ডের দোকান পেয়ে যাবেন সিয়াম প্যারাগন নামের বিশাল শপিং মলে। তবে দামাদামি করে কম খরচে পণ্য কিনতে হলে যেতে হবে চাতুচাক মার্কেট।

ব্যাংককের পরেই থাইল্যান্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় শহর ফুকেট ও ক্রাবি। সাধারণত, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত হলেও এই জায়গাগুলোর শহুরে আকর্ষণ অন্য রকম। প্রকৃত থাই সংস্কৃতি দেখতে ক্রাবি ঘুরে আসা উচিত। এই শহরে আছে টাইগার মন্দির এবং বিখ্যাত রেইলে সমুদ্রসৈকত।

অন্যদিকে, ফুকেটের সৌন্দর্য অতুলনীয়। ফুকেট থেকে স্পিডবোট অথবা ফেরিতে চড়ে চলে যেতে পারবেন ফি ফি দ্বীপপুঞ্জেও। তা ছাড়া জনপ্রিয় স্থানগুলোর মধ্যে আরও আছে চিয়াং রাই, চিয়াং মাই, কোঁ সামুই, পাতায়া ইত্যাদি জায়গা। জাতীয় উদ্যান, জলপ্রপাত, পর্বত, মন্দির ইত্যাদি দিয়ে ঘেরা ছবির মতো সুন্দর শহর চিয়াং মাই। থাকার খরচও কম। মিয়ানমার সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থিত চিয়াং রাই শহরটা বিখ্যাত সাদা রঙের মন্দিরের জন্য। তেমনি কোঁ সামুই দ্বীপের সৌন্দর্য মালদ্বীপ থেকে কোনো অংশেই কম নয়।

কী খাবেন

থাইল্যান্ডের স্থানীয় খাবার খুবই সুস্বাদু। তাদের রন্ধনপ্রণালিতে ঝালের ব্যবহার একটু বেশি। বিভিন্ন মসলাপাতির ব্যবহারেও দেশটি পারদর্শী। সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবারের একটি টম ইয়াম স্যুপ। মসলাদার এই খাবার সাধারণত ঝাল হয়ে থাকে। বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছ দিয়ে তৈরি করা হয় এই স্যুপ। টম ইয়ামের আরেকটু কম ঝাল দিয়ে তৈরি বিকল্প হলো টম খা গাই। নারকেলের দুধ দিয়ে তৈরি এই খাবারে সাধারণত মাংস অথবা মাছ থাকে।

থাই সালাদের মধ্যে খুবই জনপ্রিয় ‘লাব’। যেকোনো ধরনের মাংস দিয়ে তৈরি এই খাবার সচরাচর বেশ ঝাল হয়। প্যাড থাই নামক নুডলস থাইল্যান্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবারের মধ্যে একটি। নুডলস ভাজি করে বাদাম, মরিচ, পেঁয়াজ ইত্যাদি দিয়ে রান্না করা হয় প্যাড থাই। প্রোটিন হিসেবে এতে থাকে চিংড়ি মাছ অথবা মাংসের টুকরা। স্ট্রিট ফুড হিসেবেই পেয়ে যাবেন এই খাবার।

এ ছাড়া আঠালো ভাতের সঙ্গে আম তাদের একটি ঐতিহ্যগত খাবার। ফ্রাইড রাইস, সবুজ কারি, লাল কারি ইত্যাদি থাইল্যান্ডে অত্যন্ত সুস্বাদু ও জনপ্রিয়।

এই ডিসেম্বরের শেষ দিকেই হাতে চলে আসছে তিন দিনের একটা ছুটি। এই ছুটিই হতে পারে থাইল্যান্ড ঘুরে আসার সেরা সময়। বড়দিনের ছুটিতে দেশটি সাজবে নতুন সাজে। তাই দেরি না করে আপনার ট্যুরের পরিকল্পনা শুরু করুন এখনই।