কম দামে বিমানের টিকিট পাওয়ার ৫ উপায়

একদিকে যেমন বিমান টিকিটের দাম বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে ভিনদেশে বেড়াতে যাওয়ার প্রবণতা। কম খরচে বিমানের টিকিট কাটার কিছু কৌশল জানা থাকলে আপনিও হয়তো বাজেটের মধ্যে একটা বিদেশভ্রমণের পরিকল্পনা করে ফেলতে পারবেন। চলুন, জেনে নিই এমনই পাঁচটি উপায়।

প্রতীকী ছবি
প্রতীকী ছবি

১. কয়েক মাস আগে বুকিং
বিদেশভ্রমণের ক্ষেত্রে খরচ কমানোর সবচেয়ে ভালো উপায় হলো আগে থেকে পরিকল্পনা করা। তিন-চার মাস আগে থেকেই যদি ভ্রমণের পরিকল্পনা শুরু করেন, তাহলে শুধু বিমানের টিকিট নয়, হোটেলের ভাড়া কিংবা নানা অ্যাডভেঞ্চারের ফি—সবই পেতে পারেন কম দামে। সাধারণত আন্তর্জাতিক গন্তব্যের ক্ষেত্রে ভ্রমণ তারিখের এক বছর আগে পর্যন্ত টিকিট বুক করা যায়। এ ছাড়া টিকিট যখন প্রথম এয়ারলাইনসের ওয়েবসাইটে ছাড়া হয়, সাধারণত তখনই দাম সবচেয়ে কম থাকে। এর পর চাহিদা অনুযায়ী দাম বাড়ে। তাই শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা না করে ফ্লাইটের বুকিং আগে আগে সেরে ফেলাই বুদ্ধিমানের কাজ।
২. ট্যুরিজমবিষয়ক মেলার খোঁজ
পর্যটনবিষয়ক বিভিন্ন মেলায় গেলে পেয়ে যাবেন ভ্রমণসম্পর্কিত হালনাগাদ তথ্য, এয়ারলাইনসের বিশেষ অফার, কিংবা বিশেষ ছাড়ে ট্যুর প্যাকেজ। অনেক সময় শুধু এই আয়োজনগুলোকে কেন্দ্র করে বিশেষ ছাড়ে বিমানের টিকিট বিক্রি হয়। বিশেষ করে বাংলাদেশ বিমানের টিকিট এই মেলাগুলোতেই কম দামে পাওয়া যায়। তাই ফেসবুকে বিভিন্ন ইভেন্টের খোঁজখবর রাখুন। বছরে অন্তত তিনটি বড় পর্যটনবিষয়ক মেলা পেয়েই যাবেন।

৩.অসময়ের ভ্রমণও রোমাঞ্চকর
এয়ারলাইনসগুলোর ওয়েবসাইট একটু ঘাঁটলেই বুঝবেন, ছুটির দিনগুলোতে ফ্লাইটের দাম একটু বেশি থাকে। বড় ছুটিগুলোতে স্বাভাবিকভাবেই ফ্লাইটের চাহিদা বেড়ে যায়, তাই দামও বাড়ে। একইভাবে পর্যটনের মৌসুমে সবকিছুরই দাম থাকে স্বাভাবিকের তুলনায় কিছুটা বেশি। এই ঝামেলা এড়াতে পর্যটন মৌসুমের কিছুদিন আগে বা কিছুদিন পরে ভ্রমণ করতে পারেন। এভাবে বিমানের টিকিট কাটলে সাশ্রয়ে পাবেন। এশীয় অঞ্চলের দেশগুলোতে সাধারণত দেখা যায় বছরের শেষে ও শুরুর দিকে টিকিটের দাম বেশি থাকে। কোনো কোনো বিশেষ উপলক্ষে কোনো কোনো দেশে ভ্রমণের খরচ আবার অনেকখানি কমেও যায়। যেমন ধরা যাক, আপনি যদি রমজান মাসে দুবাই ভ্রমণ করেন, তাহলে বিমানের টিকিট থেকে শুরু করে হোটেল—অনেক কিছুই কম খরচে পাবেন। বেড়ানো হবে, আবার দুবাইয়ের রমজানের চিত্রটাও ঘুরে দেখতে পারবেন।

প্রতীকী ছবি


৪. তৃতীয় পক্ষীয় ওয়েবসাইট ব্যবহার
ইন্টারনেট ঘাঁটলে এমন হাজারো ওয়েবসাইটের সন্ধান পাবেন, যারা আপনার ভ্রমণকে সহজ করবে। সব ওয়েবসাইটই যে বিশ্বাসযোগ্য, তা-ও নয়। তবে জনপ্রিয় কিছু দেশি ও বিদেশি ওয়েবসাইট বেশ কয়েক বছর ধরেই এ ক্ষেত্রে ভালো সেবা প্রদান করে আসছে। বিদেশি ওয়েবসাইটের মধ্যে যেমন আছে স্কাইস্ক্যানার, কায়াক, কিউই। কখন, কীভাবে গেলে টিকিট কম খরচে পাবেন, তা এসব ওয়েবসাইটের মাধ্যমে দেখতে পারবেন। শেয়ারট্রিপ, গোযায়ানের মতো দেশি প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটের মাধ্যমেও সরাসরি টিকিট কেটে ফেলতে পারেন। এসব প্রতিষ্ঠানের অ্যাপের মাধ্যমেও সাশ্রয়ে টিকিট পাওয়া যায়। তাই সরাসরি এয়ারলাইনসের ওয়েবসাইটের বদলে এসব ওয়েবসাইট বা অ্যাপের সাহায্য নিন।

৫. এয়ারলাইনসের অফারের খবর রাখা
বিভিন্ন এয়ারলাইনস বছরের বিভিন্ন সময়ে বিশেষ কিছু মূল্য ছাড় দেয়। এই মূল্যছাড় সম্পর্কে অবগত থাকার একটি সহজ উপায় হলো—সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোয় এয়ারলাইনসের পেজ অনুসরণ করা। যখনই কোনো নতুন অফার আসবে, সাশ্রয়ী দামে বিমানের টিকিট কিনে ফেলুন। এ ক্ষেত্রে কখনো কখনো ট্রানজিটসহ ফ্লাইট বেছে নিতে হতে পারে। যেমন ধরা যাক, সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনের অফার চলছে। আপনার গন্তব্য যদি মালয়েশিয়া হয়, আপনি মালয়েশিয়া এয়ারলাইনসে সরাসরি না গিয়ে যদি সিঙ্গাপুর এয়ারলাইনসের টিকিট বেছে নেন, তাহলে হয়তো সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি বিমানবন্দরে কয়েক ঘণ্টার ট্রানজিট পড়বে; কিন্তু আপনি টিকিট পাবেন কম দামে।