উজবেকিস্তান ভ্রমণের খরচসহ জেনে নিন জরুরি ১০টি বিষয়

সমরখন্দ রেজিস্তান স্কয়ারের সামনে স্বামী মহিউদ্দিন আহমেদ ও তাজনূভা জাবীন
ছবি: লেখকের সৌজন্যে

. উজবেকিস্তান যাওয়ার জন্য বাংলাদেশিদের ই-ভিসা প্রদান করা হয়। ভিসা ফি জনপ্রতি ২ হাজার ৫০০ টাকা। ভিসার আবেদন আপনি নিজেই করতে পারেন। অথবা কোনো ট্রাভেল এজেন্সির মাধ্যমে করতে পারেন।

. বাংলাদেশ থেকে উজবেকিস্তান যাওয়ার সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই। ভারতের দিল্লি বা সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে ট্রানজিট নিয়ে আপনাকে যেতে হবে। দিল্লি হয়ে যাওয়া আমার কাছে সাশ্রয়ী মনে হয়েছে। ভ্রমণ তারিখের মাস দেড়কে আগে ফ্লাইটের টিকিট কেটে নিলে কিছুটা কম দামে পাওয়া যাবে।

. উজবেকিস্তানে থাকার খরচ তুলনামূলক কম। দেশটিতে চার-পাঁচ তারকা হোটেল তো আছেই, সেই সঙ্গে গেস্টহাউস, বুটিক হোটেলগুলোও বেশ পর্যটকবান্ধব, যাদিন প্রতি ২০ থেকে ৬০ ডলারের মধ্যে পাওয়া যাবে। ট্রাভেল এজেন্সির চেয়ে নিজে ফ্লাইট বা হোটেল বুকিং করা সাশ্রয়ী।

তাসখন্দ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর

. তাসখন্দ বিমানবন্দরেই উজবেকিস্তানের স্থানীয় মোবাইল সিম পাওয়া যায়, সেখানে ডলারও স্থানীয় মুদ্রায় ভাঙানো যায়। স্থানীয় মোবাইল নম্বর নেওয়া যাতায়াতের জন্য বেশ সুবিধার।

. উজবেকিস্তানের যাতায়াতব্যবস্থা খুবই ভালো। Yandex Go নামের শেয়ার রাইডিং অ্যাপ নামিয়ে নিলে এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তে অল্প খরচে চলে যেতে পারবেন।

. উজবেকিস্তানের মানুষ অত্যন্ত আন্তরিক। ভাষার দূরত্ব থাকলেও পরামর্শ থাকবে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে মিশতে, কথা বলতে। ওখানকার আতিথেয়তার স্বাদ নেওয়াটা সফরের অন্যতম অভিজ্ঞতা।

. বাংলাদেশিদের উজবেকিস্তান ভ্রমণে গিয়ে খাবার নিয়ে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয় (যদি না নিরামিষভোজী হন)। কাবাব, পোলাও, সমুচা, মোমো খুবই মজাদার ও সহজলভ্য। মুসলিমপ্রধান দেশ হলেও ধর্ম নিয়ে কোনো কড়াকড়ি নেই। ছুটির দিনে রেস্তোরাঁয় স্থানীয় গান পরিবেশন হয়, সুযোগ করে দেখার পরামর্শ থাকল।

বুখারার ওল্ড সিটির একজন বিক্রেতা

. কেনাকাটার জন্য খুব বেশি সময় নষ্ট না করে দর্শনীয় স্থানের জন্য সময় রাখলে ভালো। তাসখন্দের ‘চরসু বাজারে’ গেলে উজবেকিস্তানের বিখ্যাত ইক্কাত কাপড়ের পোশাক, সিরামিক, স্যুভেনির—সবকিছু একসঙ্গে পাইকারি দরে পাওয়া যাবে। এ ছাড়া যেকোনো দর্শনীয় স্থানেই স্থানীয় জিনিসের পসরা থাকে, চাইলে সেখান থেকেও দরদাম করে কিনতে পারেন।

. উজবেকিস্তানের সফর অন্তত এক সপ্তাহের হওয়া ভালো। তাসখন্দ, সমরখন্দ, বুখারা—এই তিনটি শহর অবশ্যই ঘুরে দেখুন। কেউ চাইলে শীতকালে (ডিসেম্বর বা জানুয়ারি) চিমগান পর্বতে যেতে পারেন, বরফে ঢাকা থাকে তখন। পাহাড়ি রিসোর্টে দারুণ সময় কাটবে।

১০. উজবেকিস্তান ভ্রমণের সবচেয়ে ভালো সময় হলো মার্চ থেকে মে ও সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর। ফ্লাইট খরচসহ জনপ্রতি ১ লাখ ৩০ থেকে ২ লাখ টাকার মধ্যে সুন্দর দেশটি ঘুরে আসা যায়।