মধ্যপ্রাচ্যের দেশটির সবচেয়ে জনবহুল শহর এটি। শহরের বাসিন্দাও কম নয়। সেই সঙ্গে আছেন বিশ্বের নানা প্রান্তে থেকে আসা প্রচুর পর্যটক। স্থায়ী বাসিন্দা আর পর্যটকদের জন্য শহরজুড়ে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন অঞ্চলের খাবারের রেস্তোরাঁ। সেই রেস্তোরাঁর সংখ্যা জানলে আপনি হয়তো ভিরমিই খাবেন! কারণ, প্রতিটি রেস্তোরাঁয় এক দিন করে খেতে আপনার সময় লাগবে ৫০ বছর।
বলছি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ের কথা। এই শহরে আছে প্রায় ১৮ হাজার রেস্তোরাঁ! এসব রেস্তোরাঁয় পাওয়া যায় বিশ্বের নানা প্রান্তের বিভিন্ন স্বাদের খাবার।
রাতের খাবার ঘরের বাইরে খেতেই অভ্যস্ত দুবাইবাসী। এ জন্য রেস্তোরাঁর পাশাপাশি আজকাল তাঁরা বেছে নিচ্ছেন ‘সাপার ক্লাব’। এই সাপার ক্লাবগুলো গতানুগতিক রেস্তোরাঁ নয়। একজন শেফ তাঁর নিজের বাড়িতেই নৈশভোজের আয়োজন করেন। আগে থেকে নিবন্ধিত অতিথিরা খেতে হাজির হন। এই অতিথিরা আগে থেকে খাবারের মেনু এবং অন্যদের সম্পর্কে জানেনও না। রেস্তোরাঁয় খাওয়ার একঘেয়েমি কাটাতে অনেকে সাপার ক্লাবে আসেন।
দুবাইয়ে বসবাসকারীদের প্রায় ৯০ শতাংশই বিদেশি। প্রতিবছরই পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে দুবাইয়ে আসেন বহু মানুষ। কেউ কেউ এখানেই স্থায়ী হন, আবার কেউবা আসেন এক-দু বছরের জন্য। নিজের দেশ থেকে দূরে থাকা মানুষগুলো সাপার ক্লাবে এসে অচেনা কিছু মানুষের সঙ্গে পরিবারের মতো এক টেবিলে খেতে বসেন, তাঁদের একাকিত্ব কাটানোর চেষ্টা করেন। এ ছাড়া এখানে আসা ভিন্ন বয়স, পেশা ও জীবনাদর্শের মানুষ নিজেদের মধ্যে সংস্কৃতি বিনিময় করেন।
২০১৯ সাল থেকে নিজের বাড়ির উঠানে সাপার ক্লাবের আয়োজন করছেন দুবাইয়ে বিখ্যাত শেফ আহমদ হালাওয়া। তাঁর রান্নায় থাকে ফিলিস্তিনি ঐতিহ্যের ছাপ এবং মধ্যপ্রাচ্যের খাঁটি রন্ধনপ্রণালি। হালাওয়ারের তৈরি মিষ্টান্ন ক্লাবে খুবই জনপ্রিয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে নিবন্ধিত হয়ে তাঁর সাপার ক্লাবের আয়োজনে আসেন অতিথিরা। এতে অতিথিদের গুনতে হয় ১০০ ডলার, বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ১১ হাজার ৮০০ টাকা।
স্প্লিডু নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে দুবাইয়ের সাপার ক্লাবগুলোকে একত্রিত করা হয়েছে। যেখানে এ রকম নৈশভোজের আয়োজনকারী শেফরা যুক্ত আছেন। যে কেউ চাইলে এই অ্যাপের মাধ্যমে কোনো সাপার ক্লাবের বুকিং এবং পেমেন্ট করতে পারে।
সূত্র: সিএনএন