পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্টের চূড়ায় আরোহণের দুদিন পর লোৎসে পর্বতের শীর্ষ (৮৫১৬ মিটার) ছুঁলেন ৩৩ বছর বয়সী বাবর আলী। প্রথম আলোকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন বাবর আলীর এভারেস্ট-লোৎসে অভিযানের নেপালী এজেন্ট বুদ্ধরাজ ভান্ডারি।
নেপালের স্নোয়ি হরাইজন নামের ট্রেকিং ও পর্বতাভিযান পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানের তত্ত্বাবধানে এভারেস্ট ও লোৎসে অভিযানে যান বাবর। তাঁর সঙ্গে আছেন শেরপা বীর বাহাদুর তামাং। স্নোয়ি হরাইজনের স্বত্বাধিকারী বুদ্ধরাজ ভান্ডারি আজ মঙ্গলবার সকাল আটটায় প্রথম আলোকে বলেন, নেপাল সময় সকাল ৫টা ৫০ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় ৬টা ৫ মিনিট) বাবর আলী লোৎসে পর্বতচূড়ায় ওঠেন। এর আগে ১৯ মে তিনি এভারেস্টশৃঙ্গেও আরোহণ করেন। এখন অভিযান শেষে নেমে আসার পালা।
বাবরের সংগঠন ভার্টিক্যাল ড্রিমার্স নিজেদের ফেসবুক পেজে লোৎসে পর্বতজয়ের তথ্য জানিয়ে বলেছে, ‘বাংলাদেশের পর্বতারোহণের ইতিহাসে আজ লিখিত হলো অভূতপূর্ব ও রোমাঞ্চকর এক অধ্যায়। আর লেখক আমাদের স্বপ্ন সারথি-বাবর আলী।...এটিই এই বাংলাদেশের কোনো সন্তানের প্রথম লোৎসে সামিট এবং প্রথম একই অভিযানে দুইটি ৮ হাজারি শৃঙ্গ সামিট। ...বাবর এখন নেমে আসা শুরু করেছে। বেসক্যাম্পে পৌঁছালেই হবে মূল উৎসব’।
গত ১ এপ্রিল বাংলাদেশ থেকে নেপালের উদ্দেশে রওনা হয়েছিলেন বাবর আলী। প্রস্তুতিমূলক কাজ শেষ করে ৪ এপ্রিল কাঠমান্ডু থেকে উড়ে যান লুকলা বিমানবন্দরে। এরপর পথচলা শুরু করেন এভারেস্ট বেজক্যাম্পের উদ্দেশে। সেখানে পৌঁছান ১০ এপ্রিল।
উচ্চতার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে বেজক্যাম্প থেকে একাধিকবার উচ্চতায় ওঠানামা করেছেন বাবর। ২৬ এপ্রিল এভারেস্টের ক্যাম্প-২ পর্যন্ত ঘুরে এসে উচ্চতার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার পর্ব সমাপ্ত করেন। এরপর অনুকূল আবহাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে থাকেন।
১৪ মে মাঝরাতে বেজক্যাম্প থেকে শীর্ষ অভিমুখে যাত্রা শুরু করেন বাবর। ১৫ মে সকালে পৌঁছে যান ক্যাম্প ২-এ। পরিকল্পনা অনুযায়ী, সেখানে দুই রাত কাটিয়ে বাবর উঠে যান ক্যাম্প ৩-এ। সেখান থেকে ১৮ মে পৌঁছান ক্যাম্প ৪-এ। ২৬ হাজার ফুট উচ্চতার এই ক্যাম্পের ওপরের অংশকে বলা হয় ‘ডেথ জোন’।
১৮ মে মাঝরাতে আবারও শুরু হয় বাবরের যাত্রা। ১৯ মে ভোরের প্রথম কিরণে ২৯ হাজার ৩১ ফুট উচ্চতার মাউন্ট এভারেস্টের শীর্ষে ওড়ান বাংলাদেশের পতাকা।
এরপর তাঁরা নেমে আসেন ক্যাম্প ৪-এ। সেখানে বিশ্রাম নিয়ে ২০ মে মধ্যরাতে লোৎসেচূড়ার উদ্দেশ্যে পথ ধরেন। আজ সকালে সফলভাবে সেখানে পৌঁছান।