বিশ্বের সেরা পর্যটন গন্তব্য হিসেবে টানা চতুর্থবারের মতো পুরস্কার জিতেছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ মালদ্বীপ। ‘ওয়ার্ল্ডস ট্রাভেল অ্যাওয়ার্ড’ প্রদত্ত এই খেতাব ‘পর্যটনের অস্কার’ নামে সমাদৃত। সেরা গন্তব্যের পাশাপাশি আরও সাতটি পুরস্কার জিতেছে এই দ্বীপরাষ্ট্র। এর মধ্যে সেরা রোমান্টিক রিসোর্ট হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে ‘বারোস মালদ্বীপ’। ১০ বছর ধরে এককভাবে এই স্বীকৃতি ধরে রেখেছে বারোস দ্বীপের রিসোর্টটি।
সাগরের স্বচ্ছ জল দেখে মনে হয় অবারিত সবুজ। দ্বীপের ফাঁকে ফাঁকে নারকেলগাছ। তারই ছায়ায় ছাউনি। নিচে বিলাসী আরামকেদারা। কিংবা সৈকত থেকে মিটার দশেক ভেতরে সমুদ্রের বুকে পানির ওপর বাড়ি। স্বচ্ছ নীল পানিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে হরেক রঙের মাছ, কোরাল রিফ কিংবা কচ্ছপ। ভেসে আসছে সামুদ্রিক পাখির ডাক। সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দুলছে দেহ-মন। হাতে হাত রেখে বসে আছে প্রিয়তম মানুষ। স্থির হয়ে আছে সময়। যেন মনে হচ্ছে, স্বর্গোদ্যানঘেরা সমুদ্রে বসে আছেন। সত্যিই তা–ই। বারোস একখণ্ড স্বর্গই বটে। শুধু শুধুই তো আর এখানকার রিসোর্টটি বিশ্বের সেরা রোমান্টিক রিসোর্ট নয়!
ভারত মহাসাগরের বারোস দ্বীপটি আয়তনে ছোট কিন্তু আয়োজনে বিপুল। যুগলদের ভালোবাসাবাসির সব আয়োজন রয়েছে এখানে। প্রকৃতি যেমন দুই হাতে ঢেলে দিয়েছে তার অনিন্দ্য সৌন্দর্য, দেশটির সরকারও তেমনি গ্রহণ করেছে দুই হাত ভরে। মালদ্বীপ প্রশাসনের উদ্যোগেই নির্মিত হয়েছে বিলাসবহুল এই রিসোর্ট। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সঙ্গে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সংগতি রেখে ভালোবাসা যাপনের সমুদয় উপকরণ দিয়ে সাজানো হয়েছে এটি। নান্দনিক বাগানবাড়ি, ব্যক্তিগত পুল, সুইমিংপুল, রেস্টুরেন্ট—কী নেই এতে! ওয়াটার স্কাইং, উইন্ড সার্ফিং, ওয়াটার বোর্ডিংয়ের মতো জলখেলা যেমন আছে, তেমনি আছে স্নোরকেলিং। পায়ের তলায় ঝিকমিক করে ওঠা চকচকে বালু মেখে তীর ধরে হাঁটছেন হয়তো। গায়ে এসে লাগছে নোনা হাওয়া। হাতের মুঠোয় বাঁধা আছে প্রিয় মানুষের হাত। নিয়ম মেনে মিলিয়ে যাচ্ছে মোহন সন্ধ্যা। প্রেমিক বা প্রেমিকার গাঢ় স্পর্শ বাড়তেই মনে হবে, এ তো পৃথিবী নয়, সত্যি!
২০২৩ সালে বারোস মালদ্বীপ রিসোর্ট প্রতিষ্ঠার ৫০ বছর উদ্যাপন করছে। এ উপলক্ষে পর্যটকদের জন্য বিশেষ ছাড়ও ঘোষণা করেছে রিসোর্টটি। এই ছাড়ের পরও রিসোর্টের সবচেয়ে কম দামের ভিলাটিতে এক রাত কাটাতে লাখ টাকার ওপরে লাগবে। বারোস রিসোর্টে বিভিন্ন মানের, নানা সুযোগ-সুবিধাসংবলিত আবাসনব্যবস্থা আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে ব্যয়বহুল হলো ব্যক্তিগত সুইমিংপুলসহ বারোস সুইট। এখানে থাকতে প্রতি রাতের জন্য ৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা লাগে (ছাড়ের পর যা এখন প্রায় আড়াই লাখ টাকা)। আবাসন খরচের সঙ্গে যুক্ত হয় খাওয়াদাওয়াসহ অন্যান্য সেবা গ্রহণের চার্জ।