ক্রমেই বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠছে পৃথিবী—এ কথা যেমন সত্য, তেমনই এ–ও তো সত্য, পৃথিবীকে সুন্দর রাখতে অবিরাম চেষ্টা করে চলেছেন বহু মানুষ। এর মধ্যে আপনার নামটি কোথায়—পৃথিবী ধ্বংস করা ব্যক্তিদের দলে, নাকি সুন্দরের দলে? এই জিজ্ঞাসার জবাব খোঁজার দায়িত্ব রইল আপনার কাছেই। আমরা বরং সুন্দরের কথা বলি।
আমাদের চারপাশে এমন অনেক মানুষ আছেন, যাঁরা একা নন, সবাইকে নিয়ে ভালো থাকতে চান। নিজের অস্তিত্বটুকুকেই গোটা পৃথিবী ভাবেন না; বরং পরিবেশ, প্রকৃতি, আত্মীয়-বান্ধব, প্রতিবেশী—সবার মধ্যেই নিজেদের খুঁজে পান তাঁরা। ফলে সংগত কারণেই তাঁরা প্রকৃতি বিনষ্ট করেন না। আত্মীয়-প্রতিবেশী সবার সুখ-দুঃখে এগিয়ে যান। এ জন্য কিন্তু অঢেল ঐশ্বর্যের দরকার পড়ে না; কেবল একটু ইচ্ছা আর মানবিক মন থাকাই যথেষ্ট। আপনার নিঃস্বার্থ ছোট্ট একটি কাজই নিয়ে আসতে পারে অনেক বড় পরিবর্তন।
সবাই সবার অবস্থান থেকে ছোট ছোট অবদান রাখলে গোটা পৃথিবীই হয়ে উঠতে পারে সুন্দর। আশপাশে কোনো অভাবী মানুষ থাকলে পাশে দাঁড়ান। যতটুকু সম্ভব সাহায্য করুন। পাড়া-মহল্লার পার্ক বা খেলার মাঠটি হয়তো আবর্জনায় ভরে আছে। সমমনা সবাইকে নিয়ে একদিন পরিষ্কার করে ফেলুন। পাশেই হয়তো কোথাও অনাথাশ্রম, বৃদ্ধাশ্রম রয়েছে। একদিন বন্ধুবান্ধব মিলে তাঁদের জন্য খাবার নিয়ে যান। সময় কাটিয়ে আসুন। যেখানে–সেখানে ময়লা ফেলা, গাছ কাটা প্রভৃতি পরিবেশ ধ্বংসকারী কাজের বিরুদ্ধে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলুন। নিজের সীমিত পৃথিবীতে খিল এঁটে বসে থাকবেন না। পৃথিবী আপনার। আপনিও এই পৃথিবীর। সুতরাং দায়িত্ব নিন। এই ভূখণ্ডের প্রতি ইঞ্চি মাটি যেন বিশুদ্ধ থাকে, প্রতিটি জীবন যেন বাঁচে দুধে-ভাতে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা ছাড়া জেঁকে বসা জগদ্দল সরিয়ে সমাজ বদলে দেওয়া সম্ভব নয়।
আজ ২৬ অক্টোবর, একটুখানি ভিন্নতা তৈরির দিন, ভিন্ন কিছু করা দিবস (মেক আ ডিফারেন্স ডে)। এই ভিন্ন কিছু মানে সমাজের জন্য, পৃথিবীর জন্য ইতিবাচক কোনো অবদান রাখা। ১৯৯২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসএ উইকএন্ড ম্যাগাজিনের উদ্যোগে এই দিবসের প্রচলন হয়। প্রতিবছর অক্টোবরের চতুর্থ শনিবার পালিত হয় দিনটি।
ডেজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে