পুরো দুনিয়াতেই এখন ঢিলেঢালা বা ওভারসাইজড পোশাক জনপ্রিয় এক ধারা। আরামদায়ক এ পোশাকগুলো গরমের জন্য আদর্শ। এ ধরনের পোশাকের আরেকটি সুবিধা হলো যেকোনো ধরনের শরীরের জন্যই এটি স্বস্তিদায়ক।
এ পোশাকগুলোতে একধরনের বিভ্রম তৈরি করা হয়। ভেতরের শারীরিক গঠন যা–ই থাকুক, বাইরে থেকে দেখে বোঝার উপায় থাকে না। আর ওভারসাইজড বা ঢিলেঢালা পোশাক যদি সঠিকভাবে পরা যায়, দেখতেও স্মার্ট লাগে।
গুচি, ব্যালেন্সিয়াগা, ক্লো এবং মোসচিনোর মতো ব্র্যান্ডও ফ্যাশন রানওয়েতে এ ধারার শার্ট, টিউনিক, স্কার্ট, প্যান্ট, জ্যাকেট তুলে ধরেছিল। ফ্যাশনের অনেক ধারাকে ভঙ্গ করেই যেন ঢিলেঢালা কাটের এই পোশাকগুলোর জন্ম হয়েছে। বিশ্ব ফ্যাশনের এই ধারাটিকেই দেশীয় পোশাকে উপস্থাপনের চেষ্টা চলছে।
এ ধরনের পোশাক অনেকভাবেই পরা যায়। সাধারণত ওপরের অংশটি ঢিলে হলে নিচের অংশ আঁটসাঁট লেগিংস, প্যান্ট বা ট্রাউজার দিয়ে পরা হয়। আবার নিচের অংশে যদি বেলুন স্কার্ট, ঢিলেঢালা কাটের পালাজ্জো পরতে পছন্দ করেন, তাহলে ওপরের টপটি একটু আঁটসাঁট কাটের পরতে হবে। চাইলে পুরোটাই ঢিলেঢালাভাবে পরা যাবে, জানালেন ক্লাবহাউসের ডিজাইনার ইফতেখারুল ইসলাম।
একদম দেশীয় ধাঁচে যদি ধরি, কামিজ এবং সালোয়ার দুটোই বড় আকারের হতে পারে। পুরোনো কোনো নিয়ম মানার প্রয়োজন নেই। ‘বিশ্বজুড়ে এ কাটের পোশাকগুলো তরুণদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। এ ধরনের কাটের পোশাক একই সঙ্গে আধুনিক এবং আরামদায়ক’, জানালেন অরণ্য ক্র্যাফটসের ব্র্যান্ড, মার্কেটিং এবং কমিউনিকেশন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক সুমাইয়া হোসেন।
সাধারণ আরেকটি ধারণা, ঢিলেঢালা পোশাকগুলো শুধু ক্যাজুয়াল হিসেবেই পরা যায়। তবে এ ধরনের কাটের পোশাক দাওয়াতেও পরে যাওয়া যাবে, নিশ্চিন্তে। সিল্ক, মসলিনে তৈরি পোশাকগুলো দাওয়াতের পরিবেশে সহজেই মানিয়ে যাবে। সুতির কাপড়ের তৈরি পোশাকগুলোও খারাপ লাগবে না, নকশায় যদি থাকে জমকালো ভাব।
ওভারসাইজড পোশাকগুলোর কাটে কয়েকটি বিষয় লক্ষণীয়। কাঁধের অংশটি ঝুলে থাকে (ড্রপ শোল্ডার), চারকোনা আকারের কাট (বক্সি শেপ), হাতা ঢিলা হয়, কোমরের অংশটিও বেশ ঢিলে থাকে। কেউ চাইলে কোমরের অংশে বেল্ট পরে নিতে পারেন, জানালেন ইফতেখারুল ইসলাম।
অনেকেরই শার্টের কলার কিংবা কাঁধের মাপ অনুসারে পোশাকের মাপ মাঝারি (মিডিয়াম সাইজ)। কিন্তু পেটের জন্য হয়তো এক সাইজ বড় লাগে। অনেকের আবার হাতের ক্ষেত্রে এ সমস্যা। এ ধরনের সমস্যারও সহজ সমাধান ওভারসাইজড কাটে বানানো পোশাক। এম থেকে এল, এল থেকে এক্সএল অথবা স্মল, মিডিয়াম, লার্জ, একস্ট্রা লার্জ সাইজ অনুযায়ীও বিক্রি করা হচ্ছে। এখানে সাধারণত যে যেই আকারের পোশাক পরে থাকেন, তাঁরা সেই সাইজটিই বেছে নেবেন।