ঘুরে ঘুরে আসে ফ্যাশন। আজ যেটা চলতি ধারা, কাল সেটিই পুরোনো। একইভাবে দুই-তিন বছর আগের ধারাই হয়তো এখন চলতি ধারা। বদলের আরেকটি কারণ আবহাওয়া। নতুন ঋতুর আগমনে বদলে যায় ব্যাগের স্টাইল আর আকার, আসে ভিন্ন রূপ। অফিসে এক রকম নকশা ও আকার আর ক্যাজুয়াল জায়গায় আরেক রকম—একসময় বেশ কড়া করেই মানা হতো এই নিয়ম। এখনো হয়, তবে কিছুটা শিথিলতা এসেছে। দাওয়াতের ব্যাগে চকমকে ভাব থাকতেই হবে, সেটিও আর নেই।
বিশ্ববাজারে যেই নকশা জনপ্রিয় হয়, একটু দেরি করে হলেও সেটির একটি আবছা ছায়া এখানেও এসে পড়ে। ২০২৫ সালের ব্যাগ কেমন হবে, তার একটি ঝলক কিন্তু কেন্ডেল জেনার কিংবা আলিয়া ভাটের হাতে এখনই দেখা যাচ্ছে। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কেমন ব্যাগ চলবে আগামী কয়েক মাস। আমাদের দেশেই বা কোন ধরনের ব্যাগগুলো পাওয়া যাচ্ছে।
টোটব্যাগ কাঁধে নিয়ে চলার ধারা এখন জনপ্রিয়। চামড়া, কাপড় বা পাট দিয়ে বানানো নানা আকারের টোটব্যাগ মূলত তরুণ প্রজন্মই বহন করেছে এবং করছে। এ বছরের গোড়া থেকেই দেখা গেছে লম্বাটে আকারের টোটব্যাগ। ব্যাগের ওপর জুড়ে দেওয়া হয়েছে কথা আর ছবি, ‘বিরিয়ানি’, ‘বসন্ত আসছে’, ‘দেশ’, ‘কয় কাপ চা’ ইত্যাদি। সারা দিনের ছোটাছুটিতে আরাম দেয় এ ধরনের ব্যাগ। একটু ভিন্ন আকার আর আনুষ্ঠানিক নকশা দিয়ে ‘স্লাউচি টোট’ নামে টোটব্যাগ নিয়ে এসেছে কোচ, চার্লস অ্যান্ড কিথ, গুচ্চি।
গত কয়েক বছরের ছোট ব্যাগের আধিপত্য এবার মনে হয় কিছুটা কমে যাবে। এটির মধ্যে অনেক কিছু ভরা যাবে, এমন ব্যাগগুলো নিয়ে বাইরের দেশে ঘোরা শুরু হয়ে গেছে। বিমানবন্দর কিংবা ক্যাজুয়াল জায়গায় সকাল থেকে রাত পর্যন্ত দরকারি জিনিসগুলো আপনার সঙ্গে রাখতে বেশ সহায়তা করবে বড় আকারের ব্যাগগুলো।
তবে ছোট ব্যাগ যে একদম থাকবে না, বিষয়টি কিন্তু সে রকমও না। মুঠোফোন ধরবে না, এই আকারের ব্যাগ হাতে নিয়ে অনেকেই ঘুরেছেন। তবে আমাদের দেশে এই আকারের ব্যাগ বহন খুব একটা স্বস্তিদায়ক না। এ কারণে অন্তত মুঠোফোন ঢোকাতে পারবেন, এমন ব্যাগ থাকবে আরও কিছুদিন।
২০২২ সাল থেকেই ব্যাগের আরেকটি ধারা দেখা যাচ্ছে। অর্ধচাঁদ আকারের ব্যাগের ধারা এ বছরও থাকবে। ক্যাজুয়াল লুকের সঙ্গেই এটি যায় বেশি। অল্প কিছু জিনিস বহন করার জন্য আদর্শ। বগলের নিচে সুরক্ষিতভাবে ব্যাগটিকে আটকে রাখতে পারবেন। কম নকশা, দেখতে ছিমছাম ও পরিবেশবান্ধব ব্যাগের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে বেশ কয়েক বছর ধরে। আমাদের দেশেও চেষ্টা করা হচ্ছে প্লাস্টিক বাদ দিয়ে এ ধরনের ব্যাগের ব্যবহার বাড়াতে। বাজার কিংবা স্টাইলিং—সবখানেই এখন প্রশংসা পাচ্ছে কাপড়ের তৈরি ব্যাগ।
পাশ্চাত্যে ব্যাগের হাতলে চেইনের ব্যবহার জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আমাদের দেশে তৈরি ব্যাগেও পুরো হাতল কিংবা একাংশে চেইনের ব্যবহার হচ্ছে। এই উপকরণ লাগালে পুরো ব্যাগেই নিঃশব্দে চলে আসে আভিজাত্য। ২০২৫ সালে বাড়তি সংযোজন হিসেবে ব্যাগের হাতলে যোগ হবে নানা নকশার কি–রিং। সামনের বছর ঝালরের ব্যবহার নাটকীয়তা আনবে। এ ধরনের নকশা অবশ্য এখনো আমাদের এখানে দেখা যায়নি।
‘ইস্ট ওয়েস্ট’ ধারা নামে পরিচিত ব্যাগগুলো ‘স্ট্রেইট অ্যান্ড ন্যারো’ নামেও পরিচিত। বাগেট ব্যাগের আধুনিক রূপ বা মডার্ন খালা বলতে পারেন। বড় বা মাঝারি আকারের ব্যাগের বাইরের অংশে ছোট–বড় পকেট লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বারবার যেন মূল ব্যাগের অংশে হাত ঢোকাতে না হয় সেদিক চিন্তা করে।
ব্র্যান্ডগুলো গাঢ় লাল, কালো, প্যাস্টেল, সবুজ ও বাদামি রঙের ব্যাগ বানানোর দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। এ ছাড়া ব্যাকপ্যাক আবার দেখা যাচ্ছে। মাঝে কয়েক বছর পাশ–ব্যাগের গুরুত্ব ছিল বেশি।
ব্যাগের নকশা আসবে, যাবে। আপনার স্টাইল আর প্রয়োজনীয়তা মাথায় রেখে তবেই ঠিক করুন, আজ কোন ব্যাগটি হতে পারে আপনার সঙ্গী। আবহাওয়ার কথাটি আগেও বলেছি। বৃষ্টি পড়লে সোয়েড উপকরণের ব্যাগ নিলে কিন্তু হবে হিতে বিপরীত। আধুনিক ধারা ততক্ষণ দেখতে ভালো লাগে, যতক্ষণ আপনাকে সহায়তা করবে, চলাফেরায় দেবে আরাম।