সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের জয়জয়কারের এই যুগে ‘বিখ্যাত’ হওয়ার সংজ্ঞা ও সূত্র দুটিই বদলে গেছে। ইউটিউব আর ইনস্টাগ্রামের মতো মজবুত ভিত গড়ে ওঠায় বিশ্বে চলছে অন্য রকম এক গণতন্ত্র। এখানে সরাসরিই নিজের কাজের মাধ্যমে যে কেউ ‘বিখ্যাত’ হয়ে উঠতে পারেন। ডিজিটাল এই দুনিয়ার বিখ্যাত মানুষেরা অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেন নিজেদের ভাবনা। জীবনযাপনের চলতি ধারাও বদলে দিতে সক্ষম তাঁরা। এ বছরের মে মাসে ফ্রান্সের কান শহরে অনুষ্ঠিত ওয়ার্ল্ড ইনফ্লুয়েন্সারস অ্যান্ড ব্লগারস অ্যাওয়ার্ডসে এমনই সব মানুষদের দেখা মিলেছিল, যাঁরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমকে ভিত্তি করে সাধারণ মানুষকে নেতৃত্ব দেন। উৎসাহ দেন নানা কাজে, হয়ে ওঠেন সাধারণ মানুষের বিনোদনের উৎস।
২৪ মে কান শহরের হোটেল মারতিনেজে বসেছিল ওয়ার্ল্ড ইনফ্লুয়েন্সারস অ্যান্ড ব্লগারস অ্যাওয়ার্ডসের আসর। এটি হয়ে উঠেছিল নানা ধরনের ইনফ্লুয়েন্সারের জমজমাট এক মিলনমেলা। তাঁদের প্রত্যেকেই কিন্তু অনন্য ভাবনার অধিকারী। রূপচর্চা, সাজগোজ, ফ্যাশনে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা ছাড়াও সামাজিক শক্তি গড়ে তোলার কাজে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারেন ইনফ্লুয়েন্সাররা। পুরস্কারপ্রাপ্ত ইনফ্লুয়েন্সারদের মধ্যে তিনজন সম্পর্কে জেনে নিন আজ।
তুরস্কের এই শেফ বিশালাকার খাবারদাবার তৈরির জন্য বিখ্যাত। তাঁর ‘সিগনেচার ডিশ’ হলো বিরাট আকারের টার্কিশ কাবাব। লিওনেল মেসি আর ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, দুজনেই বুরাক আর তাঁর বিখ্যাত কাবাবের সঙ্গে ছবিতে ‘পোজ’ দিয়েছেন। ইনস্টাগ্রামে তাঁর ৫৪ মিলিয়ন অনুসারী। টিকটকে তাঁকে অনুসরণ করে ৭৫ মিলিয়ন মানুষ।
সামাজিক ও পরোপকারী কর্মকাণ্ডে মানুষকে উৎসাহিত করেন অ্যাঞ্জেলিনা উসানোভা। ইউক্রেনকে মানবিক সাহায্য দেওয়ার জন্য দাতব্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছেন জাতিসংঘের এই শুভেচ্ছাদূত। বাস্তুচ্যুত ৭০টি ইউক্রেনীয় পরিবারের বাসস্থানের ব্যবস্থা করেছেন। এ বছর মিস ইকো ইন্টারন্যাশনাল খেতাব পেয়েছেন এই ইউক্রেনীয় ইনফ্লুয়েন্সার। তিনি তাঁর অনুসারীদের জলবায়ুর পরিবর্তন সম্পর্কে সচেতন করে তোলেন, টেকসই জীবনধারায় উদ্বুদ্ধ করেন।
কানাডীয় এই ফ্যাশন মডেল বিশ্বের প্রথম ‘ডিজিটাল সুপারমডেল’। ভোগ ইটালিয়ার মতো সমাদৃত ফ্যাশন ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ হয়েছেন কোকো রোচা। তিনি একজন আইনজীবী, যিনি নারীর ক্ষমতায়নের পক্ষে কাজ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে কম বয়সী মডেলদের সুরক্ষার জন্য নতুন আইন প্রণয়নে মুখ্য ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। পরবর্তী প্রজন্মের মডেলদের গড়ে তুলতে তিনি তাঁর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ভিত্তিটিকে কাজে লাগান। ‘কোকো রোচা মডেল ক্যাম্প’-এ কম বয়সী মডেলদের প্রশিক্ষণ দেন। হার্ভার্ড ও ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সম্মানিত প্রতিষ্ঠান থেকেও তাঁকে প্রশিক্ষক হিসেবে ডাকা হয়েছে।
সূত্র: ফোর্বস