স্টাইল আর সুরক্ষা—দুটোই দেয় রোদচশমা। তালিকায় স্মার্টনেসের বিষয়টিও যোগ করতে পারেন। অনেক সময় শুধু রোদচশমার কারণেই সাজে চলে আসতে পারে পূর্ণতা। ক্লান্ত চোখ ঢাকতেও এই চশমার জুড়ি মেলা ভার। তারকাদের ছবি দেখলেই বুঝবেন। লালগালিচা ছাড়া বেশির ভাগ জায়গায় পাপারাজ্জিদের সামনে রোদচশমা ছাড়া পারতপক্ষে আসতে চান না তাঁরা। আর চোখে যদি থাকে রোদচশমা, মনেও ছড়িয়ে পড়ে রঙিন ভাব। কড়া রোদ থাকলেও রোদচশমার কারণে অনেকটাই ঠান্ডা হয়ে আসে দুনিয়া। মজা করে অনেকেই বলেন, কাউকে এড়াতে চাইলে চোখে পরে নিন রোদচশমা।
প্রতিবছরই রোদচশমায় যোগ-বিয়োগ হতে থাকে কাট, নকশা আর রং। পাশ্চাত্যের নামীদামি ব্র্যান্ডগুলো থেকে অনুপ্রাণিত নকশা এখানেও ছড়িয়ে পড়ে। অনলাইন আর দোকানে যেসব রোদচশমা পাওয়া যায়, পাশ্চাত্যের চলতি ধারা থেকেই অনুপ্রাণিত সেগুলোর নকশা। তবে চলতি ধারার রোদচশমা চোখে দেওয়ার আগে জানা থাকা উচিত, এখন জনপ্রিয়তায় আছে কেমন ডিজাইন। আর কোন কাটই বা মানাবে আপনার চেহারায়।
চশমার ওপর টপবার শেড সাহসী একটা চাহনি নিয়ে আসে। নাটকীয় ভাব থাকবে, কিন্তু কমনীয়তা চলে যাবে না। টপবার দেওয়া রোদচশমাগুলো সহজেই নজর কাড়ে। টপবার দেওয়া চারকোনা শেডগুলো গোলাকার চেহারার জন্য উপযুক্ত।
৭০ দশকের রোদচশমার স্টাইলও দেখা যাবে এ বছরের বাকি সময় এবং আগামী বছরের বেশ লম্বা একটা সময়। এ স্টাইলের রোদচশমার ফ্রেমগুলোয় প্রাধান্য পাবে হলুদ, কমলা, হালকা নীল রং।
ক্যাটস আই বা কৌণিক ধাঁচের শেডগুলো এখন বেশ চলছে। ক্ল্যাসিক ধাঁচের যেসব শেড গত বছর পর্যন্ত জনপ্রিয় ছিল, সেগুলোতেও কিছুটা ক্যাটস আই ভাব নিয়ে এসেছে নানা ব্র্যান্ড। চিন্তা করে দেখলে ক্ল্যাসিক বিড়াল-চোখ আকৃতির রোদচশমা কখনোই পুরোপুরি বিলুপ্ত হয়নি। ১৯২০–এর দশকে শিল্পী আলটিনা শিনাসি মিরান্ডা প্রথম ক্যাটস আই রোদচশমা বানান। চলতি ধারায় না থাকলেও এ ধরনের রোদচশমা সংগ্রহের মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যাবে। চেহারার চাহনিতে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে এ ধরনের রোদচশমা। খুব সহজেই আনা যায় আধুনিক ভাবও। টরটিশশেল ফ্রেমও এ বছর জনপ্রিয়তার তালিকায় রয়েছে।
অতিরিক্ত বড় আকারের পোশাকের চল কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে। সেটার সঙ্গে তাল মেলাতে চলতি ধারায় এবার বড় আকারের রোদচশমাও চলে এসেছে। চেহারায় নাটকীয়তা নিয়ে আসার পাশাপাশি সাহসী স্টেটমেন্টও তৈরি করে এগুলো।
গোর্পকোর স্টাইলও কম বয়সীদের মধ্যে নিজের একটা অবস্থান তৈরি করে নিয়েছে। এই স্টাইল মূলত স্পোর্টি বা খেলোয়াড়দের স্টাইল থেকে অনুপ্রাণিত। বাইকারদের স্টাইলটিও এখানে যোগ হয়েছে। চিকন মেটাল ফ্রেমের রোদচশমাও দেখা যাবে চলতি ধারায়।
অনেকেরই মিররড রোদচশমা পছন্দ। এ ধরনের রোদচশমার কাচে আরেকজনের প্রতিবিম্ব দেখা যায়। এসব রোদচশার ক্ল্যাসিক রুপালি রং থেকে গাঢ় নীল রঙের প্রতিফলক আবরণ ব্যবহার করা হয়। আছে হলুদ, লাল রংও।
গোল আকারের শেডগুলোও এখন চলছে। তবে রোদচশমা গোল হয়ে গেলে ছোট আকারের মধ্যে থাকলেই ভালো।
রোদচশমার নকশার চেয়ে আপনার চেহারায় রোদচশমাটা কতটুকু মানিয়েছে, সেটা বোঝা বেশি জরুরি। হাল ফ্যাশনের রং আর নকশার ভেতরই থাকতে পারবেন আপনি, শুধু চেহারা অনুযায়ী ফ্রেম আর শেড বেছে নিতে হবে। খেয়াল রাখবেন, রোদচশমাটি যেন আপনার নাকে আর কানে আরামদায়কভাবে বসে। বারবার পিছলে পড়ে না যায়। অনেক সময় রোদচশমা কেনার সময় যে অংশ কানের ওপর বসে, সেটি একটু ঢিলা বা আঁটসাঁট মনে হয়। দুটো বিষয়ই যেন সঠিক থাকে।
রোদের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখকে সুরক্ষা দেবে, সে ধরনের লেন্সকেই প্রাধান্য দিন।
গোলাকার চেহারার জন্য আয়তক্ষেত্রাকার, বর্গাকার বা ক্যাটস আই রোদচশমার মতো কৌণিক ফ্রেম মানানসই। এসব আকার গোলাকার চেহারায় একটা ভারসাম্য তৈরি করে। বৃত্তাকার ফ্রেম এড়িয়ে চলুন, কারণ, এগুলো চেহারাকে আরও গোল করে।
ডিম্বাকৃতি মুখের জন্য অ্যাভিয়েটর, আয়তক্ষেত্রাকার ফ্রেম ও বড় আকারের রোদচশমা ভালো।
বর্গাকার চেহারার জন্য গোলাকার বা ডিম্বাকার ফ্রেমের রোদচশমা বেছে নিন। এ ধরনের ফ্রেম চেহারায় কিছুটা নমনীয়তা নিয়ে আসবে।
হৃদয় আকৃতির চেহারায় নিচের অংশ ভারী—এমন ফ্রেম, অ্যাভিয়েটর বা বিমানচালক এবং গোলাকার স্টাইলের রোদচশমা মানাবে।
হীরা বা ডায়মন্ড চেহারায় রিমলেস ফ্রেমের রোদচশমা মানানসই। এ ছাড়া ডিম্বাকৃতি ফ্রেম, রিমলেস ফ্রেম ও ক্যাটস আই ফ্রেমের রোদচশমা মানানসই।
আয়তাকার মুখের জন্য বড় আকারের ফ্রেম, কারুকাজ আছে এমন ফ্রেম উপযুক্ত। এ ধরনের চেহারায় ভালো লাগে বড় আকারের রোদচশমা।
সূত্র: ভোগ, হারপারস বাজার