সুতি শাড়ির সঙ্গে কাচের চুড়ি—বাঙালি সাজে আর কী চাই

কাচের চুড়িতে সাদামাটা সাজও হয়ে ওঠে অনবদ্য
ছবি : প্রথম আলো

অল্প কিছু কাচের চুড়িতে সাদামাটা সাজও হয়ে ওঠে অনবদ্য। আর দুই হাত ভরে চুড়ি পরলে তো কথাই নেই। সুতি শাড়ি, কপালে টিপ, হাতে কাচের চুড়ি—বাঙালি সাজে আর কী চাই, বলুন?

‘এনে দে রেশমি চুড়ি, নইলে যাব বাপের বাড়ি’—গান বাজছে শপিং মলের সামনে। কাচের চুড়িসহ বিক্রি হচ্ছে হরেক রকম চুড়ি

রঙের বাহার

লাল, সবুজ, টিয়া, নীল, হলুদ, কমলা, খয়েরি, কালো—যেন এক রঙের মেলা। রঙের ভিন্ন ভিন্ন শেডও পাবেন। পোশাকের সঙ্গে মিলিয়েও বেছে নিতে পারেন চুড়ির রং। আবার রঙের বৈপরীত্যেও আসে বৈচিত্র্য। সবুজ পোশাকের সঙ্গে লাল চুড়িতে সৃষ্টি হয় দেশাত্মবোধক এক আবহ। চলছে ফেব্রুয়ারি। ফাল্গুন আসন্ন। উৎসব-আয়োজনের এই মৌসুমে প্রতিবারই সাজের অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে নানা রঙের কাচের চুড়ি। হলুদ-লাল-কমলা-সবুজ-টিয়া রঙের সঙ্গে তো জড়িয়ে রয়েছে ফাল্গুনের চিরন্তন রূপ। এর বাইরেও এখন ফাল্গুনের রঙিন সাজে যুক্ত হচ্ছে নানা রং।

আবার নানা রঙের চুড়ি নানাবিধ সংখ্যায় সাজিয়েও আনতে পারেন ভিন্নতা। দুটি লাল চুড়ির পর তিনটি হলুদ চুড়ি, এরপর একটি টিয়া রঙের চুড়ি, আবার লাল, আবার হলুদ—এভাবে গড়তে পারেন নানা সমন্বয়। কোথায় কোন রঙের কতগুলো চুড়ি পরবেন, কোনটার পর কোনটা মানানসই হবে, তা একান্তই আপনার সৃজনশীলতার ওপর নির্ভর করবে। এমন অনেকগুলো রঙের চুড়ি আবার সমন্বয় করেও বিক্রি করা হয়, যার নাম দেওয়া হয়েছে রংধনু চুড়ি।

উৎসব-আয়োজনে সাজের অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ হয়ে ওঠে নানা রঙের কাচের চুড়ি

ভিন্ন রং, ভিন্ন ধরন

রেশমি কাচের চুড়ির পাশাপাশি খাঁজকাটা চুড়িও পাওয়া যাচ্ছে। কাচের চুড়ির মসৃণ ধরনটার চেয়ে এটি একেবারেই আলাদা। একটি চুড়িতে একাধিক রঙের সমন্বয়। চুড়ির দুই পাশে দুই রং—চাইলে এমন চুড়ি কিনতে পারেন। নির্দিষ্ট কিছু রঙের ক্ষেত্রে ভিন্ন ধারার সমন্বয়ও দেখা যায়। স্বচ্ছ, সাদা কাচের চুড়ির ভেতর রঙিন রেখাও দেখতে পাবেন। কিছু কাচের চুড়িতে এখন মখমলের ব্যবহারও হচ্ছে। জরির মতো ঝিলিমিলিও পাবেন কিছু কাচের চুড়িতে।

নানা রঙের চুড়ি নানাবিধ সংখ্যায় সাজিয়েও আনতে পারেন ভিন্নতা

আছে বাহারি নামও

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় চুড়ি বিক্রি করেন মোসাম্মৎ নাসিমা। চারুকলা ইনস্টিটিউটের বিপরীতে, স্বাধীনতা জাদুঘরের গেটের সামনে তাঁর সঙ্গে দেখা। জানালেন, ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে চুড়ি বিক্রি করেন তিনি। বছরজুড়েই এখানে বসেন, সঙ্গে থাকে বাহারি চুড়ি। রেশমি আর খাঁজকাটা চুড়ি ছাড়াও লালি, দিঙ্গু, ভ্যাটকা ও সাইকেল চুড়ির মতো মজাদার চুড়ির নাম জানা গেল তাঁর কাছে। আরও আছে কাচ ও সুতা দিয়ে কারুকাজ করা চুড়ি, মখমল চুড়ি এবং কাচ বালা।

ধানমন্ডির জেনেটিক প্লাজার সামনে চুড়ির পসরা নিয়ে বসেছিলেন শফিউল্লাহ সরদার। জানালেন, কুড়ি বছরের বেশি সময় ধরে চুড়ির ব্যবসা করছেন। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন শপিং মলের সামনে তাঁকে পাওয়া যায়। আজও একটা স্থায়ী জায়গা হলো না বলে আক্ষেপ করছিলেন। সেখানে ফ্যান্সি চুড়ি, মাল্টি চুড়ি, মখমল চুড়ি, জয়পুরী চুড়ি, মিনাপুরী চুড়ি, কসমসসহ নানা রকম কাচের চুড়ি আর কাচ বালার খোঁজ পাওয়া গেল শফিউল্লাহ এবং তাঁর নিকটবর্তী আরেক বিক্রেতার কাছে।

কাচের চুড়ি বেশ সহজলভ্য

কিনতে চাইলে

কাচের চুড়ি সহজলভ্য। সাজের অন্যান্য অনেক অনুষঙ্গের চেয়ে দামও কম। বিক্রি হয় ডজন হিসেবে। ৫০ টাকা থেকে শুরু হয় দাম। ডজনপ্রতি সর্বোচ্চ আড়াই শ টাকা দামের চুড়ির খোঁজ মিলল। কাচ বালা অবশ্য বিক্রি হয় জোড়া হিসেবে। দাম ৬০ টাকা।