যে বাজারে কম দামে পাওয়া যাবে বিয়ের সব শাড়ি

বিয়ে মানেই একের পর এক অনুষ্ঠানের পর্ব চলতেই থাকে। কেনাকাটার তোড়জোড়ও থাকে বেশি এ কারণেই। বিয়ের নানা আয়োজনের শাড়ি এক জায়গা থেকে কিনতে পারলে ঝামেলা কমে যায় অনেকখানিই। ঢাকার ধানমন্ডি হকার্স মার্কেট হতে পারে আপনার সমস্যার সমাধান। যেখানে গেলে সাধ্যের মধ্যে শাড়িটি অনায়াসে আপনি বেছে নিতে পারবেন। ঢাকা কলেজের বিপরীতে গাউছিয়া মার্কেট–লাগোয়া ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের পুরোটাতেই রয়েছে রকমারি শাড়ি। গায়েহলুদ, মেহেদি থেকে শুরু করে বিয়ে, বউভাতসহ সব অনুষ্ঠানের শাড়ি মিলছে এখানে। সেই সঙ্গে লেহেঙ্গাও আছে। প্রতিটি দোকানেই আছে দরদাম করার সুযোগ।

সাধারণত বিয়েতে বেনারসি শাড়ির প্রচলন বেশি
ছবি: কবির হোসেন

সব ধরনের শাড়ির সমাহার

সাধারণত বিয়েতে বেনারসি শাড়ির প্রচলন বেশি। তবে আজকাল জামদানি পরে বউ হতেও আগ্রহী হচ্ছেন অনেকে। সেই সঙ্গে কাতান, সিল্ক, টিস্যু, কাঁথাস্টিচ, তসর, বালুচরি, কাঞ্জিভরম, শিফন, জর্জেট, সুতি, মণিপুরি, হাফ সিল্কসহ নান্দনিক নকশার অসংখ্য শাড়ি দেখা গেল দোকানগুলোয়। সবচেয়ে বড় কথা, প্রতিটি শাড়ির মধ্যে আবার কয়েকটি রঙের বিকল্পও রাখা হয়। শাড়ি পছন্দ হলেও রং পছন্দ না হওয়ার ঝামেলা থাকে না বললেই চলে। অন্যদিকে প্রতিটি দোকানে আলাদা রকমের শাড়ি থাকার কারণে একই মার্কেট থেকে পুরো বিয়ের বাজার করে বের হতে পারেন ক্রেতারা। ফরিদপুর থেকে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বিয়ের কেনাকাটা করতে দেখা গেল ব্যাংক কর্মী নাজনীন সুলতানাকে। বিয়ের প্রতিটি আনুষ্ঠানিকতার জন্য ভিন্ন ভিন্ন সব শাড়ি একবারে কিনে নেবেন বলে জানান তিনি। সাপ্তাহিক ছুটি মঙ্গলবার ছাড়া বাকি দিনগুলোতে সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ক্রেতাদের সমাগম থাকে।

‘বস্ত্রবিতান’–এর স্বত্বাধিকারী জানান, কেউ যদি কোনো শাড়ির ছবি নিয়ে আসেন, তাহলে সেটিও তাঁকে মিলিয়ে দেওয়া যাবে। আরেক দোকান ‘আসমা শাড়িজ’-এর বিক্রয়কর্মী জানান, এবার বিয়ের মৌসুমে হালকা রঙের চাহিদাই বেশি।

কেমন দাম

২৫০ টাকা থেকে শুরু করে শাড়ির দাম গড়ায় কয়েক লাখ টাকায়

মজার ব্যাপার হলো এখানে ২৫০ টাকা থেকে শুরু করে শাড়ির দাম গড়ায় কয়েক লাখ টাকায়। বিয়ের বেনারসি শাড়ির দাম শুরু হয় ৫ হাজার টাকা থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত। জামদানি শাড়ির দাম নির্ধারিত হয় সুতার কাউন্ট অনুযায়ী। সুতা যত চিকন হবে, কাউন্টের মান তত বৃদ্ধি পাবে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে মূল্যও। ‘রেখা জামদানি কুটির’–এর বিক্রয়কর্মী জানান, বিয়ের জন্য মূলত ৬০ থেকে ১০০ কাউন্টের জামদানির চাহিদা বেশি। মূল্য ৭ হাজার টাকা থেকে শুরু করে কাজ অনুযায়ী ঊর্ধ্বমুখী হয়।

বিয়ে-বউভাতের অনুষ্ঠানের জন্য ঝলমলে চুমকি বা কারচুপির কাজ করা জর্জেট, অরগাঞ্জা, টিস্যু বা মসলিনের শাড়ি রয়েছে পুরো বাজারেই। দাম ৬ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে। অন্যদিকে ৫ হাজার থেকে শুরু হয় কাঞ্জিভরম শাড়ির মূল্য। যাঁরা লেহেঙ্গা পরতে ভালোবাসেন, তাঁরা কিনতে পারেন নানা নকশার লেহেঙ্গা।

প্রতিটি দোকানেই আছে দরদাম করার সুযোগ

৩ হাজার থেকে শুরু করে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। গায়েহলুদ, মেহেদি অনুষ্ঠানসহ অন্যান্য পর্বের জন্য মার্কেটের দোতলাজুড়ে রয়েছে সুতি, মণিপুরি, কোটা শাড়ি। এসব শাড়ি মিলবে ৫০০ থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকার ভেতরে। শাড়ির মানভেদে সিল্ক ও শিফনের দাম পড়বে ১ হাজার ২০০ থেকে ৫ হাজার টাকা। তবে এখানে কোনো শাড়ির মূল্য নির্ধারিত নেই। কেনাকাটা করে জিততে হলে আপনাকে দরদামে বেশ চৌকস হতে হবে, নয়তো ঠকে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।