রোজার এ সময়ে মালিবাগ চৌধুরী পাড়ার পল্লীমা সংসদ থেকে তালতলা মার্কেট পর্যন্ত জমজমাট হয়ে ওঠে ইফতারির বাজার। মানুষের ভিড়ে খিলগাঁওয়ের এই ইফতারির বাজারটি গমগম করতে থাকে। এমনিতেই ভোজনরসিকদের কাছে জায়গাটি প্রিয়। রুফটপ রেস্তোরাঁসহ রাস্তার পাশে ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতে ভিড় লেগে থাকে ১১ মাস। আর রোজার এক মাস ইফতারির বাজারে জমজমাট।
যাঁরা আশপাশের সৌন্দর্যকে গুরুত্ব দিচ্ছেন, তাঁদের জন্য রুফটপ রেস্তোরাঁ। এলাকাটি একটু খোলামেলা হওয়ায় দারুণ স্কাই ভিউ পাওয়া যায়। এসব রেস্তোরাঁয় আলাদা ইফতারি উপকরণের পাশাপাশি বুফে প্যাকেজও রয়েছে। ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে ৪০-৫০ আইটেমের প্যাকেজ। ফ্রাইড রাইস থেকে শুরু করে খাবার শেষের মিষ্টান্ন—সবকিছুতেই পরিপূর্ণ ইফতার বুফে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ইফতারের সময় রেস্তোরাঁর ভেতরে মানুষের যেমন ভিড়, তেমনি বাইরে রাস্তার দুই পাশে ইফতারির ভ্রাম্যমাণ দোকানগুলোতেও ভিড়। এ দোকানগুলো থেকে বাসায় কিনে নেওয়ার ক্রেতাই বেশি।
ব্যাংকার আশিক বিন ফয়সালের বাসা রামপুরায়। প্রতিদিন অফিস থেকে বাসায় ফেরার পথে খিলগাঁও থেকে ইফতারি কিনে নিয়ে যান তিনি। ‘চাহিদামতো সব ইফতারি পাওয়া যায়। উপকরণগুলোর স্বাদও অসাধারণ। তাই ইফতারি কেনার জন্য আমার প্রথম পছন্দ খিলগাঁওয়ের ইফতারির বাজার,’ ইফতার কিনতে কিনতে জানান আশিক বিন ফয়সাল।
বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার করতে এসেছেন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রুম্মান আহমেদ। তিনি বলেন, ‘বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার করা আর আড্ডা দেওয়ার জন্য নির্ঝঞ্ঝাট একটি জায়গা খুঁজছিলাম। খিলগাঁওয়ের এ রেস্তোরাঁগুলোতে কোনো ঝামেলা ছাড়াই ইফতার করে দীর্ঘ সময় আড্ডা দেওয়া যায়।’
আগুনমাখা রেস্তোরাঁর পরিচালক মওসুদুর রহমান বলেন, ‘ছুটির দিনগুলোতে পরিবার-পরিজন নিয়েও খেতে আসেন অনেকে। ইফতার করতে আসা মানুষের ঢল সামলাতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়।’
খিলগাঁওয়ের ইফতারির বাজারে পাওয়া যায় খাসির কাচ্চি, তন্দুরি চিকেন, ফিরনি, কিমা পরোটা, গরুর তেহারি, চিকেন রোস্ট, চিকেন বিরিয়ানি, আস্ত মোরগ রোস্ট, গরুর চাপ, গরুর ভুনা, খাসির ভুনা, গরুর বট ভুনা, চিকেন ফ্রাই, বোরহানি, জর্দা, খাসির হালিম, গরুর হালিম, চিকেন শাশলিক, চিকেন ললিপপ, জালি কাবাব, ড্রামস্টিক মুঠি কাবার, টিকা কাবাব, ডিম চপ, কিমা আলুর চপ, বোম্বাই জিলাপি, রেশমি জিলাপি, বুন্দিয়া, লুচি পরোটা, নান রুটি, গরুর রেজালা, খাসির রেজালা, টানা পরোটা, ছোট বুট, পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপসহ নানা উপকরণ। আর ধরন ও রেস্তোরাঁর মান অনুযায়ী ইফতারির উপকরণগুলোর দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।