বাইকে চড়ার আগে পরে নিন সঠিক পোশাক
প্রতিদিনই বাইকে যাতায়াত করেন কয়েক লাখ মানুষ। শীতের এ সময়ে বাইকারদের পোশাক নিয়ে থাকতে হয় বাড়তি সচেতন। মোটরসাইকেল চালানো শুরু করলেই টের পাওয়া যায় ঠান্ডার প্রকোপ। এই সময় বাইকারদের পোশাক হবে এমন, যা শীত থেকে রক্ষা করবে, আবার স্বাচ্ছন্দ্যও পাওয়া যাবে।
হেলমেট
চেহারা ও মাথার কিছু অংশ খোলা থাকে, এমন হেলমেট পাওয়া যায়। তবে এ ধরনের হেলমেট কোনো ধরনের সুরক্ষা দেয় না, বলছিলেন ই-মটো বাজার প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তা ইরফান বাবু। তিনি জানান, পুরো মাথাকে রক্ষা করবে, এমন হেলমেট পরতে হবে। এ ধরনের হেলমেটে চেহারা, গলা ও মাথা ঢেকে যায়। ফলে বাতাসের তীব্রতা ভেতরে খুব একটা অনুভূত হয় না। তবে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা (ভেন্টিলেশন) থাকে। ভালো মানের হেলমেট ওজনেও খুব বেশি ভারী হয় না।
ব্যান্ডানা
হেলমেটের ভেতর দিয়ে কিছুটা বাতাস প্রবেশের ব্যবস্থা থাকে। ঠান্ডা থেকে রক্ষা পেতে নরম কাপড়ের ব্যান্ডানা ব্যবহার করতে পারেন। এটি নাকের ওপর যেমন পরা যায়, তেমনি মাথায়ও স্কার্ফের মতো পরতে পারবেন। ধুলা, ময়লা ও শীতের ঠান্ডা বাতাস থেকে সুরক্ষা দেবে। আবার চাইলে গলাতেও মাফলার হিসেবে ব্যবহার করা যায় ব্যান্ডানা।
গ্লাভস
রাইডিং গ্লাভস মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে। একটি হলো আধা ঢাকা ও অন্যটি পুরো হাত ঢাকা। আধা গ্লাভসে হাতের তালু ঢাকা থাকলেও আঙুল খোলা থাকবে। তবে শীতের সময়ে দরকার পুরো ঢাকা গ্লাভস। এ ধরনের গ্লাভস আঙুলসহ পুরো হাতের অংশ ঠান্ডায় জমে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে। চামড়ার তৈরি গ্লাভস শীতের জন্য আদর্শ। দাম কম হওয়ায় অনেকে পিউ লেদারের গ্লাভসও কেনেন। আমাদের দেশের আবহাওয়ায় ন্যাস উপকরণের ফুলহাতা গ্লাভসও ভালো কাজ করবে।
জ্যাকেট
বাইকারদের জন্য আদর্শ পোশাক হলো রাইডিং জ্যাকেট, জানালেন ইরফান বাবু। রাইডিং জ্যাকেট ভেড়ার চামড়া বা কৃত্রিম চামড়ার হয়ে থাকে। তবে আমাদের দেশে অনেকেই লাইনার অথবা ইনার দেওয়া জ্যাকেট পরে থাকেন। লাইনার বা ইনার কিছুটা র্যাক্সিনের মতো কৃত্রিম তন্তু দিয়ে তৈরি। এটি জ্যাকেটের সঙ্গে লাগানো থাকে। গরম বোধ করলে ইনার খুলে শুধু জ্যাকেট পরা যাবে।
প্যান্ট
আমাদের দেশের আবহাওয়ায় সাধারণত জিনস, কডের কাপড়ের প্যান্ট পরে আরামেই বাইক চালানো যায়।
বাতাস আটকানোর জ্যাকেট
শীতের বাতাস ভালোভাবে ঠেকাতে পারে উইন্ড ব্রেকার। এই জ্যাকেট রাইডিং জ্যাকেটের মতো ভারী ও মোটা হয় না। খুব পাতলা প্যারাস্যুট কাপড় দিয়ে তৈরি এ জ্যাকেট ওজনেও হালকা। জ্যাকেট বা সোয়েটারের ওপর দিব্যি পরে নেওয়া যায়। বাতাসের ঝাপটা থেকে বুকের অংশকে সুরক্ষা দেয় এই জ্যাকেট। বেশি শীতে পরার জন্য মোটা প্যারাস্যুট কাপড়ের উইন্ড ব্রেকার জ্যাকেটও রয়েছে বাজারে।
চেস্ট প্রটেক্টর
ঠান্ডা লাগার প্রবণতা বেশি থাকলে অথবা দূরে যাতায়াত করলে চেস্ট প্রটেক্টর খুব প্রয়োজনীয়। বুকের অংশে যেন বাতাস না লাগে তাই শীতের কাপড়ের নিচে চেস্ট প্রটেক্টর পরা হয়। ছোট হাতার এই পোশাক মূলত বুকের অংশ, গলা ও পিঠকে বাতাস থেকে রক্ষা করবে। কৃত্রিম চামড়া ও র্যাক্সিনের মিশ্রণে তৈরি হয় চেস্ট প্রটেক্টর।
কোথায় পাবেন
ঢাকার মিরপুর ১০ নম্বর, আগারগাঁওয়ের আইডিবি ভবনের পাশ দিয়ে চলে যাওয়া ৬০ ফিট, বংশাল, হাজারীবাগ, পান্থপথে বসুন্ধরা সিটির বিপরীতে বেশ কিছু দোকানে কিনতে পারবেন এই অনুষঙ্গগুলো।
দামদর
রাইডিং জ্যাকেট ৪ হাজার ৫০০ থেকে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত রয়েছে। গ্লাভস ৪০০ থেকে ৮ হাজার টাকা, হেলমেটের দাম শুরু ৪ হাজার টাকা থেকে। উইন্ড ব্রেকার জ্যাকেট ১৫০ থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকা, চেস্ট প্রটেক্টর ১ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে।