সরাইল হাউন্ড বাঁচাতে ফেসবুক গ্রুপ

বাংলাদেশের অন্যতম কুকুর প্রজাতিটির নাম সরাইল হাউন্ড। জনশ্রুতি আছে, ২০০  বছর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলের জমিদার দেওয়ান মোস্তফা আলী এক ব্রিটিশ নাগরিকের কাছে হাতির বিনিময়ে একটি ‘গ্রেহাউন্ড’ কেনেন। একদিন জমিদারের সঙ্গে শিকারে গিয়ে কুকুরটি হারিয়ে যায়। ৬ মাস পর গর্ভবতী অবস্থায় কুকুরটি ফিরে আসে। তার জন্ম দেওয়া ছানাগুলোর মধ্যে বন্য কুকুরের ছাপ লক্ষ করা যায়। আর এভাবেই জন্ম নেয় নতুন এক প্রজাতি। প্রশস্ত বক্ষ, সম্প্রসারিত নাক আর সাদা লেজ ও থাবা এই প্রজাতির প্রধান বৈশিষ্ট্য। শিকারের বেলায় তাদের দৃষ্টিশক্তি ঘ্রাণশক্তির চেয়ে প্রখর। তাই তাদের ‘সাইট হাউন্ড’ (দৃষ্টিনির্ভর কুকুর) বলে শ্রেণিবদ্ধ করা হয়।

সরাইল হাউন্ড বাঁচাতে নয়া উদ্যোগ
ছবি: ফেসবুক থেকে

জেনারেল এম এ জি ওসমানী দুটি সরাইল হাউন্ড পুষতেন। কথিত আছে, এর একটি তাঁকে শত্রুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিল। চাকচিক্যময় বিদেশি প্রজাতির জনপ্রিয়তার চাপে সরাইল হাউন্ডের সমাদর অনেকখানি কমে গেছে। তার ওপর প্রকৃত প্রজননবিদ বা পালকের অভাবে সরাইল হাউন্ডকে দেশি কুকুরের সঙ্গে প্রজনন করানো হয়। তাই বিশুদ্ধ প্রজাতির সরাইল হাউন্ড বিলুপ্তপ্রায়। শৌখিন সরাইল হাউন্ডকে বিলুপ্তির হাত থেকে বাঁচানোর জন্য সম্প্রতি একটা বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সরাইল হাউন্ডকে সরাইল হাউন্ডের সঙ্গে প্রজননে সহযোগিতা করার জন্য একটি ফেসবুক গ্রুপ খোলা হয়েছে। নাম ‘সরাইল হাউন্ডস অব বাংলাদেশ’। সরাইল হাউন্ডের ছানা বিক্রি হয় ৩০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকায়।

সরাইল হাউন্ডের ছানা বিক্রি হয় ৩০ হাজার থেকে ৩৫ হাজার টাকায়

বাংলাদেশে ঘরে, এমনকি ফ্ল্যাট বাড়িতেও কুকুর পালার চল বাড়ছে। শৌখিন উচ্চবিত্তরা এক গাদা টাকা দিয়ে সাইবেরিয়ান হাস্কি না কিনে অর্ধেক মূল্যে একটা সরাইল হাউন্ডকে বাসায় জায়গা দিলে এই প্রজাতিকে বিলুপ্তির গ্রাস থেকে বাঁচানো সহজ হয়ে যাবে।