মিষ্টিপ্রেমীদের জন্য বছরের সব দিনই চকলেট ডে। বিশেষ দিন খুঁজে খুঁজে আবার চকলেট খেতে হবে? তা কি মানা যায়! বরং সুযোগ পেলেই টুপ করে মুখে ঢুকে যায় প্রিয় স্বাদের একটি চকলেট বার। আর তারপর না হয় ভুলেই গেলেন কী ঘটছে চারপাশে। কারণ, এ কথা তো অস্বীকার করার উপায় নেই যে একটুকরো চকলেটেই মনটা চাঙা হয়ে যায় একনিমেষে।
চকলেট ডের সঙ্গে এখন ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে ফেব্রুয়ারি মাসের ‘ভ্যালেন্টাইনস উইক’। ভালোবাসা দিবসের সাত দিনজুড়ে যেসব বিশেষ দিন রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম চকলেট ডে। তাই চকলেট ডে হিসেবে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয় দিন ৯ ফেব্রুয়ারি। তবে এ দিনের সঙ্গে নেই ইতিহাসের সংযোগ। বরং ভালোবাসা দিবসকে কেন্দ্র করে সবার মধ্যে দূরত্ব কমাতেই যেন এর সৃষ্টি! তাই এটি জনপ্রিয়তা পেয়েছে সব বয়সী মানুষের কাছে।
৭ জুলাই বিশ্বজুড়ে ‘বিশ্ব চকলেট দিবস’ পালন করা হয়। চকলেট কীভাবে জনপ্রিয়তা পেল, এ নিয়ে রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন মত। তবে চকলেটের জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে এর ইউরোপে অনুপ্রবেশই মূল কারণ। আর এই মিষ্টি খাবারটি ইউরোপে প্রথম প্রবেশ করে ১৫৫০ সালে। এই ঘটনাকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য ২০০৯ সাল থেকে শুরু হয় মহাসমারোহে চকলেট ডে পালন।
চকলেটের উত্থান!
চকলেটের ইতিহাস অন্তত দুই হাজার বছরের পুরোনো। প্রথম দিকে কোকোবীজ থেকে তেতো স্বাদের যে পানীয় বানানো হতো, সেটাই জনপ্রিয়তা পায় সবার মধ্যে। এমনকি কোকোবীজ কোথাও কোথাও মুদ্রা হিসেবেও ব্যবহৃত হতো। এ ছাড়া মায়ান ও আজটেক সভ্যতায় কোকোবীজের ব্যবহার ছিল ধর্মীয় রীতিনীতিতেও। কারণ, তারা ভাবত, এর মধ্যে রয়েছে রহস্যময় শক্তি।
তবে মিষ্টিজাতীয় খাবার হিসেবে চকলেট পরিচিতি পায় স্প্যানিশদের হাত ধরে। তারাই এটি প্রথম মধু ও চিনি মিশিয়ে মিষ্টি করে খেতে শুরু করে। তারপর তাদের হাত ধরেই তা ইউরোপে যায়। সে সময় থেকে চকলেট হয়ে ওঠে অভিজাত পরিবারের আয়েশি খাবার। তখন চকলেট বিলাসিতা আর ক্ষমতার প্রতীক হয়ে উঠেছিল। আর সাধারণ মানুষের কাছে এটি ছিল দুর্লভ!
তারপর ধীরে ধীরে চকলেট ইউরোপের অন্য দেশগুলোতেও ছড়িয়ে পড়ে। আর তখন থেকেই বাণিজ্যিকভাবে চকলেট চাষ করা শুরু হয়। কোকোবীজ চাষের জন্য ইউরোপিয়ানরা আফ্রিকায় উপনিবেশ গড়ে তোলে।
১৮২০ সালের দিকে কোকো প্রেসের মেশিন দিয়ে কোকোবীজের পাউডার উৎপাদন করা শুরু হয়। আর তখন থেকেই চকলেট সবার জন্য সহজলভ্য হয়ে ওঠে। ১৮৪৮ সালে থেকে শক্ত চকলেট বার হিসেবে চকলেট বাজারজাত করা শুরু হয়। আর তার পর থেকে চকলেট নতুন নতুন রূপে, নানান স্বাদে আকৃষ্ট করে চলেছে সবাইকে।
সে যা–ই হোক, আজ বিশ্ব চকলেট দিবস। আজ আপনি প্রিয়জনকে চকলেট উপহার দিতেই পারেন।
তথ্যসূত্র: ডেইলি হিস্ট্রি ডট অর্গ, ইকোনমিক টাইমস, এভরিডে হেলথ