বাংলাদেশেও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর অনেক ভক্ত। সেটা হয়তো আমরা জানি, কিন্তু পাঁচবার ব্যালন ডি’অরজয়ী ফুটবলার কি জানেন? যদি বলি, জানেন। কী, কপালে অবিশ্বাসের ভাঁজ পড়ল! কথা কিন্তু সত্য। শুধু জানেন বললে ভুল হবে, রীতিমতো বাংলাদেশকে ভালোও বাসেন এই পর্তুগিজ তারকা।
আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি বাংলাদেশে এসেছেন, ফুটবলও খেলেছেন। কিন্তু রোনালদো তো কখনো আসেননি। তারপরও তিনি বাংলাদেশি ভক্তদের খোঁজ রাখেন। জানালেন বাংলাদেশি তরুণ রায়হান। রায়হানের পুরো নাম ইসমাইল হোসেন। কর্মসূত্রে থাকেন পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে। সেখানকার নামকরা রেস্তোরাঁ স্তুপেন্দ বিচে শেফ হিসেবে কাজ করেন। গত ১৩ সেপ্টেম্বর সদলবল সেই রেস্তোরাঁয় খেতে এসেছিলেন রোনালদো। দলবল মানে সবান্ধব, সপরিবার। খেতে খেতে প্রিয় শিল্পীর গান শোনেন এই ফুটবলার।
সাপ্তাহিক ছুটির আগের সেই রাতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা স্তুপেন্দ বিচে ছিলেন রোনালদো। খেয়েছেন নানা পদের খাবার। বাংলাদেশি তরুণ রায়হান বলেন, ‘রোনালদোর সঙ্গে এভাবে দেখা হয়ে যাবে, কখনো ভাবি নাই। আগে থেকে কিছু জানতামও না। শুধু রোনালদো যেদিন খেতে আসবেন, সেদিন বিকেলের দিকে দুজন লোক রেস্তোরাঁয় আসেন। এখানকার পরিবেশ, নিরাপত্তাব্যবস্থা ইত্যাদি দেখে যান। একটু পর জানতে পারলাম, পুরো রেস্তোরাঁই বুক করে নিয়েছেন রিকার্দো কারেজমা। ইনি রোনালদোর খুব কাছের বন্ধু। রোনালদোর জন্য এই আয়োজনটা তিনিই করেছেন।’
পর্তুগালের জনপ্রিয় গায়ক নিনিনহো ভাজ মায়ার গান রোনালদোর প্রিয়। ওই রাতে প্রিয় বন্ধুকে তাঁর প্রিয় শিল্পীর গান শোনাতে দাওয়াত করেছিলেন রিকার্দো। সন্ধ্যার দিকে বান্ধবী জর্জিনা রদ্রিগেজকে নিয়ে আসেন রোনালদো। ছিলেন পাঁচ ঘণ্টার মতো। এই সময়ে অন্য এক মহাতারকাকেই দেখেছেন রায়হান, ‘এত বড় তারকা, অথচ আচরণ কত নম্র। পুরো সময় নানা রকম খাবার খেলেন, গান শুনলেন, নিজে গাইলেন, নাচলেন, রেস্তোরাঁর সবার সঙ্গে ছবিও তুললেন। টুকটাক কুশল বিনিময়ও করলেন।’
নৈশভোজে অন্য খাবারের সঙ্গে পিৎজা অর্ডার করেন রোনালদো। আর এই পিৎজা বানান রায়হান। সেটি খেয়ে আরেকটি অর্ডার করেন রোনালদো। সেই পিৎজা খেয়ে খুব খুশি পর্তুগিজ তারকা। রায়হান বলেন, ‘রোনালদো আমাকে ডেকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তুমি কোন দেশ থেকে এসেছ?” বললাম, বাংলাদেশ থেকে। ভাবলাম হয়তো চিনবে না, তাই বললাম, আমাদের দেশে তোমার অসংখ্য ভক্ত আছে। সঙ্গে সঙ্গে মাথা নেড়ে রোনালদো বললেন, “আমি বাংলাদেশ সম্পর্কে জানি। আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি। তোমরা অনেক পরিশ্রমী। তোমাদের জন্য শুভকামনা।”’
ছবি তোলার সময়ও সবার সঙ্গে দারুণ দুষ্টুমি করলেন। নিজ থেকে নানা বিষয়ে মজা করলেন। মাঝরাতে বিদায় নিলেন রোনালদো।