টিম মুকুলের ৪ সদস্য
টিম মুকুলের ৪ সদস্য

নভোচারীদের সমস্যা সমাধান করে তৃতীয় ‘টিম মুকুল’

ধরা যাক, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে কয়েকজন নভোচারী ‘এশিয়ান ট্রাই জিরো-জি’ পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হঠাৎ তাঁরা আবিষ্কার করলেন, প্রয়োজনীয় কিছু সরঞ্জাম ও ম্যানুয়াল নেই। এদিকে পরীক্ষার সময় দ্রুত এগিয়ে আসছে। এখন উপায়?

পঞ্চম কিবো রোবট প্রোগ্রামিং চ্যালেঞ্জে এ রকম একটি পরিস্থিতির মুখোমুখিই দাঁড় করানো হয়েছিল প্রতিযোগীদের। চ্যালেঞ্জ ছিল—অ্যাস্ট্রোবি রোবটের মাধ্যমে সরঞ্জাম ও ম্যানুয়াল খুঁজে বের করা। বাংলাদেশি দল ‘টিম মুকুল’ এই চ্যালেঞ্জ দ্রুততার সঙ্গে ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পেরেছে। প্রতিযোগিতায় পেয়েছে তৃতীয় স্থান। এই দলের সদস্যরা হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এভিয়েশন অ্যান্ড অ্যারোস্পেস ইউনিভার্সিটির এভিওনিকস বিভাগের মুহতাসিম রিদওয়ান, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের শেখ মো. গালিব মাহিম, মো. নাঈম ও তাসমীর হোসেন।

কিবো রোবট প্রোগ্রামিং চ্যালেঞ্জ একটি অনলাইন রোবটবিষয়ক প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতা। জাপানের মহাকাশ সংস্থা জাক্সা ও নাসা এর আয়োজক। এতে দুটি পর্যায় রয়েছে—প্রারম্ভিক (প্রিলিমিনারি) ও মূল (ফাইনাল) পর্ব। এ বছর প্রারম্ভিক পর্বে ৩৫টি দেশের ৬৬১টি দল অংশ নেয়। এর মধ্যে ১৩টি দল মূল পর্বে জায়গা করে নেয়। সবশেষে গত ৯ নভেম্বর মূল পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগীরা রোবটের মাধ্যমে হারানো জিনিসের খোঁজে নামেন। অভিযানে টিম মুকুল ১৯৩.৫২ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় হয়।

এ প্রসঙ্গে দলের অন্যতম সদস্য শেখ মো. গালিব মাহিম বলেন, ‘প্রতিযোগিতার শেষ দিকে আমরা একটা ভুল করে ফেলি। এ জন্য সবাই আশাহত ছিলাম। বিজয়ীদের নাম ঘোষণার সময় ইভেন্ট কো-অর্ডিনেটর যখন বারবার ভিডিও অন করার জন্য বলছিলেন, একটু অবাকই হচ্ছিলাম। ভাবছিলাম, আমাদের ভিডিও অন করতে বলার কারণ কী! এরপর তৃতীয় হিসেবে যখন টিম মুকুলের নাম নেওয়া হলো, বিশ্বাসই হচ্ছিল না। আনন্দ প্রকাশ করার কোনো ভাষা পাচ্ছিলাম না।’

প্রতিযোগিতার মাধ্যমে নানা বিষয় শিখেছে এই তরুণ দল। ত্রিমাত্রিক স্থানে অবজেক্ট (রোবট) কীভাবে চালনা করা যায়, চলার সময় গতিবিধি ও অ্যাঙ্গেল কীভাবে ঠিক রাখা যায়, অবজেক্ট শনাক্তকরণের (ডিটেকশন) জন্য ডেটাসেট তৈরি, মডেল ট্রেইন ও অপ্টিমাইজ করা ইত্যাদি। তবে সাফল্য এসেছে দলগত কাজের মাধ্যমে। টিম মুকুলের দলনেতা মুহতাসিম রিদওয়ান বলছিলেন, ‘দল হিসেবে কাজ করাটাই আমাদের কাজে লেগেছে। আমরা কোডের কার্যকারিতা পরীক্ষা করার জন্য অনেক সিমুলেশন চালিয়েছি।’

নিজেদের দক্ষতা আরও বাড়াতে চান এই তরুণ প্রোগ্রামাররা। পাশাপাশি কিবো-আরপিসির স্থানীয় আয়োজক স্টেমএক্স ৩৬৫–এর সঙ্গে কাজ করতে চান তাঁরা।