আজ আন্তর্জাতিক শিক্ষা দিবস। শিক্ষা একটি মৌলিক মানবাধিকার। এটি সমাজ, অর্থনীতি এবং প্রত্যেক মানুষের সম্ভাবনার ভিত্তি। পেশাগত ও বৃত্তিমূলক দক্ষতা অর্জনসহ অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধির জন্যও শিক্ষা অপরিহার্য। বর্তমান বিশ্বের পরিপ্রেক্ষিতে এভিয়েশন সেক্টরে দিন দিন ক্যারিয়ার প্রসারিত হচ্ছে। যুগের সঙ্গে তাল মেলাতে নিত্যনতুন বিষয়ও যোগ হচ্ছে শিক্ষাব্যবস্থায়। সেগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বিবিএ (অনার্স) ইন এভিয়েশন ম্যানেজমেন্ট এবং বিএসসি (অনার্স) ইন অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং।
বিবিএ ইন এভিয়েশন ম্যানেজমেন্ট চার বছর মেয়াদি অনার্স কোর্স। আট সেমিস্টারে বিভক্ত এই ডিগ্রিতে শিক্ষার্থীরা বিমানবন্দর প্রশাসন, পরিচালনা, এয়ারলাইনসের বিপণন, হিসাবরক্ষণ, এয়ার হোস্টেজ, বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা, ই-কমার্স, সাপ্লাই চেইন ম্যানেজমেন্ট, বিমানবন্দরে কাস্টমস, ই-টিকিটিংসহ জিডিএস প্রোগ্রামে বিসিএস, সরকারি ও বেসরকারি খাতে কাজ করতে পারবে। এখানে বিবিএর ৬০ ক্রেডিট পড়ানো হয়; যা ব্যাংক, মোবাইল অপারেটর কোম্পানি, বিমা, বিক্রয় ও বিপণন, বিসিএস, সরকারি ও বেসরকারি সেক্টরে সব ধরনের চাকরি পেতে সহায়তা করবে। বিএসসি (অনার্স) ইন অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রির জন্য ৪ বছরে ৮ সেমিস্টারে মোট ১৪২ ক্রেডিট সম্পন্ন করতে হয়।
অ্যারোস্পেস প্রকৌশল, এভিওনিকস, এয়ারক্রাফট ইঞ্জিনিয়ারিং, এয়ারলাইনস ইঞ্জিনিয়ারিং, এয়ারপোর্ট ইঞ্জিনিয়ারিং, এয়ারপোর্ট ডিজাইন অ্যান্ড প্ল্যানিং, স্যাটেলাইট, স্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং, রাডার সিস্টেমস, রিমোট কন্ট্রোল সেন্সিং সিস্টেমসহ নানা বিষয়ে তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক জ্ঞান অর্জন করেন শিক্ষার্থীরা।
ব্যবহারিক ক্লাস, পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্টের বাইরেও শিক্ষার্থীদের একটা জগৎ আছে এখানে। প্রতিবছর বিভিন্ন গবেষণা ও প্রকৌশলবিষয়ক প্রতিযোগিতায় আমরা অংশ নিই। বিভিন্ন প্রকল্প উপস্থাপনের মাধ্যমে ক্লাসে শেখা বিদ্যা কাজে লাগিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীরা ভিন্ন কিছু করার চেষ্টা করে। শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা ও কাজের আন্তর্জাতিক সুযোগের বিষয়টিকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়। সারা পৃথিবীতেই বিমান প্রকৌশলী ও কর্মীদের চাহিদা আছে। অনেক দক্ষ জনবল দরকার। তাই আমরা শিক্ষার্থীদের ব্যবহারিক শিক্ষার দিকটিতে জোর দিচ্ছি। আমাদের শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপের অংশ হিসেবেই বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এয়ারলাইনস, বিমানবন্দর বা বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার কাজ করতে পারে।
আগে এসব পড়াশোনার জন্য দেশের বাইরে যেতে হতো। ফলে দেশের প্রচুর টাকা চলে যেত বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রতিবছর যে পরিমাণ দক্ষ কর্মী প্রয়োজন হয়, সেই পরিমাণ প্রশিক্ষিত লোকবল এভিয়েশন খাতে নেই। এই খাতে দক্ষ জনশক্তি তৈরির জন্য ১৯ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে কলেজ অব এভিয়েশন টেকনোলজি। আমাদের কলেজ থেকে পাস করে শিক্ষার্থীরা যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, পর্তুগাল, স্কটল্যান্ড, আয়ারল্যান্ড ও ইংল্যান্ডের বিভিন্ন বিমান কোম্পানিতে কাজ করছে। প্রতিবছর তাদের হাত ধরেই দেশে আসছে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা। তা ছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের বিমান কোম্পানিতেও আমাদের কলেজ থেকে পাস করে শিক্ষার্থীরা কাজ করছে। দেশের জন্য, পরিবারের জন্য তারা বৈদেশিক মুদ্রা পাঠাচ্ছে। তাদের এই অবদান আমাদের অর্থনীতিকে আরও শক্তিশালী করতে জোরালো ভূমিকা রাখছে।