ভালোবাসা কি অভ্যাস, নাকি অনুভবের ব্যাপার? অভ্যাসের গুরুত্ব আছে নিশ্চয়ই। তবে অনুভূতিই আসল। অনেক প্রেমিক-প্রেমিকার পরস্পরের প্রতি অনুযোগ থাকে, ‘তুমি আমাকে ভালোবাসো, কই আমি তো বুঝতে পারি না।’
এই বুঝতে পারাটা জরুরি। কাউকে যদি ভালোবাসেন, নিজে যেমন বুঝতে পারবেন, অপর পক্ষের মানুষটিও তা অনুভব করতে পারবে। তা না হলে বুঝতে হবে, কোথাও একটা তাল কেটে আছে। প্রেমের এই অনুভূতিটা কেমন? নিজের ভেতর ঠিক কেমন বোধ হলে মনে হবে ‘এই তো আসলে প্রেম!’ আসলে সর্বজনগ্রাহ্য মীমাংসিত কোনো ব্যাখ্যা এর নেই। ব্যক্তিভেদে প্রেমানুভূতিও আলাদা। কিন্তু কিছু ব্যাপার তো আছেই, যার ভিন্ন তরজমা নেই। সবার ক্ষেত্রে অভিন্ন। মনে প্রেমের অনুভূতি তৈরি হলে চারপাশের সবকিছুই কেমন অদ্ভুত প্রেমময় লাগে। আধো ঘুমে, জাগরণে চোখে ভাসে প্রিয়মুখ। সেই যে গান আছে না, ‘বাতাসে বহিছে প্রেম/নয়নে লাগিল নেশা।’ কিংবা ‘আমার চোখে ঠোঁটে গালে তুমি লেগে আছ।’ এ রকম আকাশ-বাতাস, কোলাহল-নির্জনতা, অবসর-ব্যস্ততা-যাপিত জীবনের মূর্ত-বিমূর্ত সবকিছুতে লেগে থাকে প্রেমের স্পর্শ, ভালোবাসার আদর।
সত্যি সত্যিই প্রেমে পড়লে, এ সবই অনুভব করতে পারবেন। টাইটানিক সিনেমার সেই দৃশ্য চোখে লেগে আছে নিশ্চয়। জাহাজের ‘বো’তে দাঁড়িয়ে দুহাত বাড়িয়ে রোজ গাইছেন, ‘...আই সি ইউ, আই ফিল ইউ।’ নিবিড় স্পর্শ নিয়ে পেছনে দাঁড়িয়ে জ্যাক। তিনিও নিশ্চয়ই ‘ফিল’ বা অনুভব করতে পারছিলেন!
প্রেম বা ভালোবাসা যা–ই বলি না কেন, এ এক অদ্ভুত শক্তি। এক লহমায় এই শক্তি হয়ে উঠতে পারে পৃথিবী শ্রেষ্ঠ সাফল্যের কারণ। ভালোবাসার মানুষের ইতিবাচক অনুপ্রেরণা মানুষকে যে কত দূর পৌঁছে দিতে পারে, তা হয়তো খোদ সেই মানুষটিও কল্পনা করতে পারবে না। এ জন্যই কিনা মান্না দে গেয়েছেন, ‘চাই না বাঁচতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর।’
আজ ৭ সেপ্টেম্বর, ভালোবাসা অনুভবের দিন (ফিল দ্য লাভ ডে)। আমেরিকায় দিবসটি পালিত হয়। কবে কীভাবে এটি শুরু হয়েছিল, জানা যায় না। দারুণ এই দিন শুধু নর-নারীর রোমান্টিক ভালোবাসায় সীমাবদ্ধ নয়। এই ভালোবাসা হতে পারে পরিবারের প্রতি, বন্ধুবান্ধবের প্রতি কিংবা প্রিয় পোষা প্রাণীটির প্রতি।
ডেজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে