সঙ্গীকে কেন এই একটি প্রশ্ন করবেন

স্বামী–স্ত্রীর সম্পর্কে নিয়মিত মন খুলে কথা না বললে অনেক কথাই না বলা থেকে যায়।
ছবি : সুমন ইউসুফ

ব্যস্ত–তটস্থ জীবনে কাজ, সংসার ও সন্তান সামলে ওঠার পর দম্পতিরা একে অপরের সঙ্গে কথা বলার জন্য ঠিক কতটা সময় পান? হিসাব করলে দেখা যাবে, দিন শেষে একে অপরের সঙ্গে যে কয়েক মিনিট কথা হয়, তার বেশির ভাগই প্রয়োজনীয়।

অতএব দরকারি কথা ছাড়া একে অপরের সঙ্গে নিয়মিত খুব একটা আলাপ করেন না দম্পতিরা। এতে না চাইতেই একে অপরের অনুভূতিগুলো থেকে দূরে সরে যেতে থাকেন তাঁরা। ব্যাপারটি নিয়ে মজা করে অনেকে বলেন, তাঁরা আর স্বামী-স্ত্রী নেই; বরং রুমমেট হয়ে গেছেন। শুনতে হাস্যকর শোনালেও চিন্তার বিষয়।

স্বামী-স্ত্রীরা সাধারণত একে অপরকে যেসব প্রশ্ন করে থাকেন, তা হলো ঘুম কেমন হলো? কী খাবে? দিন কেমন গেল? কখন পৌঁছাবে? ইত্যাদি। এগুলো মৌলিক প্রশ্ন জানান, লেখিকা মারকিয়াস ক্লার্ক।

দুই সন্তানের জননী আমেরিকান এই নারী জীবনযাপনসংক্রান্ত নানা বিষয়ে নিজের অভিজ্ঞতার কথা নিয়মিত লিখেন। তিনি বলেন, ‘আমি ও আমার স্বামী চেষ্টা করি একে অপরকে নিজেদের অনুভূতিগুলো জানাতে। তবুও কেভিন (ক্লার্কের স্বামী) যখন একদিন জিজ্ঞাসা করল, স্বামী হিসেবে কীভাবে আরও ভালো হতে পারি? সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিতে পারিনি।

কয়েক মিনিট সময় চাইলাম। তবুও কোনো উত্তর ভাবতে পারলাম না। শুধু মনে হলো এই যে আমাকে এতটা ভাবাল, এই প্রশ্ন অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। ভাবতে ভাবতেই আমার মাথায় আরেকটি চিন্তা ঘুরপাক খেতে লাগল। আমারও তো এমনি গভীর কোনো প্রশ্ন করা উচিত, যা তাকে একটু হলেও আমাদের সম্পর্ক নিয়ে ভাবাবে।’

সেই ভাবনা থেকেই ক্লার্ক আবিষ্কার করেছেন প্রতিদিনই স্বামীকে জিজ্ঞাস করা যায়, এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। ক্লার্ক বলেন, ‘আমি প্রতিদিনই আমার স্বামীর জন্য নানান প্রার্থনা করি। কিন্তু তার জন্য আমি আসলে কী প্রার্থনা করতে পারি, সেটা তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়নি কখনো। তার কোনো নির্দিষ্ট প্রার্থনার অনুরোধও তো থাকতে পারে। তাই জিজ্ঞাসা করেই ফেললাম, সৃষ্টিকর্তার কাছে আমি তোমার জন্য কী প্রার্থনা করব? এরপর এক অসাধারণ ব্যাপার ঘটল। আমরা অনেকক্ষণ এই বিষয় থেকে নানা বিষয়ে কথা বললাম। একবার তো মনে হলো, যেন ঈশ্বর নিজেই চাচ্ছিলেন আমরা একে অপরের নানান ইচ্ছা-অনিচ্ছা, চাওয়া-পাওয়া নিয়ে খোলাখুলি কথা বলি।’

আসলে স্বামী–স্ত্রীর সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমরা মনে করি একে অপরের সবই জানি। তবে সত্যি বলতে, নিয়মিত মন খুলে কথা না বললে অনেক কথাই না বলা থেকে যায়। সঙ্গীর চাওয়া-পাওয়ার বিষয়গুলো জানার পর থেকে মারকিয়াস ক্লার্কের প্রার্থনার ধরনটাই পাল্টে গিয়েছিল।

অতএব সঙ্গীর জন্য কী প্রার্থনা করবেন, এই প্রশ্ন তাঁকেই করুন। তখন সঙ্গীর অনেক অজানা ইচ্ছা বা চাওয়ার কথা খুব সুন্দরভাবেই প্রকাশ পাবে আপনার সামনে।

সূত্র: সিম্পলি ক্লার্ক