যে সম্পর্ক ছেড়ে আপনি বেরিয়ে এসেছেন তীব্রতম তিক্ততার অনুভূতি নিয়ে, সেই সম্পর্কের ছেঁড়া সুতাটিকে আপনি আর জুড়তে চাইবেন না, এটাই স্বাভাবিক। তবে বাস্তবতা হলো, সম্পর্কের গতিবিধি কেবল এক পক্ষের ওপর নির্ভর করে না। অপর পক্ষ পুরোনো সম্পর্কে নতুন করে রং ফেরাতে চাইতেই পারেন। আবার সম্পর্ক জোড়া দেওয়ার অভিপ্রায় না থাকলেও অকারণে বিরক্ত করার প্রবণতা থাকতে পারে তাঁর মধ্যে।
প্রাক্তনের অভিপ্রায় যেটিই হোক, তাঁর এমন কর্মকাণ্ডে আপনার জীবনের গতি বাধাগ্রস্ত হতে পারে। প্রাক্তন যদি পিছু না ছাড়েন, নিজের জীবনকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য কী করতে পারেন আপনি? জেনে নিন আজ।
১. দূরত্ব বজায় রাখুন
প্রাক্তন বিরক্ত করলে তাঁকে এড়িয়ে চলুন। চেষ্টা করুন, যাতে বেশ লম্বা একটা সময় তাঁর সঙ্গে আপনার যাতে দেখা না হয়। যদি আপনার পরিচিত পরিমণ্ডলে এমন মানুষেরা থাকেন, যাঁদের সঙ্গে আপনার প্রাক্তনও জড়িত, তাহলে বেশ কয়েক দিনের জন্য তাঁদের সঙ্গে কোথাও যাওয়া থেকে বিরত থাকুন। প্রাক্তন একই বন্ধুমহলের সদস্য হলে আপনি সেই বন্ধুমহল থেকে বিরতি নিন। তাঁকে নিয়ে আলাপ, আলোচনা, সমালোচনা বাদ দিন। আপনি এবং আপনার প্রাক্তন দুজনে একই অফিসে কাজ করেন, তাহলে কিছুদিনের জন্য আপনি ছুটি নিতে পারেন। সম্ভব হলে একই অফিসের অন্য কোনো শাখায় স্থানান্তরিত হোন। বা সুযোগ থাকলে চাকরি বদলান। মোদ্দাকথা হলো, প্রাক্তনের সঙ্গে যাতে দেখা না হয়, সেটি নিশ্চিত করুন। দূরত্ব বজায় রাখা জরুরি।
২. দৃঢ়ভাবে কথা বলুন
দূরত্ব বজায় রাখার সব চেষ্টা সব সময় কাজে না-ও আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে কথা বলার মাধ্যমে তাঁকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করতে পারেন। প্রাক্তনের সঙ্গে কথা বলার সময় দৃঢ় থাকুন। তিনি আপনাকে মধুর সময়ের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে পারেন, আপনাকে ছাড়া তাঁর কতটা কষ্ট হচ্ছে, সেই ‘বয়ান’ শোনাতে পারেন, আগের ভুলের জন্য অনুতাপ দেখাতে পারেন। আবার তিনি আপনাকে দোষারোপও করতে পারেন। আপনার মধ্যে অপরাধবোধ সৃষ্টির চেষ্টা করতে পারেন। আত্মহত্যার হুমকি দিতে পারেন। তিনি যা কিছুই বলতে চেষ্টা করুন না কেন, আপনি এই ‘ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইলিং’-এর ফাঁদে পা দেবেন না। বরং দৃঢ়ভাবে তাঁকে জানিয়ে দিন, সব শেষ হয়ে গেছে। আপনি সেই পর্ব পেরিয়ে এসেছেন। মানুষটি আপনার জীবনে কেবলই অতীত।
৩. তবে সব সময় সাড়া দেবেন না
প্রাক্তন ফোন করলেই সব সময় ফোন ধরবেন না, বার্তা পাঠালেই উত্তর দেবেন না। নীরবতাও অনেক সময় সঠিক বার্তাটি পৌঁছে দেয়। আপনি যে আর তাঁর ব্যাপারে ইতিবাচক নন, আপনার নীরবতা সেই বার্তাই দেবে।
৪. জানিয়ে দিন, আপনার জীবনে অন্য কেউ এসে গেছে
আপনি যদি ইতিমধ্যে আরেকটা সম্পর্কে জড়ান, এটি প্রাক্তনকে জানিয়ে দিতে পারেন। তিনি যদি আপনাকে তাঁর জীবনে ফেরত পাওয়ার জন্য আপনার পিছু নিয়ে থাকেন, তাহলে সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে যে এ কথা জানলে তিনি নিজেকে গুটিয়ে নেবেন। তবে কে আপনার নতুন সঙ্গী হতে যাচ্ছেন, তা নিয়ে বিস্তারিত আলাপ করার প্রয়োজন নেই। প্রাক্তন প্রতিশোধপরায়ণ হলে কিন্তু নতুন সম্পর্কের পথে বাঁধা হয়েও দাঁড়াতে পারেন।
৫. ডিজিটাল দুনিয়াতেও এড়িয়ে চলুন
সব সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, হোয়াটসঅ্যাপ, মেসেঞ্জার বা ডেটিং অ্যাপ থেকে প্রাক্তনকে ব্লক বা ডিলিট করে দিন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনি কী ‘পোস্ট’ করছেন, আপনার প্রাক্তন যাতে দেখতে না পান, সেটি নিশ্চিত করুন।
৬. প্রয়োজনে আইনি সহায়তা নিন
সব রকম চেষ্টার পরও যদি আপনার প্রাক্তন আপনার পিছু না ছাড়েন এবং আপনার জীবনটাকে দুর্বিষহ করে তোলেন, তাহলে আপনার আইনি সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে। পরিস্থিতি তেমন পর্যায়ে চলে গেলে এ ছাড়া আসলে আর কোনো উপায় নেই।
সূত্র: ফেমিনা