সম্পর্কে চড়াই-উতরাই থাকে। চাওয়া-পাওয়ার অঙ্ক না মিললে উষ্ণ আনন্দময় সম্পর্কও হয়ে ওঠে তিক্ত, বিস্বাদ। সম্পর্কের মিঠে সেই স্বাদ ফিরিয়ে আনতে সবচেয়ে বেশি দরকার দুই পক্ষের চেষ্টা ও সদিচ্ছা। প্রয়োজন একে অপরের প্রতি বিশ্বাসের দৃঢ়তা, সম্পর্কটাকে সুন্দর করার মানসিকতা আর ভবিষ্যতে যেন কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তার জন্য যত দূর সম্ভব নিজেদের মধ্যে কথা বলা, পরস্পরকে বোঝার চেষ্টা করা। সুন্দর সম্পর্কের জন্য আর কী করতে পারেন, চলুন দেখে নিই—
সততার সঙ্গে প্রকাশ করুন
সম্পর্ক স্বচ্ছ রাখতে একে অপরের কাছে সততার সঙ্গে নিজেকে প্রকাশ করুন। এতে সঙ্গীর জন্য সম্পর্কের জায়গাটা নিরাপদ হয়, যেখানে নিজেকে ইচ্ছেমতো প্রকাশ করলেও কলহের ভয় থাকে না। এতে সম্পর্কও স্বস্তিদায়ক হয়।
মন দিয়ে কথা শুনুন
অনেক সময় দেখা যায়, নিজেদের কথাগুলো আমরা ঠিকমতো মন দিয়ে না শুনেই একটা আলটপকা মন্তব্য করে বসি, যা সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। আপনার সঙ্গী যখন কথা বলেন, তখন তাঁর কথা মন দিয়ে শুনুন। যদি কোনো কথা বুঝতে ভুল হয়েছে বলে মনে হয়, তাঁর সঙ্গে আবার আলোচনা করুন কিংবা জিজ্ঞাসা করুন আপনি যা বুঝেছেন, আপনার সঙ্গীও সেটিই বলতে চেয়েছেন কি না। ভুল–বোঝাবুঝি এড়াতে একই কথা বারবার আলোচনা করলে সম্পর্কের অবনতি হওয়ার ভয় কম থাকে।
সহমর্মী হওয়া
আমরা অনেক সময় একে অপরের অনুভূতিগুলো বুঝতে চাই না। সম্পর্ক সুন্দর রাখতে আপনার সঙ্গীর অনুভূতিগুলো বোঝার চেষ্টা করুন। সেগুলো হয়তো আপনার মতামতের সঙ্গে অনেক সময় নাও মিলতে পারে। তাঁর অবস্থানে নিজেকে কল্পনা করে একই পরিস্থিতির স্বীকার হলে আপনার কী রকম অনুভূতি হতো, বিচার করুন। তাঁর অনুভূতির সঙ্গে সহমর্মিতা দেখালে অনেক বড় সমস্যাও সহজে সমাধান করতে পারবেন। দুজন মানুষের সব মতামত মিলবে না, এটাই স্বাভাবিক। এ রকম ক্ষেত্রে একে অপরের মতামত মেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন।
ক্ষমা চান, গ্রহণ করুন
যদি কোনো ভুল করে ফেলেন, আন্তরিকভাবে ক্ষমা চান। একইভাবে অপরজন যদি কোনো ভুল করে ক্ষমা চায়, ক্ষমা করে দিন। একই ঘটনা নিয়ে বারবার ঝগড়া করলে কিংবা রাগ পুষে রাখলে দিন দিন সম্পর্কের অবনতি হতে থাকে।
চাওয়া-পাওয়ার সীমানা
সম্পর্কে একে অপরকে কতটুকু অধিকার দেবেন, যেসব বিষয়ে কলহ হওয়ার আশঙ্কা থাকে, সেগুলোয় কতটুকু মানিয়ে নিতে পারবেন এবং একে অপরের কাছে কী প্রত্যাশা করছেন, তা আলোচনা করে ঠিক করুন। এতে ভবিষ্যতে ভুল–বোঝাবুঝি কম হবে।
ভুলগুলো চিহ্নিত করুন
সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হলে নিজের ভুলগুলোকেও স্বীকার করে কী কী পরিবর্তন আনা যেতে পারে, তা নিয়ে সময় নিয়ে চিন্তাভাবনা করুন। যেসব দিকে আপনি ছাড় দিতে পারবেন, সেগুলো ছাড়াও যেগুলোয় ছাড় দিতে চান না, সেগুলোয় ছাড় দেওয়ার মানসিকতা তৈরি করুন।
সময় কাটান
একে অপরের সঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন কিছু সময় কাটান। দুজনই আনন্দ পান, এমন কিছু করুন। সুন্দর অভিজ্ঞতা আর স্মৃতি সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটায়।
ধৈর্য ধরুন
সম্পর্কে চিড় ধরলে রাতারাতি ঠিক হবে না। সঙ্গীকে যথেষ্ট সময় ও সুযোগ দিন। সম্পর্কের উন্নয়নে ক্রমাগত চেষ্টা করুন। তাৎক্ষণিক উন্নতির আশা না করে ধৈর্য ধরে ধীরে ধীরে নিয়মিতভাবে চেষ্টা করলে ইতিবাচক পরিবর্তন আসতে পারে।
সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস