একটি সুখী পরিবার গড়ে তোলার জন্য শ্বশুর-শাশুড়ির মনে আপনার সম্পর্কে ভালো ধারণা তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ। কিছু ছোট উদ্যোগ তাঁদের সঙ্গে আপনার বন্ধনকে আরও শক্তিশালী এবং ইতিবাচক করে তুলতে সাহায্য করবে। শ্বশুর-শাশুড়ির মন জয় করার আট কার্যকর কৌশলের তালিকা দেওয়া হলো।
১. পারিবারিক ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ভাগাভাগি করে নিন
শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে আপনার পারিবারিক ঐতিহ্য ও রীতি-রেওয়াজ ভাগাভাগি করে নেওয়ার মাধ্যমে আপনাদের ভেতরকার দূরত্ব অনেকটাই কমে আসে। সেই সঙ্গে তাঁদের পারিবারিক ঐতিহ্য ও রীতিনীতি শেখার ক্ষেত্রেও আপনাকে আন্তরিক হতে হবে।
২. খাপ খাইয়ে নিতে চেষ্টা করুন
নিজের ‘কমফোর্ট জোন’ থেকে বেরিয়ে স্বতঃস্ফূর্তভাবেই নতুন কিছু করার চেষ্টা করলে, অচেনা পরিস্থিতিতে খাপ খাইয়ে নিতে উদ্যোগী হলে শ্বশুরবাড়ির মানুষদের সেটা চোখে পড়বেই। কাজগুলো হতে পারে খুব ছোট ছোট। যেমন আপনি হয়তোবা কোনো একটা মাছ এমনিতে খান না, কিন্তু আপনার শ্বশুরবাড়িতে সেই মাছ সবাই খুব পছন্দ করেন। আপনি তাঁদের সঙ্গে বসে ওই মাছ অল্প একটু খেয়ে দেখলেন। চেষ্টা করতে তো আর কোন অসুবিধা নেই!
৩. যোগাযোগ রাখুন
আপনার শ্বশুর-শাশুড়ি যদি আপনাদের সঙ্গে বসবাস না করেন, তাহলে তাঁদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখুন। সপ্তাহে দু-এক দিন হোয়াটসঅ্যাপে ফোন করে টুকটাক গল্প হতেই পারে। এতে আপনাদের সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। ঘরে বাবু থাকলে বা নতুন কিছু কেনাকাটা করলে অথবা ঘর সাজালে ভিডিও কল দিয়ে দেখান। একই শহরে থাকলে সময় বের করে তাঁদের সঙ্গে দেখা করুন। তাঁদের কথা মন দিয়ে শুনুন। মনে রাখবেন, আপনার তুলনায় এই মানুষগুলোর অবসর বেশি। তাই আপনি যখন কাজের ফাঁকে সময় নিয়ে তাঁদের কথা শুনবেন, সেটা আপনাকে তাঁদের হৃদয়ে ঠাঁই দিতে সাহায্য করবে।
৪. ভিন্ন মতামতকে শ্রদ্ধা করুন
শ্বশুর-শাশুড়ির মতামত, মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গিকে সম্মান করলে আপনার সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে। আপনি যদি তাঁদের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত পোষণ না-ও করেন, তবু তাঁদের কথা মন দিয়ে শুনুন। তর্ক না করে আপনার মতামত প্রকাশ করুন।
৫. তাঁদের ভূমিকাকে মূল্যায়ন করুন
ছোট ছোট কাজের মাধ্যমে শ্বশুর-শাশুড়ির প্রতি আপনার কৃতজ্ঞতা, সহানুভূতি, মমত্ববোধ প্রকাশ করতে পারেন। সেটা হতে পারে তাদের একটু আলিঙ্গন, তাঁদের সাহায্য বা ভূমিকার জন্য ‘ধন্যবাদ’ জানানো বা তাঁদের ছোটখাটো কাজে সাহায্য করা ইত্যাদি।
৬. গল্প করুন
ব্যক্তিগত গল্প, ছোট ছোট ঘটনা, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিলে তাঁরা আপনার সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে পারবেন। আপনার সম্পর্কে আরও গভীর ধারণা লাভ করবেন। এতে আপনার সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক আরও ভালো হবে।
৭. একসঙ্গে ঘুরে বেড়ান, উপহার দিন
যখন আপনি শ্বশুর-শাশুড়ির সঙ্গে গল্প করবেন, তাঁদের কথা মন দিয়ে শুনুন। তাঁদের অর্জন, প্রিয় খাবার, শখ, তাঁরা কী কী করতে পছন্দ করেন, এসব মনে রেখে ভবিষ্যতে সেই অনুযায়ী ছোট ছোট উদ্যোগ নিতে পারেন। সবাই মিলে একসঙ্গে কাছে কোথাও থেকে ঘুরে আসুন। সুন্দর স্মৃতি তৈরির জন্য ঘুরে বেড়ানোর বিকল্প নেই। শ্বশুর-শাশুড়িকে তাঁদের প্রয়োজন অনুসারে, পছন্দমতো উপহার দিন।
৮. আপনার সঙ্গী বা সঙ্গিনীকে সুখে রাখুন
সঙ্গী বা সঙ্গিনীর প্রতি ভালোবাসা, প্রশংসা ও সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করলে, সব সময় তাঁর পাশে থাকলে আপনার শ্বশুর-শাশুড়ি এমনিতেই আপনার প্রতি সন্তুষ্ট থাকবেন। তাঁদের সন্তান সুখে থাকাই তাঁদের কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া