দশ মিনিটের আয়োজনে গভীর রাতে মৌয়ের গায়েহলুদ, বিয়ের কেনাকাটা করতে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েছিলেন বর

জীবনে বিয়েই করবেন না—এমনটাই সংকল্প করেছিলেন। তবে প্রেমিকের ভালোবাসার কাছে হার মেনেছে সেই পরিকল্পনা। সঙ্গে আর দশটা বাঙালি মেয়ের পরিবারের মতো বিয়ে করতে পরিবারিক চাপ তো ছিলই।


উপস্থাপক ও অভিনেত্রী মৌসুমী মৌয়ের বিয়ের খবরটা তো আগেই জেনেছেন। বর শিক্ষক ও প্রকৌশলী আরিফ হককে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এক সপ্তাহে। দশ মিনিটের আয়োজনে হয়েছিল গায়েহলুদ। আর বিয়ের কেনাকাটা করতে গিয়ে তো গয়নার দোকানে ঘুমিয়েই পড়েছিলেন বর। মৌয়ের গায়েহলুদ আর বিয়ের ছবি দেখতে দেখতে জেনে নেওয়া যাক এমন সব মজার গল্প।

মৌ দেশের জনপ্রিয় উপস্থাপক। উপস্থাপনার বাইরে অভিনয় দিয়েও নজর কেড়েছেন তিনি। জীবনসঙ্গী আরিফ আরিফ হককে বিয়ে করেছেন অল্প সময়ের চেনাজানায়। কবে বিয়ে করেছেন জানাতে চাননি মৌ
বিয়ের আগের দিন হয়েছে গায়েহলুদ
সেদিনও অনুষ্ঠান সঞ্চালনা শেষে রাত ১২টায় বাসায় ফিরেছিলেন। তারপর একেবারেই তাৎক্ষণিক আয়োজনে ঘরেই সেরেছেন গায়েহলুদের আনুষ্ঠানিকতা
মৌ বলেন, ‘আমার কলেজের বান্ধবী অর্থি বলল, গায়েহলুদ তো হতেই হবে। সে একটা হলুদ জামদানি পাঠিয়ে দিয়েছিল।’
গায়েহলুদের আয়োজনে মৌদের বাসায় হাজির হয়েছিলেন মৌয়ের দুই সহকর্মী প্রমি আর অর্চি। গভীর রাতে এসেছিলেন আরেক সহকর্মী শ্রাবণ্য তৌহিদা। ময়মনসিংহ থেকে এসেছিলেন মৌয়ের মেজ খালা
শাড়ি তো উপহার পেয়েছিলেন, তবে মিলিয়ে ছিল না ব্লাউজ–পেটিকোট। পুরোনো একটা প্রিন্টের হলুদ রঙের ঘটি হাতার ব্লাউজ দিয়েই পরেছিলেন শাড়ি। শোয়ের মেকআপেই ফুলের গয়না পরে দশ মিনিটে তৈরি হয়ে গিয়েছিলেন। এরপর হলুদ নিয়ে এল বর
বাসার ছাদে মৌ ও আরিফ
নব দম্পতি আরিফ ও মৌ
বিয়ের কেনাকাটাও সেরেছেন কয়েক ঘণ্টায়। কেনাকাটা বলতে লাল বেনারসি, ওড়না আর ইমিটেশনের গয়না। মৌয়ের ভাষায়, ‘জুতা বা ব্যাগও কেনার সময় পাইনি। এত হুলুস্থুল করে বিয়েটা সেরেছি।’
বিয়ের কেনাকাটার মজার এক গল্প বললেন ছোট পর্দার এই চেনা মুখ। তাঁর কাছ থেকেই শোনা যাক, ‘গয়না কোনটা বেশি ভালো মানাবে, জিজ্ঞেস করতে গিয়ে দেখি, দোকানে বসেই ঘুমিয়ে পড়েছে আরিফ। রাগ হলো, আবার মায়াও হলো। ভাবলাম, এত ক্লান্ত যখন, ঘুমাক। ১৫ মিনিট ওকে ঘুমাতে দিলাম। তারপর ডেকে তুললাম। আসলে দুজনের তুমুল ব্যস্ততার মধ্যেই হয়েছে বিয়ের আয়োজন।’
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সময় থেকেই মূকাভিনয় করে নাম কুড়ান মৌ। মিডিয়ায় কাজ করছেন এক দশক
মৌয়ের জীবনসঙ্গী আরিফ হোসেন বর্তমানে শিখো টেকনোলজিস, বাংলাদেশে হেড অব অ্যাডমিশনস হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বুয়েট থেকে নেভাল আর্কিটেকচার অ্যান্ড মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা করেছেন
ঘরের ভেতরেই চলেছে ফটোশুট। তবে ছিলেন না কোনো পেশাদার আলোকচিত্রী
বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন বিনোদন অঙ্গনের কয়েকজন
বাড়ির ছাদেও চলেছে ফটোসেশন
শ্বশুরবাড়ি মাছ নিয়ে উপস্থিত নতুন বর
ছবিতে মৌ ও আরিফের মাঝখানে আরেক উপস্থাপক শ্রাবণ্য তৌহিদা
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে লাল শাড়ি খুলে করপোরেট লুকে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় ছুটে গেছেন মৌ, অনুষ্ঠান উপস্থাপনায়। মৌ বলেন, ‘বিয়েটা তো হুট করে হয়েছে। ওই দিনই আমার গুরুত্বপূর্ণ একটা অনুষ্ঠান ছিল। বিদেশি ক্লায়েন্ট। বিকেল চারটায় অনুষ্ঠান। আমি বেলা তিনটায় পৌঁছে গেছি। আমার সদ্য বিবাহিত বরকে নিয়ে। রাত একটায় সেখান থেকে বাসায় ফিরেছি। এ–ই হলো বিয়ের দিন।’
বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ঘরের ভেতরে, ছাদে চলেছে ফটোসেশন
বিয়ের পর সেই রাতে মৌ আর তাঁর জীবনসঙ্গী ছিলেন রাজধানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে। বাসা থেকে এই দুজনকে হোটেলে পৌঁছে দেন মৌয়ের মেকআপ আর্টিস্ট মুমিনুল ইসলাম ও সহকর্মী নীল হুরে-এ জাহান
সবাইকে নিয়ে ঘটা করে বিবাহপরবর্তী সংবর্ধনার পরিকল্পনার আছে এই জুটির। তবে সেটা কবে হবে, এখনই বলতে পারছেন না
এই মুহূর্তে দুজনই পেশাগত কাজে ভীষণ ব্যস্ত। কাজগুলো গুছিয়ে তারপর হানিমুনে যাবেন
মৌসুমি মৌ তাঁর এই সব আয়োজন উপলক্ষে বিশেষ ধন্যবাদ জানান তাঁর ম্যানেজার সাজ্জাদুর রহমান ও মেকআপ আর্টিস্ট মুমিনুল ইসলামকে। মৌ বলেন, ‘সাজ্জাদ ভাই আমার বড় ভাইয়ের মতোই দায়িত্ব পালন করেছেন। আর পেশাগত সব কাজের মতো বিয়ে আর গায়েহলুদেও মুমিন ভাই–ই আমাকে সাজিয়েছেন।’