জীবনে সুখে থাকার জন্য পারিবারিক ও সামাজিকভাবে ভালো থাকার কোনো বিকল্প নেই। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৫ বছর ধরে চলমান গবেষণার ফল প্রকাশিত হয়েছে সম্প্রতি। সেখান থেকে জানা যায়, পেশাগত সফলতা বা টাকাপয়সা নয়, বরং সম্পর্ক মানুষের সুখী হওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়ামক। আর এ কারণে ব্যক্তিগত, পারিবারিক আর সামাজিক সম্পর্কগুলো মজবুত রাখা খুবই জরুরি। ভুল ও টক্সিক মানুষকে দূর করে সঠিক মানুষদের নিজের আশপাশে রাখা, তাঁদের সঙ্গে সম্পর্কের বন্ধন দৃঢ় রাখা সামাজিক ফিটনেসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এখন প্রশ্ন হলো, আপনার জন্য সঠিক মানুষ আর ভুল মানুষ চিনবেন কী করে? কোন মানুষ আপনার সামাজিক ফিটনেসের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, সেটা যাচাই করে নিন নিচের প্রশ্নগুলো করে।
১. কোনো বিপদে পড়লে সাহায্যের জন্য কাদের কথা আপনার মাথায় আসে? কে বা কারা বিপদে পাশে থাকেন?
২. কারা আপনাকে সব সময়ই নতুন কিছু শেখার জন্য উৎসাহ দেন? আপনার আনন্দে আনন্দিত হন?
৩. যখন আপনার খুব মন খারাপ থাকে, তখন আপনি কার কাছে অকপটে সেই মন খারাপের কথা বলতে পারেন? আপনার জীবনের সুখবর আপনি সবার আগে কার সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিতে চান?
৪. আপনার সঙ্গে কে নিজের জীবনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এবং আপনার নিজেকে চিনতে সাহায্য করেন?
৫. প্রেম বা অন্তরঙ্গ সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ মানুষ কে? আপনি কি তাঁর সঙ্গে সুখী আর নিরাপদ বোধ করেন?
৬. ছোট ছোট কাজে যখন সাহায্যের প্রয়োজন হয়, তখন কারা সবার আগে আপনার জন্য এগিয়ে আসেন?
৭. কারা আপনাকে হাসিখুশি রাখতে পারে? ভীষণ মন খারাপের দিনেও কারা আপনার সঙ্গে আড্ডা দিয়ে বা ঘুরতে নিয়ে গিয়ে আপনার মন ভালো করে দেন?
৮. প্রয়োজনে কার কাছে অকপটে টাকা চাইতে পারেন?
৯. আপনি অসুস্থ হলে কে আপনার দেখাশুনা করেন?
১০. আপনি কার সঙ্গে হাঁটতে বের হন? কে আপনাকে শারীরিকভাবে ফিট থাকতে অনুপ্রাণিত করেন? কে আপনাকে স্বাস্থ্যকর খাবার বানিয়ে খাওয়ায় বা খেতে বলেন?
এই প্রশ্নগুলোর উত্তরে যে নামগুলো আসবে, তাঁরা আপনার আপনজন। এই প্রশ্নগুলোর উত্তরের ওপর ভিত্তি করে আপনি নিজের সামাজিক ফিটনেসের বলয় গড়ে তুলুন। নিজের জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে নিজের সম্পর্ক নতুন করে ঝালিয়ে নিন।
একাকিত্ব আর বিচ্ছিন্নতার এই যুগে ‘একা বেঁচে থাকতে শেখো প্রিয়’ একটা জনপ্রিয় স্লোগান। মানুষ হিসেবে আমরা একা বেঁচে থাকতে পারব, নিজেকে ব্যস্ত রেখে জীবন কাটিয়ে ফেলতে পারব, তবে সুখে থাকাটা কঠিন হবে, বড্ড কঠিন। সুখে থাকতে হলে আমাদের অবশ্যই কাছের মানুষদের নিয়েই বেঁচে থাকতে হবে। এগিয়ে যেতে হবে পারিবারিক আর সামাজিকভাবে।
তথ্যসূত্র: সিএনবিসি