সংসার সুখের হয় এই ৫ গুণে

যা কিছুই ঘটে যাক না কেন, আপনার সঙ্গীকে বুঝিয়ে দিন, আপনি তাঁর পাশেই আছেন
মডেল: সারিকা সাবা ও তামিম মৃধা, ছবি: প্রথম আলো

সংসারের সুখ নির্ভর করে নারী–পুরুষ দুজনের গুণে। দুজনকেই এ ক্ষেত্রে আন্তরিক হতে হবে। ছাড় দেওয়ার মানসিকতা আর কিছু অভ্যাসে সম্পর্কের ভিত মজবুত হবে। আর সুখের সংসারের প্রথম পূর্বশর্ত হলো নিজেদের সম্পর্কের ভিত্তি শক্তিশালী করা।
‘সামান্য’ কারণে প্রেমের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার মতো ঘটনা আজকাল প্রায়ই ঘটতে দেখা যায়। আবার সম্পর্ক টিকে থাকলেও তা তিক্ত হয়ে ওঠে। বিয়ের পরেও নানা কারণে সৃষ্টি হয় তিক্ততা। এই তিক্ততা বিবাহবিচ্ছেদ অবধিও গড়াতে পারে। তবে যাঁরা যুগের পর যুগ একসঙ্গে পথ চলেন, তাঁরা কী করে একে অন্যের প্রতি ভালোবাসার মিষ্টি অনুভূতি ধরে রাখতে পারেন? কীভাবে সম্পর্কের ভিত মজবুত হয়ে ওঠে?
এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে দেখা গেল, সম্পর্কের রসায়ন বেশ জটিল হলেও এর ভিত মজবুত হয় নিতান্তই সাদামাটা কিছু অভ্যাসে। এমন পাঁচ অভ্যাসের বিষয়ে জেনে নিন আজ।

১. সঙ্গীকে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা না করা

কাউকে কাউকে সঙ্গীকে নিজের ইচ্ছেমতো চলতে জোর করতে, বাধ্য করতে দেখা যায়। এ এক মস্ত ভুল। প্রত্যেকেরই নিজস্বতা রয়েছে। ব্যক্তিস্বাধীনতা রয়েছে। এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করা যাবে না। প্রত্যেককেই নিজের মতো থাকতে দিতে হবে। নিজের ইচ্ছার গুরুত্ব দিতে গিয়ে সঙ্গীর ইচ্ছাকে গুরুত্বহীন করে ফেলা যাবে না। তিনি যেমন মানুষ, তাঁকে তেমনভাবেই গ্রহণ করুন। বদলাতে যাবেন না। সঙ্গীর বন্ধুমহলে অনুপ্রবেশ করা একেবারেই অনুচিত।

২. হেরেই বরং জিতুন

‘বিনা যুদ্ধে নাহি দিব সূচ্যগ্র মেদিনী’—এই প্রবণতাকে নিজের মনে জায়গা দেওয়া যাবে না। কে কতটুকু করল, এই হিসাবনিকাশের ঘেরাটোপে আটকা পড়বেন না। ‘সমান–সমান’ বলে সম্পর্কে কিছু হয় না। কোথাও আপনি বেশি দেবেন, কোথাও সে বেশি দেবে। আপনিই না হয় বেশি দেবার মানসিকতা রাখুন। সম্পর্কের ভিত মজবুত করতে আপনাকে ছাড় দিতেই হবে। ‘ও কেন আমার দিকটা বুঝতে পারছে না’ কিংবা ‘ও কেন আমার রাগ ভাঙানোর চেষ্টা করছে না’–জাতীয় ভাবনাকে দূরে সরিয়ে রাখুন। যাঁকে ভালোবাসেন, তাঁর জন্য ছাড় দেয়ার মানসিকতা গড়ে তুলুন। ‘জাজমেন্টাল’ হবেন না। সঙ্গী কষ্টে আছেন কি না, বোঝার চেষ্টা করুন। অভিমান, ‘ইগো’ মাঝে এসে দাঁড়ালে আপনিই না হয় ‘হার’ স্বীকার করুন। এভাবে ‘হেরে’ যেতে পারলে শেষ পর্যন্ত জিতবে আপনার ভালোবাসাই।

৩. বিপদে বন্ধু হয়ে থাকুন

যা কিছুই ঘটে যাক না কেন, আপনার সঙ্গীকে বুঝিয়ে দিন, আপনি তাঁর পাশেই আছেন। কে কী বলল, সেসবকে গুরুত্ব দেবেন না। বিশ্বাস রাখুন নিজের সঙ্গীর প্রতি। বিপদে-আপদে যোগ্য সঙ্গীর মতো আচরণ করুন। সঙ্গীর প্রয়োজনগুলো বুঝতে চেষ্টা করুন। একে অন্যের পরিপূরক হয়ে উঠুন, প্রতিযোগী নয়।

নীরবতা ভেঙে আপনিই না হয় আগে ‘সরি’ বলুন

৪. সময় দিন

কথা বলুন সঙ্গীর সঙ্গে। কাজের ফাঁকে সময় রাখুন তাঁর জন্য। তাঁর সঙ্গে সময় কাটানোর সময় মুঠোফোনের পর্দায় চোখ রাখবেন না। গুরুত্ব দিয়ে তাঁর কথা শুনুন। মন খুলে নিজের কথা বলুন। একসঙ্গে সময় কাটাতে এমন কোনো শখের কাজ করতে পারেন, যে শখ দুজনেরই আছে।

৫. ‘সরি’, ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ বলার অভ্যাস করুন

সঙ্গীর প্রতি কৃতজ্ঞ আচরণ করুন। ভুলভ্রান্তি মিলিয়েই তো মানুষ। কখনোই খোঁটা দিয়ে কথা বলবেন না। দুর্বল জায়গায় আঘাত করবেন না। ছোট্ট একটা ‘সরি’ বা ‘থ্যাঙ্ক ইউ’ অনেক সময় সম্পর্কের অনেক জটিল সমস্যার সমাধান করে ফেলার ক্ষমতা রাখে। নীরবতা ভেঙে আপনিই না হয় আগে ‘সরি’ বলুন। রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করুন। চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলবেন না। অতীত ঘাঁটতে যাবেন না। বর্তমানে থাকুন। ভবিষ্যতের দিকে তাকান। কখনোই সঙ্গীর মা-বাবা বা বন্ধুদের নিয়ে কটুক্তি করবেন না। নিজের সঙ্গীর সঙ্গে অন্য কারো সঙ্গীর প্রতিযোগিতামূলক তুলনা করবেন না। পারস্পরিক সম্মানবোধ বজায় রাখলে সম্পর্কে সহজে ফাটল ধরে না।


সূত্র: রিডার্স ডাইজেস্ট