কাছের মানুষটি বিষণ্নতায় ভুগছেন কি না, কী করে বুঝবেন

আপনার সঙ্গী বা কাছের মানুষটি বিষণ্নতায় ভুগছেন কি না, বোঝার চেষ্টা করুন
ছবি: কবির হোসেন

যেকোনো সময় যে কারও হতে পারে বিষণ্নতা। সাধারণ মন খারাপ থেকে বিষণ্নতার ধরন অনেকটা ভিন্ন। সেটি দীর্ঘদিন থাকলে মানসিক রোগের পর্যায়েও পৌঁছাতে পারে। বিষণ্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তির কাছের মানুষের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি ঘটতে পারে, ভেঙে যেতে পারে বৈবাহিক সম্পর্ক। তাই আপনার সঙ্গী বা কাছের মানুষটি বিষণ্নতায় ভুগছেন কি না, বোঝার চেষ্টা করুন। সে ক্ষেত্রে আপনি নিজে সমাধানের চেষ্টা করতে পারেন বা প্রয়োজনবোধে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন।

অনেকে নিজেই বুঝতেই পারেন না যে তিনি এই মানসিক বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। কারও কারও ক্ষেত্রে বিষণ্নতার লক্ষণগুলো স্পষ্ট বোঝাও যায় না। তাই আপনার পাশের মানুষটির এই বিষয়গুলো খেয়াল করলেই বুঝতে পারবেন যে তিনি বিষণ্নতায় ভুগছেন কি না?

দীর্ঘমেয়াদি মন খারাপ

যদি খেয়াল করেন, আপনার সঙ্গী বেশির ভাগ সময় মন খারাপ করে থাকেন এবং তা থেকে বেরিয়ে আসতে পারছেন না; তবে এটি বিষণ্নতার একটি বড় উপসর্গ। অনেক সময় তাঁরা জীবনের সাধারণ বিষয়গুলোর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন। ভবিষ্যৎ ও জীবনকে অর্থহীন ভাবতে শুরু করেন।

শখের কাজেও অনীহা

আগে যে কাজগুলো করে আপনার সঙ্গী আনন্দ পেতেন, এখন আর সেসব তাঁকে টানে না। যে মানুষটি গান-কবিতা করতে, ছবি আঁকতে ভালোবাসতেন বা ঘুরতে যেতে ভীষণ পছন্দ করতেন, এখন এসবের প্রতি তাঁর আগ্রহ আশঙ্কাজনকভাবে কমে গেলে হতে পারে তিনি বিষণ্নতায় ভুগছেন।

ঘুমের ব্যাঘাত

বিষণ্নতার আরেকটি লক্ষণ হতে পারে ঘুমের ধরনে পরিবর্তন। অনিদ্রা বা অনেক বেশি ঘুমানো, ঘুমের সময় ওলটপালট হয়ে যাওয়া, সারা রাত জেগে সারা দিন ঘুমানোও হতে পারে বিষণ্নতার একটি কারণ।

খাদ্যাভ্যাস ও ওজনের পরিবর্তন

বিষণ্নতার কারণে অনেকের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন আসতে পারে। মানসিক চাপের কারণে অনেকেরই খাবারে অরুচি আসে। ফলে তিনি খাবার কম গ্রহণ করেন। সেখান থেকে কম ওজন ও অপুষ্টিতে ভোগেন। আবার অনেকে মানসিক কষ্টকে ভুলে থাকার জন্য অস্বাস্থ্যকর খাবার খান, প্রয়োজনের বেশি খেয়ে ফেলেন। বেড়ে যায় ওজন, দেখা দেয় নানাবিধ শারীরিক অসুখ।

শারীরিক দুর্বলতা ও অবসাদ

যাঁরা বিষণ্নতায় ভোগেন, তাঁদের বেশির ভাগই শারীরিকভাবে ক্লান্তি বোধ করেন। সারা রাত ঘুমানোর পরও দিনের বেলা ঘুম ঘুম ভাব এবং অবসন্ন বোধ করেন। এ কারণে তাঁদের দৈনন্দিন কাজে দেখা দেয় অনীহা। কর্মক্ষেত্র এবং বাড়িতে তাঁদের কর্মক্ষমতা কমতে থাকে।

বিরক্ত ও উত্তেজিত হওয়া

অনেক সময় বিষণ্নতায় ভোগা ব্যক্তি খুব অল্পতেই উত্তেজিত হয়ে পড়েন। ছোট ছোট বিষয়ে রাগ প্রকাশ করেন, ধৈর্য রাখতে পারেন না। অনেক সাধারণ বিষয় নিয়েই সারাক্ষণ তিনি বিরক্তি প্রকাশ করছেন। রাগ ও উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।

অসামাজিক হয়ে পড়া

যে মানুষটি একসময় পরিবারের সঙ্গে সময় কাটাতে পছন্দ করতেন, বন্ধু-সহকর্মীদের আড্ডায় মেতে থাকতেন, তিনি আস্তে আস্তে এগুলো থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিলে হতে পারে এটি বিষণ্নতার একটি লক্ষণ। বিষণ্নতায় ভোগা ব্যক্তিরা অনেক সময়ই সামাজিক অনুষ্ঠান, জনসমাগম এড়িয়ে চলতে শুরু করেন।