পথেঘাটে কত কুকুরই তো আমরা দেখি রোজ। কেউ হয়তো হেলায় পাশ কাটিয়ে যান, কেউ আবার কাছে ডেকে আদর করে খেতে দেন বিস্কুট বা কেক। প্রিয় মানুষের জীবন বাঁচাতে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়েও ঝাঁপিয়ে পড়ে কুকুরগুলো। আর ছোটখাটো উপকার তো করেই চলে অবিরাম। ভালোবাসার মানুষকে নিয়ে ওরা কোনো ঝুঁকি নিতে রাজি নয়। কুকুর সম্পর্কে কিছু ভিন্ন রকম তথ্য জেনে নেওয়া যাক আজ।
কুকুর মানুষের প্রথম পোষা প্রাণী
কুকুর প্রায় ২৩ হাজার বছর বা তারও আগে থেকে মানুষের পোষা প্রাণী। সাইবেরিয়ায় ২৬ হাজার বছর আগে পোষা কুকুর থাকার প্রমাণ পেয়েছেন গবেষকেরা। প্লাইস্টোসিন যুগে মানুষের একমাত্র পোষা প্রাণী ছিল কুকুর।
অনেক কুকুরই ‘ডানহাতি’
হাচিকো ‘ডানহাতি’ কুকুর। সামনের ডান থাবাটি বাড়িয়ে দিয়ে প্রিয় মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। বিখ্যাত জাপানি কুকুর হাচিকোর কথা বলছি না। বলছি, বাংলাদেশের এক পথকুকুরের কথা। শুধু হাচিকোই নয়, প্রায় ১৮ হাজার কুকুরের আচরণ গবেষণা করে দেখা গিয়েছে, অর্ধেকের বেশি কুকুরই ডান থাবা এগিয়ে দেয়।
লাল আর সবুজের পার্থক্য করতে পারে না
কুকুর রঙের উপস্থিতি বুঝতে পারে, তবে লাল আর সবুজ গুলিয়ে ফেলে। মানুষের রেটিনা ও কুকুরের রেটিনার কোষগুলো আলাদা বলেই এমনটা হয়। তবে অন্ধকারে মানুষের চেয়ে অনেক বেশি দেখতে পায় এরা।
হাজারের বেশি জাত
সংখ্যাটা ঠিক কত, নিশ্চিত করে বলা মুশকিল। তবে নানান পরিসংখ্যান থেকে এমনটাই জানা যায় যে পৃথিবীতে এক হাজারের বেশি জাতের কুকুর থাকতে পারে। মিশ্রজাতের কুকুরগুলোকে হিসাবের বাইরে রাখা হয়েছে। শরীরের গঠন, লোমের ধরন, লোমের রং, কান, এমনকি আচরণের দিক থেকেও বিচিত্র হয় কুকুরগুলো। এ কারণেই পৃথিবীর সবচেয়ে বৈচিত্র্যময় স্তন্যপায়ী প্রাণীর স্বীকৃতি পেয়েছে কুকুর।
মানুষের যে সব খাবার কুকুরের জন্য নয়
কুকুরের স্বাদগ্রন্থি মানুষের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। কৃত্রিম মিষ্টিকারক উপকরণে তৈরি খাবার তেতো লাগতে পারে তাদের কাছে। এমনকি কিছু জিনিস তাদের জন্য বিষাক্তও হতে পারে। জাইলোটিল বা বারচ শ্যুগার নামের মিষ্টিকারক উপকরণ দেওয়া থাকলে কুকুর সেই খাবারের স্বাদ গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু সেটি কুকুরের লিভারের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। এমনকি এই উপকরণের কারণে কুকুরের মৃত্যুও হতে পারে। চিনিবিহীন ক্যান্ডি, চুইংগাম এবং নানা রকম ওষুধে জাইলোটিল থাকতে পারে। কুকুরদের চকলেট, পেঁয়াজ, রসুনও দেওয়া যাবে না।
সব কুকুরের নাকের ‘ছাপ’ই আলাদা
একজন মানুষের আঙুলের ছাপের সঙ্গে যেমন অন্য কারও আঙুলের ছাপ মেলে না, তেমনি এক কুকুরের নাকের ছাপের সঙ্গে অন্য কুকুরের নাকের ছাপ মেলে না। কিছু গবেষণায় পাওয়া গেছে এমনই তথ্য।
কুকুর কেন কামড়ায়? কামড়ালেই কি জলাতঙ্ক?
অনেকে কুকুর দেখলেই ভাবেন, কামড়ে দেবে। আর কামড়ালেই জলাতঙ্ক। তবে বাস্তবতা হলো, কুকুর কামড়ালেই জলাতঙ্ক হয়ে যায় না। নিতান্তই যদি কুকুর কামড়ে দেয়, তাহলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর জলাতঙ্কের টিকা নিয়ে নিলে আপনি নিরাপদ। তা ছাড়া অনেক এলাকাতেই কুকুরকে জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া হয়। কুকুরকে আঘাত না করলে বা বিরক্ত না করলে কুকুর কামড়াবে না। তাই কুকুরকে যদি আপনি না-ও ভালোবাসেন, এদের বিরক্ত করবেন না। আর শিশুদেরও বিষয়টি শিখিয়ে রাখবেন।
সূত্র: রিডারস ডাইজেস্ট