অনেকের অনেক বন্ধু থাকে। পার্টি, আড্ডা, গেট–টুগেদার ছাড়া তাঁদের চলেই না। কিছু মানুষের বন্ধুসংখ্যা আবার খুবই কম। সেই সব মানুষ আসলে কেমন? কমসংখ্যক বন্ধু থাকা মানুষের বৈশিষ্ট্য নিয়ে ব্রিটিশ জার্নাল অব সাইকোলজিতে প্রকাশিত হয়েছে একটি গবেষণাপত্র। সেখান থেকে চট করে জেনে নেওযা যাক এসব মানুষের বৈশিষ্ট্য।
বন্ধুসংখ্যা কমিয়ে খুবই অল্প কিছু মানুষের সঙ্গে জীবনের নানা অনুভূতি ভাগ করে নিতে চাওয়ার মানে হলো আপনি সংখ্যা নয়, মানের ওপর গুরুত্ব দেন। কোন সম্পর্কে বিনিয়োগ করতে হবে, আপনি তা জানেন। যে মানুষদের সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব গভীর, তাঁরা আপনার সত্যিকারের বন্ধু। তাঁদের সঙ্গে কোয়ালিটি সময় কাটানোর মধ্য দিয়ে সত্যিকারের বিশ্বস্ততা আর নির্ভরতার বন্ধন গড়ে ওঠে।
গবেষণায় দেখা গেছে, একজন মানুষ তাঁর সারা জীবনে আত্মীয়স্বজন, সঙ্গী, সন্তান, বন্ধুবান্ধব মিলিয়ে ১৫০ জনের সঙ্গে সম্পর্ক ভালোভাবে চালিয়ে নিতে পারেন। এর মধ্যে জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে যুক্ত হওয়া গভীর বন্ধুর সংখ্যা ৫। আর সেসব বন্ধুত্বের গড় বয়স ২০ বছর। যাঁদের বন্ধুসংখ্যা কম, তাঁরা এই অল্প কয়েকজন বন্ধুর সঙ্গেই তাঁদের লম্বা সময়ের সম্পর্ক বজায় রাখেন।
অল্প কিছু বন্ধু থাকার মানে আপনি নিজের সঙ্গে সময় কাটান বেশি। নিজের শক্তিশালী ও দুর্বল দিকগুলো ভালোভাবে জানেন। নিজের সঙ্গে নিজের সম্পর্ক মজবুত হয়। নিজেকে শুধরে নিয়ে প্রতিনিয়ত নিজের সেরা ভার্সন হয়ে উঠতে আপনি আগ্রহী।
অনেক বন্ধু আপনাকে সুখী করতে পারবে না। আপনাকে সুখী করতে পারবেন কেবল আপনি। অল্পসংখ্যক বন্ধু থাকা মানে তাঁরা পরীক্ষিত বন্ধু। তাঁরা আপনার অসুখী হওয়ার কারণ হবেন না। বন্ধুত্বের মুখোশ পরা অনেকে আপনার অজান্তেই মানসিক চাপ, দুশ্চিন্তা, হতাশা কেবল বাড়াচ্ছেন। গবেষণা বলছে, অল্প বন্ধু থাকলে সুখী হওয়া সহজ হয়। আর আপনার কাছে সবকিছুর ঊর্ধ্বে মানসিক শান্তি।
জীবনে সুখী হওয়ার জন্য ব্যক্তিগত জীবন আড়ালে রাখার কোনো বিকল্প নেই। কেননা, লোকে কথা বলবেই। আর সেটা আপনাকে মানসিকভাবে আহত করবে। আপনি জানেন যে সবাই আপনার মঙ্গল চান না। আপনি জনপ্রিয়তা নয়, বরং নিরিবিলিতে আপনজনদের নিয়ে একটা ভালো জীবন কাটাতে বেশি আগ্রহী।
ফ্রেন্ড সার্কেল ছোট রাখার মানে হলো, আপনি ফোকাসড, লক্ষ্যে অবিচল। আপনি ছোট ছোট লক্ষ্য ধরে আগান। আত্মোন্নয়নে আগ্রহী। বিনোদনের চেয়ে শিক্ষামূলক আধেয়ই আপনাকে বেশি আকর্ষণ করে। আপনি নিজের ব্যক্তিগত উন্নয়নের ওপর বিনিয়োগ করতে চান।
সূত্র: ভেরিওয়েল মাইন্ড