অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা যেকোনো সুস্থ–সবল মানুষকে ভেতর থেকে ভেঙে দিতে পারে। আপনি হয়তো সামান্য বিষয় নিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অহেতুক ভাবছেন। অথচ ঠান্ডা মাথায় মনোযোগ দিতে পারলে হয়তো এক মিনিটেই সেই সমস্যার সমাধান বের করে ফেলা যেত। দুশ্চিন্তার বিভিন্ন রূপ প্রতিদিনই শারীরিক ও মানসিকভাবে আমাদের ক্লান্ত করে তোলে। পারিবারিক জীবনেও পড়তে পারে এই দুশ্চিন্তার সুদূরপ্রসারী প্রভাব।
অবিশ্বাস
দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষ তাদের সঙ্গীকে বিশ্বাস করতে অনেকটা সময় নেন। এমনটাও দেখা যায়, এরকম মানুষেরা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা বা নিজের আশঙ্কা থেকে মনের মতো গল্প বানিয়ে সঙ্গীকে দোষী সাব্যস্ত করেন। ছোট্ট বিষয়কে বড় করে নিজেই নিজেদের সম্পর্কে চিড় ধরান। সম্পর্কের মূল ভিত্তিই নষ্ট হয়ে যেতে পারে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার কারণে।
ঈর্ষা
সঙ্গীর সাফল্য কিংবা স্বাধীনতা দেখে অজান্তেই তৈরি হতে পারে ঈর্ষা। সঙ্গীর উত্তরোত্তর সাফল্য হয়তো তাকে আপনার থেকে দূরে সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, এমন হীনম্মন্যতা থেকে মনে জমা হতে পারে ঈর্ষার বিষ। পরস্পরের প্রতি ঈর্ষায় একটি সম্পর্ক কখনোই ভালোর দিকে মোড় নিতে পারে না।
অতিরিক্ত নজরদারি
হাইপারভিজিল্যান্স হলো বিশেষ কারও ব্যাপারে অতিরিক্ত সতর্কতা। সঙ্গীর প্রতিটি বিষয়ে বিশেষ নজরদারি রাখা, ছোট ছোট বিষয়কেও বিশাল গুরুত্বের সঙ্গে দেখা, এমনকি সেগুলো নিয়ে নিয়মিত জবাবদিহি করা—এগুলো হাইপারভিজিল্যান্সের উদাহরণ। অতিরিক্ত দুশ্চিন্তাগ্রস্ত যে কেউ সঙ্গীর প্রতি অতিরিক্ত সতর্কতা থেকে সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি করতে পারেন।
আশ্বাস
অতিরিক্ত দুশ্চিন্তায় ভোগা মানুষেরা তাদের পছন্দের মানুষকে ভয় করেন। আত্মবিশ্বাসহীনতায় ভোগেন। এ কারণে সম্পর্কের প্রতিটি মুহূর্তে তাঁরা তাঁদের সঙ্গীর কাছ থেকে ‘ভ্যালিডিটি’ খোঁজেন। ভাবনার গণ্ডি ছোট হতে হতে একসময় কেবল সঙ্গীর সব মনোযোগই নয়, সঙ্গীর পুরো জীবনটাই তাঁকে ঘিরে আবর্তিত হোক, এমনটাই থাকে চাওয়া। এ কারণে সামান্য অবহেলাতেই সঙ্গীর প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেন তাঁরা।
সঙ্গীকে আঁকড়ে থাকা
দুশ্চিন্তাগ্রস্ত মানুষেরা সঙ্গীকে নিজের কাছছাড়া করতে চান না। এ কারণে প্রতিটি মুহূর্তে তাঁদের আগলে রাখতে চান, তাঁদের সঙ্গ দিতে চান। এটা সঙ্গীর ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।
দুশ্চিন্তা দূর করবেন কীভাবে
সম্পর্কে আস্থা অর্জনের জন্য সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হলো ঠিকভাবে যোগাযোগ করা। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, দুশ্চিন্তা থেকে তৈরি হওয়া চিন্তাভাবনা অনেকে নিজের মধ্যেই আবদ্ধ রাখেন। সঙ্গীর সঙ্গে এ ব্যাপারে খোলাখুলি কথা বলেন না। সে ক্ষেত্রে সমস্যা কমার পরিবর্তে বাড়তে থাকে। সম্পর্কে যেকোনো সমস্যা কিংবা দুশ্চিন্তার ব্যাপারে সঙ্গীর সঙ্গে সরাসরি কথা বলুন। এতে যেমন ভুল–বোঝাবুঝি তৈরি হবে না, তেমনই সম্পর্কে ফিরে আসবে পুরোনো উষ্ণতা।
তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস