প্রেমে যেমন সুখের সময় থাকে, চড়াই-উতরাইও থাকে। সব মিলেই প্রেমিক-প্রেমিকার মধ্যে বন্ধন হয়ে ওঠে আরও মজবুত। দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে দুই পক্ষেরই তাই কিছু বিষয়ে যত্নবান হওয়া উচিত।
যোগাযোগই হচ্ছে যেকোনো প্রেমের মূল ভিত্তি। প্রেমে দীর্ঘ সময় যোগাযোগহীন থাকা যাবে না। আবার তাই বলে প্রতি আধঘণ্টা পরপর আপডেট দেওয়ারও দরকার নেই। দুজন দুজনের সঙ্গে যুক্ত থাকার চেষ্টা করুন সরাসরি দেখা করে, ফোনে কথা বলে, এসএমএস পাঠিয়ে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে। সব সময় যে কথা বলে মনের ভাব বোঝাতে হবে, সেটাও না। ধরুন, একটা মজার মিম শেয়ার করলেন, ছোট্ট এই মিমটা দিয়েই অনেকটা যোগাযোগ হয়ে যেতে পারে।
ভালো-মন্দ মিলেই মানুষ। কারও সঙ্গে যখন প্রেমের সম্পর্কে জড়াবেন, তার ভালো-মন্দ দুটি দিক নিয়েই আলোচনা করতে পারেন। তবে সেটা কীভাবে তার সামনে উপস্থাপন করছেন, সেটাও জরুরি। সঙ্গীর কোনো খারাপ দিক যদি আলোচনার মাধ্যমে শোধরাতে চান, তাহলে সেটা তাকে এমনভাবে বলুন, যাতে সে অপমানিত বোধ না করে। তবে সঙ্গীকে বদলে পুরোপুরি নতুন একটা মানুষ বানাতে চাওয়াটাও ঠিক হবে না। সম্পর্কটি কীভাবে ভালো রাখা যায়, সেটা নিয়ে আলোচনা করুন। গঠনমূলক আলোচনা প্রেমে খুবই জরুরি।
প্রেম মানেই আবেগ। তবে সেই জোয়ারে ভেসে চোখ কান বন্ধ করে রাখলে বিপদ। প্রেমে যুক্তি দিয়ে সব বিষয় বিচার করলে চলে না। তবে একটা লম্বা সময় সম্পর্ক ধরে রাখতে চাইলে আপনাকে আবেগে কিছুটা হলেও লাগাম টানতে হবে। সব বিষয় অন্ধের মতো বিশ্বাস না করে, দুজনই বাস্তবতা মেনে চলার চেষ্টা করুন। হঠাৎ সঙ্গী হয়তো চাইল রাতের ট্রেনে চেপে দূরের পাহাড়ে জ্যোৎস্না দেখতে যাবে, কিন্তু সেখানে যাওয়ার আগে পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে তারপর গা ভাসান।
‘অমুকের সঙ্গে মিশবে না’, ‘এটা করবে না’, ‘ওটা করবে না’ টাইপ নিষেধাজ্ঞা প্রেমের ক্ষেত্রে উল্টো ফল বয়ে আনতে পারে। যখনই সঙ্গীকে কোনো নিষেধাজ্ঞা দেবেন আর সেটা মেনে চলতে জোর করবেন, তখনই সম্পর্কে দেখা দেবে দূরত্ব। কোনো বিষয় ভালো না লাগলে খোলামেলা আলোচনা করুন। প্রেমিকার আগে থেকেই হয়তো অনেকগুলো ছেলেবন্ধু আছে বা প্রেমিকের আছে মেয়েবন্ধু। প্রেমের পর ওসব বন্ধুকে ত্যাগ করতে বলা কোনো পক্ষেরই উচিত না। বরং প্রেমিক বা প্রেমিকার বন্ধুদের দলে মিশে যাওয়ার চেষ্টা করুন। এতে নিজেদের মধ্যকার সম্পর্কটা আরও সহজ হবে।
প্রেমে কর্তৃত্ব দেখাতে যাবেন না। আপনি যখন আরেকটা মানুষের সঙ্গে প্রেমে থাকবেন, তখন তার বিষয়গুলোকেও গুরুত্ব দিতে হবে। সব সময় আপনার কথামতো সব হবে না। প্রেমের পর সঙ্গীর প্রতিটি কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনুন, আলোচনায় অংশ নিন। আপনার প্রেমিকা বা প্রেমিক হয়তো কোনো একটা ছোট্ট ফুল নিয়ে এল, সেটাকেও নোটিশ করুন। প্রশংসা করুন। প্রেম মানেই আপনি সঙ্গীকে আটকে ফেলছেন, এমন যেন না হয়। দুজনের জোড়া জীবনের বাইরেও আলাদা সত্তা আছে, সেটা ভুলে গেলে চলবে না। ব্যক্তিগত রুচি, পছন্দ-অপছন্দের কথা ভুলে গেলে চলবে না।