সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এমন এক জায়গা, যেখানে কয়েক ঘণ্টা পরই নতুন আলোচনার ‘টপিক’ এসে পুরোনোকে হটিয়ে জায়গা করে নেয়। দুদিনের বেশি প্রায় কোনো আলাপই টেকে না। অথচ অনুপম–পিয়া–পরমব্রত নিয়ে এখনো ‘গরম’ ফেসবুক–এক্স–ইনস্টাগ্রাম। দুই বাংলার ও বলিউডের জনপ্রিয় সংগীত পরিচালক ও গায়ক অনুপম যা–ই করছেন, তা–ই আছে আলোচনায়। একনজরে দেখে নেওয়া যাক সেসব...
অনুপম এই মুহূর্তে সমস্ত আলোচনা থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে গেছেন সমুদ্রপাড়ে, দক্ষিণ ভারতের ভাইজ্যাগে ঋষি কোন্ডা বিচে, সঙ্গে মা–বাবা। সেই ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভক্তদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিয়ে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘সমুদ্রের সঙ্গে কিছু কথা।’এসব ছবির নিচে অনেকে মন্তব্য করেছেন, ‘সামলে উঠুন, ফিরুন। আপনাকে আমাদের বড্ড প্রয়োজন!’ শুধু এটিই নয়, অনুপমের সাম্প্রতিক সব পোস্টের নিচে তাঁকে সান্ত্বনা দিচ্ছেন ভক্তরা। অনেকে আবার অনুপমের গানের লাইনই জুড়ে দিয়েছেন, ‘বড় এলোমেলো লাগে সব/ আমি ফিকে হয়ে আসি/ আকাশের নীলে আমি কই/ ধুয়ে গেছে স্মৃতিরাশি।’অনুপমকে যে সবাই একজোটে তুমুল ভরসা, মোটিভেশন আর সান্ত্বনার বন্যায় ভাসিয়ে দিচ্ছেন, এর পেছনে ভূমিকা আছে খোদ অনুপমেরই। পরম আর পিয়ার বিয়ের ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর অনুপম গানের কথায় জানিয়েছেন নিজের অনুভূতি, ‘আমি আবার ক্লান্ত পথচারী/ এই কাঁটার মুকুট লাগে ভারী/ গেছে জীবন দুদিকে দুজনারই/ মেনে নিলেও কি মেনে নিতে পারি?’পরম–পিয়ার বিয়ের ছবি ছাপিয়ে ভাইরাল হয়েছে এই গান। কেবল ফেসবুকেই অনুপমের রিলটি দেখা হয়েছে কোটির বেশিবার। বলা বাহুল্য, এটিই অনুপমের সবচেয়ে বেশি শেয়ার হওয়া ভিডিও। ছবিতে অনুপম ও পিয়া অনেক বাংলাদেশী ভক্তরা অনুপমের ফেসবুক পোস্টের নীচে মন্তব্যে জুড়ে দিচ্ছেন প্রীতম হাসানের গাওয়া ‘তুমি ভেঙে পড়ো না এভাবে’ গানটির লিঙ্কএ ছাড়া সম্প্রতি একাধিক বিষণ্ন ছবি ইনস্টাগ্রামে ৬ লাখ ৮৫ হাজার ভক্তের সঙ্গে ভাগ করে নিয়েছেন। সেসব ছবির একটাই ক্যাপশন, ‘আমি সেই মানুষটা আর নেই।’ এই বদলে যাওয়া নাকি কাছের মানুষকে হারিয়ে.... সাবেক জীবনসঙ্গী পিয়ার বিয়ের দিন আত্মহত্যাবিষয়ক একটা পোস্টও শেয়ার করেন অনুপম। অরিন্দম চক্রবর্তীর লেখা থেকে ধার করে লিখেছিলেন, ‘নিজেই নিজেকে মারা, অন্যকে দিয়ে নিজেকে মারানো আর নিজেকে মরতে দেওয়া—এই তিনভাবেই আত্মহত্যা সম্ভব। কাজেই নিজেকে উদ্যোগ নিয়েই নিজেকে মারতে হবে, সব সময় বিষয়টা এ রকম নয়।’অনুপম একাধিক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘যে কটা দিন তুমি ছিলে পাশে, কেটেছিল নৌকার পালে চোখ রেখে’, ‘আমার দুঃখগুলো কাছিমের মতো’ গানগুলো ব্যক্তিগত অনুভব থেকে লেখাএর আগে পিয়ার সঙ্গে বিচ্ছেদ নিয়ে কথা বলতে গিয়ে একাধিক সাক্ষাৎকারে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন অনুপম। এক পডকাস্টে তো স্পষ্ট করে বলেছিলেন, ‘পিয়াকে হারানো আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি। আমার মা-বাবা আছে, বন্ধুবান্ধব আছে। কিন্তু জীবনের সেই মানুষটাই তো আর নেই।’আরও বলেছিলেন, ‘৩৯ বছরে এ রকম বড় কোনো কিছু হারাইনি। বিবাহবিচ্ছেদের ঘোষণার পর আমাকে বহু মানুষ ফোন করেছে। এমনটা হবে সত্যিই কেউ ভাবতে পারেনি। কী জন্য ডিভোর্সটা হলো, সেটা নিয়েও অনেকে জানতে চেয়েছে। তবে আমি জীবনে এগিয়ে যেতে চাই। ব্যথাকে সঙ্গী করতে চাই না। আমার একটা স্ট্রং সাপোর্ট–সিস্টেম আছে। মা-বাবা আছে।’বিচ্ছেদ সামলে নিতে যে সময় লাগছে, সে কথাও জানিয়েছেন অনুপম, ‘আসলে ৩৯ বছর বয়সে এসে তিলে তিলে গড়া একটা সম্পর্ক ভাঙা আর কলেজ লাইফের ব্রেকআপের মধ্যে আকাশ–পাতাল পার্থক্য আছে।’অনুপম আর সেই মানুষটা নেই অনুপমের সব সাক্ষাৎকার, ফেসবুক–ইনস্টাগ্রামের পোস্ট, রিলস একটা দিকেই ইঙ্গিত করছে, তিনি ভালো নেই। জীবনসঙ্গীকে জীবন থেকে হারানোর ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই তাঁকে অন্যের স্ত্রী দেখা, সেই ‘অন্য’ আবার অন্য কেউ নন, ‘বন্ধু’—মেনে নিতে পারছেন না কিছুতেইহিন্দুস্তান টাইমসের প্রশ্নের উত্তরে কেবল দুই লাইনের বার্তায় লিখেছেন, ‘আমি কিছু জানতাম না। ওরা আমায় কিচ্ছু জানায়নি।’ মানে পরমব্রত আর পিয়ার সম্পর্কের বিষয়ে অনুপম কিছু জানতেন না, সেই বিষয়টিই স্পষ্ট করেছেন।