আলফা নারীকে সঙ্গী হিসেবে চাইলে আপনাকে কেমন পুরুষ হতে হবে

পেশাজীবনকে অগ্রাধিকার দেওয়া, আত্মবিশ্বাসী, দৃঢ়, সাহসী, স্বাধীনচেতা নারীরা আলফা নারী হিসেবে পরিচিত। একজন পুরুষের ভেতরে এই গুণগুলোকে খুবই ইতিবাচকভাবে দেখা হয়। আর নারীর ক্ষেত্রে মনে করা হয় ‘হুমকি’। অনেক পুরুষই সঙ্গীর পেশাগত জীবনের সাফল্যে আনন্দিত না হয়ে উল্টো ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়েন। ক্ষমতা ভাগাভাগি হয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। ওই নারীকে আর ‘নিয়ন্ত্রণ’ করতে পারবেন না বলে তাঁকে চাকরি না করার শর্ত দেন। নানাভাবে তাঁর স্বাধীনতা হরণ করে তাঁকে কুক্ষিগত করে রাখার চেষ্টা করেন। এতে আদতে ওই নারী, নারীর জীবনসঙ্গী, পরিবার, রাষ্ট্র—ক্ষতিগ্রস্ত হয় সব পক্ষ।

আলফা নারীর সঙ্গী হওয়ার জন্য এমন কিছু গুণাবলি থাকা প্রয়োজন, যা তাঁদের সম্পর্কে সামঞ্জস্যতা বজায় রাখার জন্য জরুরি। চলুন দেখে নেওয়া যাক, একজন আলফা নারীর সঙ্গীর মধ্যে কী কী গুণাবলি থাকা প্রয়োজন—

আত্মবিশ্বাস


একজন আত্মবিশ্বাসী পুরুষ কখনো তাঁর সঙ্গীকে নিয়ে কোনো ধরনের হীনম্মন্যতায় ভোগেন না। তিনি একজন আলফা নারীর আত্মবিশ্বাসের প্রশংসা আর সমর্থন করবেন। এটি সম্পর্কে ভারসাম্য তৈরি করে, যেখানে সম্পর্ক ও উভয় সঙ্গী নিরাপদ।

সম্মান

কেবল দাম্পত্যের সম্পর্কেই নয়, যেকোনো সম্পর্কে পারস্পরিক সম্মান, শ্রদ্ধাবোধ হচ্ছে মূল ভিত্তি। সঙ্গীর মতামত, পছন্দ ও ব্যক্তিগত সীমানার প্রতি সম্মান দেখানোর মানসিকতা এখানে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।

যোগাযোগে স্বচ্ছতা

স্বচ্ছ ও সৎ যোগাযোগ খুব জরুরি। একজন পুরুষকে তার চিন্তাভাবনা, অনুভূতি ও প্রয়োজনগুলো সঙ্গীর কাছে খোলামেলাভাবে প্রকাশ করতে সক্ষম হওয়া উচিত। পাশাপাশি সক্রিয়ভাবে সঙ্গীর দৃষ্টিভঙ্গি শোনা, প্রয়োজনে তা গ্রহণ করার মানসিকতা থাকা উচিত। এতে তৃতীয় পক্ষ সম্পর্কের ভেতরে আসতে পারবে না। দ্বন্দ্বে দোষারোপ না করে সমাধান খোঁজার দিকে মনোযোগ দিন, কথা বলুন।

সঙ্গীকে সমর্থন

আপনার আলফা নারী সঙ্গীর জীবনের লক্ষ্য, উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও সিদ্ধান্তগুলোকে সমর্থন করা গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর অর্জন সবাই মিলে উদ্‌যাপন এবং চ্যালেঞ্জের সময় মানসিক সমর্থন প্রদান করার মানসিকতা থাকা আবশ্যক। সমর্থন করার পাশাপাশি একজন পুরুষকে তাঁর নিজের স্বাধীনতা ও অর্জনের প্রতি নজর রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। ফলে কেউ কারও ওপর অযৌক্তিকভাবে নির্ভরশীল হবেন না।

সমান অংশীদারত্ব

এমন একটি সম্পর্ক থাকা প্রয়োজন, যেখানে উভয় সঙ্গী সিদ্ধান্ত গ্রহণ, দায়িত্ব ও অংশীদারত্বে সমানভাবে অবদান রাখে। খরচ থেকে শুরু করে রান্নাঘরের কাজ—এসব দুজনে মিলে করাটাই তো সমীচীন।

উচ্চ মানসিক বুদ্ধিমত্তা


মানুষকে পড়তে পারা, তার আবেগ বুঝতে পারা এবং তা পরিচালনা করতে পারার গুণ থাকা—আলফা নারীর সঙ্গী হিসেবে এগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ। কেননা, একজন আলফা নারী স্বাভাবিকভাবেই উচ্চ মানসিক বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন হয়ে থাকে। এই গুণ তাঁর আলফা সঙ্গীর সঙ্গে দ্বন্দ্ব কমায়, বাড়ায় সহানুভূতি।


বিশ্বস্ততা


বিশ্বাস একটি সুস্থ সম্পর্কের ভিত্তি। সঙ্গীর কাছে নির্ভরযোগ্য, সৎ ও সহায়ক হোন। বিশ্বস্ততা উভয়কেই সম্পর্কে নিরাপদ ও আত্মবিশ্বাসী করে তোলে।
আত্মসচেতনতা


নিজেকে জানুন, বুঝুন। নিজেকে বুঝতে পারলে অন্যের সঙ্গে যোগাযোগের দক্ষতাও বাড়ে এবং সঙ্গীর প্রতি সহানুভূতিও।

তবে মনে রাখতে হবে, এই গুণগুলো শুধু লিঙ্গ–ভূমিকা বা নির্দিষ্ট ব্যক্তিত্বের জন্য নয়। যেকোনো সম্পর্কের অংশীদারত্বের সাফল্যে এসব গুণ অনন্য। সামাজিক প্রত্যাশা বা স্টেরিওটাইপ চিন্তার ঊর্ধ্বে গিয়ে পারস্পরিক বোঝাপড়া, যোগাযোগ ও পারস্পরিক শ্রদ্ধা সম্পর্ককে শক্তিশালী, পরিপূর্ণ করে।