গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে ফ্যানের গতি। এমনকি ফ্যানের সংখ্যাও বাড়ে। অনেকে ভিন্ন উপায়েও ঘর ঠান্ডা করার ব্যবস্থা করেন। শীত এলে বদলে যায় এই চিত্র। অধিকাংশ মানুষই শীতের সময়টায় ফ্যান বন্ধ রাখেন। তবে কিছু মানুষ আবার ব্যতিক্রম। যতই শীত পড়ুক, ফ্যান তাঁদের চাই-ই চাই। গতিটা না হয় একটু ধীর হোক! ফ্যান চালিয়ে কাঁথা-কম্বল মুড়ি দিয়ে ঘুমান, এমন ‘ব্যতিক্রমী’ ধরনের মানুষদের কেউ না কেউ হয়তো আপনারও পরিচিত। কিংবা হয়তো আপনি নিজেই এই দলভুক্ত।
ধরা যাক, আপনি ধীর গতিতে ফ্যান চালিয়ে কম্বল মুড়ি দিয়ে আরামসে ঘুমাচ্ছেন। এমন সময় আপনার পরিবারের কেউ একজন এসে দুম করে ফ্যানটা বন্ধ করে দিলেন। অমনি ঘুমটা আপনার ভেঙে গেল। হিম হিম দিনেও আপনার মেজাজটা হয়ে উঠল গরম! উঠে গিয়ে ফ্যানটা আবার চালু করে এসে শুয়ে পড়লেন। কিন্তু আরামের ঘুমের বারোটা ততক্ষণে বেজে গেছে!
অবস্থা আরও বেগতিক হয়ে দাঁড়ায়, যদি এমন ঘটনা ঘটে দম্পতিদের মধ্যে। একই ঘরে একজন ফ্যান চালাতে চান, অন্যজন আবার এই মৌসুমে ফ্যানের নাম শুনলেই আঁতকে ওঠেন! একজন ফ্যান চালাচ্ছেন, তো আরেকজন বন্ধ করছেন। একজন বন্ধ করছেন, তো আরেকজন ফ্যান চালাচ্ছেন। ভারী মুশকিলের ব্যাপার! একে ঘুমের ব্যাঘাত, তার ওপর বারবার ফ্যান অন আর অফের জন্য এই শীতে কম্বলের নিচ থেকে বের হওয়া।
আসলে একই আবহাওয়াতে সবাই একই রকম অনুভব করেন না। কেউ অল্প গরমেই ঘেমে ওঠেন, কেউ আবার অল্প শীতেই কাঁপতে থাকেন। কারও হয়তো ঘুমের জন্য ফ্যানের মৃদু আওয়াজটা শোনা চাই-ই চাই, হয়তো তাঁর স্বস্তির জন্য সামান্য হলেও প্রয়োজন হয় বাতাসের প্রবাহ। এমনকি একই ব্যক্তিই অল্প সময়ের ব্যবধানে গরম এবং ঠান্ডা দুটিই অনুভব করতে পারেন!
কিন্তু এই ফ্যান অন-অফের যুদ্ধের কি কোনো শেষ নেই? একই ঘরে থাকলে একে-অন্যের সুবিধা-অসুবিধার প্রতি একটু যত্নশীল তো হতেই হবে। যাঁর ফ্যান না হলে চলেই না, তাঁর জন্য কিন্তু একখানা আলাদা ছোট্ট ফ্যানের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এই ফ্যানটার বাতাস যাতে কেবল তাঁর দিকে যায়, সেভাবেই রাখতে হবে। আবার, অপরজনও কিন্তু নিজের জন্য একখানা বাড়তি কম্বল রাখতে পারেন।
কানে বাতাস ঢোকার কারণে অসুবিধা হচ্ছে মনে করলে তিনি কানে মাফলার পেঁচিয়ে রাখতে পারেন। এমন ছোট ছোট পরিবর্তন দিয়েই এই শীতে হতে পারে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের চর্চা। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, কোনো ব্যক্তির গরম বা ঠান্ডার অনুভূতি যদি অন্য সবার চাইতে একেবারেই আলাদা হয়, তাহলে এর পেছনে কোনো শারীরিক অসুস্থতা রয়েছে কি না, খুঁজে বের করতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন।