‘অ্যাভাটার’ তারকা জোয়ি সালদানাকে সব্যসাচী বলতেই পারেন। কারণ, তিনি ঘর-বাহির দুটিই সামলেছেন সমান দক্ষতায়। হলিউডে যখন তার সুসময়, তখনই তিনি সন্তান নেন। ২০১৪ সালে মুক্তি পেয়েছিল গমোরা চরিত্রে জোয়ির প্রথম মার্ভেল-মুভি ‘গার্ডিয়ানস অব দ্য গ্যালাক্সি’। সে বছরই জন্ম তার দুই যমজ ছেলের—বোওয়ি ও সাই। ছবিটির পরের কিস্তি আসে ২০১৭ সালে। সে বছর জন্মায় তার তৃতীয় ছেলে জেন। ব্যস্ত সেই সময়েও হলিউডের পাশাপাশি ঠিকই পালন করেছেন মায়ের সব দায়িত্ব। জেনে নিন তার সে সাফল্যের রহস্যগুলো।
মাত্র ৯ বছর বয়সে বাবাকে হারান জোয়ি। বেড়ে ওঠার সময়টা তাঁর কেটেছে মায়ের কাছেই। বলতে গেলে একাই তিন মেয়েকে বড় করেছেন তাঁর মা। তাই মায়ের ঘর-বাহির সামলানোর ব্যাপারটা জোয়ির কাছে মোটেও নতুন কিছু নয়; বরং এটাই তিনি ছোটবেলায় নিজের মাকে করতে দেখেছেন। আর তাঁর ব্যক্তিত্বে মায়ের প্রভাব যে কতটা, সেটা তিনি অনেকবারই সাক্ষাৎকারে বলেছেন।
যখন শুটিং চলত, জোয়িকে দিনের বেশির ভাগ সময় তাতেই ব্যয় করতে হতো। বাকি সময় দিতে হতো পরিবারকে। সন্তানদের। নিজেরও নিতে হতো বিশ্রাম। আর তাই প্রতিদিন শরীরচর্চা করার ফুরসত মিলত না। কিন্তু তার পেশায় স্বাস্থ্য ঠিক রাখা অত্যন্ত জরুরি। সেটা পুষিয়ে নিতে সপ্তাহে তিন দিন জিম করতেন। নিয়ম করে সময় বেঁধে। দিনের যে সময়ে করার ফুরসত মিলত, তখনই।
শরীরচর্চায় ছাড় দিলেও খাবারে একদমই ছাড় দেন না জোয়ি। যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলেন প্যাকেট ও প্রক্রিয়াজাত খাবার। তালিকায় রাখেন তাজা ফলমূল ও শাকসবজি। এমনকি দুধও খেতে চান টাটকা। অবশ্য তাঁর ও তাঁর শিল্পী স্বামীর পেশার কারণেই সেটা সব সময় পেরে ওঠেন না। এ ক্ষেত্রেও অনুপ্রেরণা জোগায় তাঁর মায়ের স্মৃতি। বাবার মৃত্যুর পর তাঁরা চলে গিয়েছিলেন দাদাবাড়ি। ডমিনিকান রিপাবলিকে। সেখানে সবকিছু খেতেন একদম টাটকা। বাগানের সবজি। সকালে ধরে আনা মাছ। সন্তানদেরও তেমনি টাটকা খাবারের স্বাদ দিয়েছেন জোয়ি।
জোয়ি কখনোই শারীরিক গড়ন বা চেহারা দিয়ে কাউকে মূল্যায়ন করেন না। কাউকে খারাপ তখনই ভাবেন, যখন সে খারাপ কথা বলে বা কথায়-কাজে খারাপ প্রবণতা প্রকাশ করে। মাতৃত্বের ক্ষেত্রেও তাই। অন্যদের তো বটেই, নিজেকেও মা হিসেবে কখনো মূল্যায়ন বা বিচার করার চেষ্টা করেননি। বরং পুরো সময়টা উপভোগ করার চেষ্টা করেছেন। সন্তানদের সঙ্গ, তাদের সঙ্গে রাগ-ভালোবাসা। এমনকি তাদের শাসনও করার চেষ্টা করেছেন পরিমিত।
এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তাঁর সন্তানদের সব সময় উৎসাহ দেন তিনি। তাঁরা যেন কখনোই কোনো কিছু করতে ভয় না পায়। নিজের ওপর অবিশ্বাস তৈরি না হয়। কখনো তার গায়ের রঙের ভাবনা, পূর্বপুরুষদের পরিচয় তাকে দ্বিধাগ্রস্ত না করে। তাঁর পথচলাকে থমকে না দেয়।
তথ্যসূত্র : আরটিই