দাম্পত্য জীবনে ঝগড়ার পর কী করবেন, কী করবেন না

দাম্পত্য সম্পর্কে প্রতিটি দিনই যে মিষ্টিমধুর হবে, ব্যাপারটা এমন নয়। দুজনের মনোমালিন্য হবে, পরমুহূর্তেই সেটা আবার ঠিকও হয়ে যাবে। কিন্তু সম্পর্কটা ঝগড়ার আগের অবস্থায় নিয়ে যেতে প্রয়োজন বোঝাপড়া। ঝগড়ার ঠিক পরের মুহূর্তগুলো সম্পর্কের সবচেয়ে স্পর্শকাতর সময়। একটি মধুর সম্পর্কে ভাঙন ধরতে একটি ভুল সিদ্ধান্তই যথেষ্ট। যে কারণে ঝগড়ার পরমুহূর্তে দুই পক্ষকেই অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করতে হয়।

ঝগড়া শেষ হতে না হতেই সবকিছু ঠিক করতে নেমে পড়বেন না; বরং দুজনই কিছুটা সময় নিন

যা করবেন

সময় নিন

ঝগড়া শেষ হতে না হতেই সবকিছু ঠিক করতে নেমে পড়বেন না; বরং দুজনই কিছুটা সময় নিন। মাথা ঠান্ডা করুন, নিজেদের ব্যাপারে ভাবুন। কেন ঝগড়া হলো, কী করলে এই ঝগড়া এড়ানো যেত—এসব নিয়ে ভাবুন। কারণ, প্রতিটি ঝগড়াই ভবিষ্যতের জন্য একটি শিক্ষা। কিছুটা সময় নিলে দুজনের মন থেকেই ধীরে ধীরে ঝগড়ার প্রভাব কমে যাবে। তখন সমাধান পেয়ে যাবেন খুব সহজে।

কথা বলা শুরু করুন

ঝগড়া হয়েছে বলে ঘরের দরজা আটকে বসে থাকবেন, তা নয়। কথা তো দূরে থাক, মুখ দেখাদেখি বন্ধ—এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করবেন না; বরং নিজেকে শান্ত করে দুজনই কথা বলতে শুরু করুন। ঝগড়ার পরপর কথায় কিছুটা রুক্ষতা থাকা স্বাভাবিক। তাই বলে কথা বন্ধ করে বসে থাকার কোনো অর্থ হয় না।

সরাসরি কথা বলুন

ঝগড়ার পর প্রথম কাজ হচ্ছে নিজেদের শান্ত করা। কারণ, রাগের মাথায় না চাইতেও অনেক কটু কথা বেরিয়ে আসে মুখ দিয়ে। নিজেদের শান্ত করে একসঙ্গে বসুন। বসে নিজের কথা বলুন। অন্য পক্ষের কথাও মনোযোগ দিয়ে শুনুন। এতে করে দুই পক্ষই নিজেদের কথা একে অপরকে বোঝাতে পারবেন। ঝগড়ার পর যে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয়, তা–ও সহজে কেটে যাবে।

ক্ষমা চান এবং ক্ষমা করুন

মনে রাখবেন, এক হাতে কখনো তালি বাজে না। ঝগড়ার ক্ষেত্রে দুই পক্ষেরই অংশগ্রহণ থাকে। তাই ঝগড়া শেষে দুজনই একে অপরের কাছে ক্ষমা চান। ক্ষমা মহৎ গুণ, ঝগড়ার পর ক্ষমা চাওয়া ও ক্ষমা করা সম্পর্ককে মজবুত করতে সাহায্য করে।

যা করবেন না

ঘরের গল্প বাইরে বলে বেড়ানো

সম্পর্কে মনোমালিন্য থাকবেই। তাই বলে প্রতিবার ঝগড়ার পর পরিচিত মানুষজনকে সে গল্প বলে বেড়ানোর কোনো অর্থ হয় না। পরিবার, আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুবান্ধবকে ঝগড়ার কথা বললে এটি আরও ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। সম্পর্কে নাক গলাতে পারে তৃতীয় ব্যক্তি। আর একটি সম্পর্কে যখন তৃতীয় ব্যক্তির নাক গলায়, তা কখনোই ভালো কিছুর ইঙ্গিত দেয় না। তাই নিজেদের সম্পর্কের খুঁটিনাটি বিষয়াদি নিজেদের কাছেই রাখুন। বাইরে সে গল্প বলা মানেই অতিরিক্ত সমস্যা তৈরি করা।

ঝগড়ার সময় কিংবা পরে কখনোই পুরোনো ঘটনা সামনে তুলে আনবেন না

পুরোনো ঘটনা আবার তুলে আনা

ঝগড়ার সময় কিংবা পরে কখনোই পুরোনো ঘটনা সামনে তুলে আনবেন না। পুরোনো যে ঘটনার মীমাংসা দুজনে একসঙ্গে বসে করেছেন, সে ঘটনা তুলে আনা বিরাট ভুল। আবারও সেই ঘটনা টেনে এনে ঝগড়া শুরু করলে এর কোনো কূলকিনারা পাবেন না; বরং তা চক্রবৃদ্ধিহারে বাড়তেই থাকবে।

অপমানজনক কথা বলা

ঝগড়ার সময় অনেকেরই মাথা স্বাভাবিকভাবে কাজ করে না। রাগের মাথায় অনেকেই অনেক কিছু বলে ফেলেন। বেশির ভাগ সময়ই সে কথা গায়ে তিরের মতো বিঁধে। তাই ঝগড়ার সময় কিংবা এর আগে–পরে কখনোই অপমানজনক কোনো কথা বলবেন না। মতের মিল না–ই হতে পারে, তাই বলে সঙ্গী কিংবা তাঁর পরিবারকে টেনে অপমান করা, মনে আঘাত দিয়ে কথা বলা বা দুর্ব্যবহার করা মোটেও উচিত কাজ নয়।

তথ্যসূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস