‘আমি বলছি না ভালোবাসতেই হবে, আমি চাই/ কেউ একজন আমার জন্য অপেক্ষা করুক...।’ নির্মলেন্দু গুণের এই কবিতার মতো করে হয়তো অনেকেই ভাবেন, কেউ একজন আমার জন্য অপেক্ষা করুক। আর অপেক্ষা করার একটাই কারণ থাকতে পারে, নিজের শূন্যতা অনুভব করানো। কিন্তু হুট করেই তো আর কেউ কারও শূন্যতা অনুভব করে না। কাউকে নিজের শূন্যতা অনুভব করানো সহজও নয়। তবে পাঁচটি মনস্তাত্ত্বিক উপায় সম্পর্কে জানলে বুঝবেন, ব্যাপারটা আপনার জন্য অতটা কঠিনও নয়!
জানেন কি না, পারফিউমের কারণেও কেউ কাউকে মিস করে। পারফিউম আমাদের জীবনের কোনো না কোনো স্মরণীয় অভিজ্ঞতা ও আবেগের সঙ্গে বেশ গভীরভাবে জড়িয়ে থাকে। তাই এমন একটি পারফিউম বেছে নিন, যাতে বিশেষ মানুষটি বিমোহিত হন। বিশেষ মানুষটির সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার সময় যখন সেটি ব্যবহার করবেন, আপনি চলে আসার পরও এর রেশ রয়ে যাবে। মানুষটি আপনার উপস্থিতি ও শূন্যতা বেশি করে অনুভব করবেন।
আমরা সাধারণত যে কাজ সম্পন্ন করে ফেলি, সেটার কথা খুব একটা মনে রাখি না। কিন্তু অসম্পন্ন কাজের ব্যাপারে কী করি? সেটা সহজে ভুলে যেতে পারি না। মনস্তত্ত্ববিদ্যায় একে বলে ‘জিগারনিক ইফেক্ট’। এর নামকরণ হয়েছে লিথুনিয়ান-সোভিয়েত মনোবিদ ব্লুমা জিগারনিকের নামানুসারে। জিগারনিক ইফেক্ট কেমন? এই যেমন ধরুন, প্রিয়জনের সঙ্গে কোনো বিষয়ে কথা হচ্ছে। সেটা এমন পর্যায়ে আছে, পরের অংশটুকু শোনার জন্য আপনার প্রিয়জন উদ্গ্রীব হয়ে আছেন। কিন্তু আপনি কথাটি শেষ না করে পরে বাকিটুকু আলাপ করবেন বলে চলে আসতে পারেন। এতে করে হবে কি, মানুষটি আপনাদের অসম্পূর্ণ আলাপ নিয়ে একধরনের ভাবনায় ডুবে থাকবেন।
খুব ক্ষুদ্র, কিন্তু আপনার দরকারি, তেমন কিছু একটা প্রিয় মানুষের কাছে রেখে আসতে পারেন। সেটি একটি নোটবুক, একটি বই কিংবা চুলের ব্যান্ডও হতে পারে। প্রিয় মানুষের হাতে যখন জিনিসটি পড়বে, তখন তিনি বুঝতে পারবেন যে সেটি আপনার দরকারি। এতে তাঁর মধ্যে একধরনের নস্টালজিয়া তৈরি হতে পারে। আপনাকে নিয়ে তখন হয়তো বেশি বেশি ভাববেন তিনি।
নিজেকে উপস্থাপনের একটি অন্যতম উপায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম। সেখানে নিয়মিত আপনার খবরাখবর পোস্ট করতে পারেন। আপনি কী করছেন, কী ভাবছেন—এসব আরকি। তবে খেয়াল রাখতে হবে, সেটা যেন অতিরিক্ত না হয়ে যায়। প্রিয়জন যখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আপনার খবরাখবর দেখবেন, তখন আপনাকে নিয়ে নিশ্চয়ই তিনি ভাববেন।
প্রিয়জনের কাছে নিজের শূন্যতা অনুভব করানোর সহজ; কিন্তু শক্তিশালী একটি উপায় হচ্ছে স্মৃতিময় মুহূর্তের জন্ম দেওয়া। দুজন মিলে কোথাও ঘুরতে যাওয়া, রাস্তার পাশে কোথাও গাড়ি থামিয়ে একান্তে গল্প করা কিংবা কফি শপে বসে কফি খাওয়ার মতো স্মৃতিময় কিছু মুহূর্ত তৈরি করতে পারেন। দেখা যাবে, আপনার অনুপস্থিতিতে সেসব মুহূর্তের কথাই হয়তো প্রিয়জনের মনে বেশি করে বেজে উঠছে।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া