বাড়িতে কুকুর আনা আপনার সিদ্ধান্ত। তবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে নিচের এ সাতটি তথ্য জেনে রাখা দরকার। কেননা, ওর যত্নের যেন কোনো ত্রুটি না হয়, সেটি নিশ্চিত করা আপনার দায়িত্ব।
১. কুকুরের বিভিন্ন জাত নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া
সারা পৃথিবীতে কুকুরের স্বীকৃত জাত আছে ৩৬০টির মতো। তবে মিশ্র কয়েকটি জাতসহ বিজ্ঞানীদের জানাশোনার বাইরের সবগুলো জাত নিয়ে গুনতে বসলে এই সংখ্যা হাজারের ঘরে গিয়ে ঠেকবে। পোষা কুকুর বাড়িতে আনার আগে কুকুরের স্বীকৃত জাতগুলো নিয়ে একটু লেখাপড়া করে নিলে ভালো হয়।
বিভিন্ন জাতের কুকুরের বৈশিষ্ট্য ও চরিত্র বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। জাত নিয়ে জানাশোনা থাকলে আপনার বাড়ির পরিবেশ বিবেচনায় কোন জাতের কুকুরটি উপযুক্ত হবে, বুঝতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে কুকুরের আকার এবং এর কী কী প্রয়োজন, সেগুলো বিবেচনায় আনুন। পোষা কুকুরটির যে জাতই পছন্দ করুন না কেন, সেটি যেন আপনার স্বাভাবিক জীবনযাপনে কোনোরূপ বাধার সৃষ্টি না করে, সেটি খেয়াল রাখবেন।
২. আর্থিক পরিকল্পনা করুন
পোষা কুকুর কেনার আগে একটা আর্থিক পরিকল্পনা সাজিয়ে ফেলা ভালো। খাবার থেকে শুরু করে নিয়মিত স্বাস্থ্যসেবা—এ রকম অনেক বিষয়ের ওপর কুকুরের ভালো থাকা নির্ভর করে। কুকুরের ভালোর জন্য প্রয়োজনীয় সব আয়োজন করতে হলে অনেক সময় বেশ ভালো পরিমাণ অর্থও ব্যয় করতে হয়। পোষা প্রাণীর পেছনে করা ব্যয় যেন আপনার বাজেটের মধ্যে হয়, সে জন্য আগে থেকে একটি পূর্ণাঙ্গ আর্থিক পরিকল্পনা করে নিন।
৩. ‘পেট প্রুফিং’ নিশ্চিত করা
পেট প্রুফিং মানে হলো পোষা প্রাণীটির জন্য নিরাপদ পরিবেশ তৈরি করা। কুকুরটি যেহেতু সারাক্ষণ আপনার বাড়িতেই থাকবে, সেহেতু আপনার থাকার জায়গা বা শয়নকক্ষ থেকে বিষাক্ত বা অনিরাপদ জিনিসগুলো, যেমন ক্লিনিং এজেন্ট, বিষাক্ত খাবার, কসমেটিকস বা খেলনা ইত্যাদি সরিয়ে ফেলুন। এককথায়, অবলা প্রাণীটি যেন নিরাপদে থাকে, নিজের বাড়িতে সেই পরিবেশ আগেভাগেই নিশ্চিত করে ফেলুন।
৪. কুকুরের জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করে ফেলা
ফ্ল্যাট বাসা হলে অন্দরমহলে এবং উঠান বাড়ি হলে অন্দরে ও বাইরে—দুই জায়গায় পোষা কুকুরের জন্য আরামদায়ক থাকার জায়গা নির্দিষ্ট করে ফেলুন। কুকুরের ছোট জাতের তুলনায় বড় জাতগুলোর থাকার জন্য বেশি জায়গা প্রয়োজন হয়। তাই কিনে আনার আগে কুকুরটি কোথায় থাকবে, তা আরামদায়ক হবে কি না, এসব ঠিক করে ফেলা দরকার।
৫. মনোযোগ দেওয়ার মানসিকতা রাখা
কুকুরের গড় আয়ু মাত্র ১৩ বছর। ছোট্ট এই জীবনে মালিকের কাছ থেকে একটি কুকুরের প্রয়োজন আজীবনের প্রতিশ্রুতি ও মনোযোগ। নিজের সন্তানের মতো কুকুরটির যত্ন নিতে হবে। কুকুরের সব চাহিদা পূরণ করতে হবে। তাই কুকুরটির জন্য যেকোনো ত্যাগ স্বীকার করার মানসিকতাও তৈরি করে ফেলুন। সকালে-বিকেলে আপনার পোষা কুকুরকে নিয়ে হাঁটতে বের হোন। পোষা কুকুরের সঙ্গে খেলুন। ওর খেয়াল রাখুন।
৬. পশু চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা
কুকুরের স্বাস্থ্যের যত্ন নিতে হবে আপনাকেই। টিকাদান ও স্বাস্থ্য পরীক্ষার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। এগুলো যেন নিয়মিত হয়, সেটিও নিশ্চিত করতে হবে। কখনো কখনো দুর্ঘটনা বা অন্যান্য কারণে জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হতেই পারে। জরুরি অবস্থায় কুকুরটি যেন প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা পায়, সে জন্য একজন অভিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত পশু চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা প্রয়োজন।
৭. ‘ডগ ট্রেনিং’ দেওয়া
ডগ ট্রেনিং মানে কুকুরকে সুশৃঙ্খলভাবে বিভিন্ন আচরণ শেখানো। আপনার যদি কুকুরছানা থাকে, তাহলে সেটির ডগ ট্রেনিং অবশ্যই দরকার। দুর্ঘটনা থেকে বাঁচতে এবং খারাপ অভ্যাস থেকে কুকুরকে দূরে রাখতে যথাযথ ডগ ট্রেনিংয়ের বিকল্প নেই। তাই পোষা কুকুরকে ডগ ট্রেনিং দেওয়ার ব্যবস্থা আগেভাগেই করে রাখতে হবে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া