বিশ্বাস, ভরসা, শ্রদ্ধা, সততা, সুখ-দুঃখ, হাসি-উল্লাস—এমন সব শব্দকে একটি একক শব্দেই প্রকাশ করা যেতে পারে, তা হলো—বন্ধুত্ব।
ইংরেজ সাহিত্যিক স্যামুয়েল টেইলর কোলরিজ বন্ধুত্বকে বলেছেন, শেল্টারিং ট্রি বা আশ্রয়দাতা বৃক্ষ। অবশ্য সব বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে এসব বক্তব্য খাটে না। গোটা জীবনজুড়ে হাজার হাজার বন্ধু হয়। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত থেকে যায় কজন! সত্যিকারের বন্ধু, প্রিয় বন্ধু, পরম বন্ধু, ইংরেজিতে যাকে বলে ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ হয় হাতে গোনা।
গবেষণা বলছে, প্রতি ১২ জনে একজন হয় আজীবনের, হয় পরম বন্ধু। আবার একই সময়ে মানুষের দুইয়ের অধিক ‘বেস্ট ফ্রেন্ড’ থাকে না। ঠিক যেন প্রেমের মতোই ব্যাপার। একসঙ্গে যেমন একাধিক প্রেম চলে না, তেমনই দুইয়ের অধিক ঘনিষ্ঠ বন্ধুও হয় না।
বন্ধুত্বের কথা বলতে গিয়ে চলে এল প্রেম। খাঁটি বন্ধুত্বের বিচারে প্রেম নেহাত মামুলি সম্পর্ক, প্রেমের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রেখেও এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। সত্যিই তো, প্রথাগত প্রেম, মায়া, স্নেহ, মোহ—এসব অনুভূতির চেয়ে সহস্র গুণ শক্তিশালী অনুভূতির নাম বন্ধুত্ব। প্রেম ফুরিয়ে যায়। চূড়ান্ত ধ্বংসস্তূপে ঠেলে দেয় কখনো। বন্ধুত্ব ফুরায় না। ধ্বংসস্তূপ থেকে টেনে তুলে আনে। বিপদে বুক পেতে দেয়। দুর্গম পথে হাত ধরে রাখে শক্ত করে। ডুবে যাওয়ার মুখে আগলে ধরে রাখে। একজন সত্যিকারের বন্ধু মানে সেই স্বচ্ছতম আয়না, যার সামনে চোখ বন্ধ করে দাঁড়িয়েও নিজের ভেতরটাকে দেখা যায়। তুমুল হাহাকারে জড়িয়ে ধরে চোখের জলে ভাসিয়ে দেওয়া যায় বন্ধুর বিশ্বস্ত কাঁধ।
আজ ৮ জুন, বেস্ট ফ্রেন্ড ডে বা ঘনিষ্ঠ বন্ধু দিবস। ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে ১৯৩৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস দিনটি চালু করে। এর পর থেকে সে দেশে প্রতিবছর এটি পালিত হচ্ছে।
আপনিও দিবসটি পালন করতে পারেন। বন্ধুকে নিয়ে দূরে কোথাও ঘুরতে যেতে পারেন। সিনেমা দেখা যেতে পারে। সারপ্রাইজ পার্টির আয়োজন করা যেতে পারে। বন্ধুকে তাঁর প্রিয় কিছু উপহার দিতে পারেন। বন্ধুকে বলা হয়নি কখনো, এমন না বলা জমিয়ে রাখা কথামালায় সাজিয়ে চিঠি লিখতে পারেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বন্ধুকে নিয়ে আবেগঘন, মজাদার কিংবা স্মৃতিময় ছবি, লেখা, ভিডিও শেয়ার করতে পারেন।
ডেজ অব দ্য ইয়ার অবলম্বনে