মডেল: তানজিন তিশা ও রোশান
মডেল: তানজিন তিশা ও রোশান

ভালোবাসা মরে যাচ্ছে না তো?

সম্পর্ক এমনিতেই সংবেদনশীল বিষয়। সামান্য বিষয়েই ভুল–বোঝাবুঝির সৃষ্টি হতে পারে। অনেক সময় একঘেয়েমিও ভর করে। তাই তো পৃথিবীর অনেক কিছুর মতো সম্পর্কেরও পরিচর্যা প্রয়োজন। প্রয়োজন নবায়নের।

‘এইখানে তোর দাদির কবর, ডালিম গাছের তলে,
তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।
এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ,
পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।’

মানুষটি মরে গেলেও ভালোবাসা যে শেষ হয় না, জসীমউদ্‌দীনের ‘কবর’ তো তারই উদাহরণ। তবে ভালোবাসার নিয়মিত পরিচর্যা না হলে আপনি জীবিত থাকতেও ভালোবাসা মরে যেতে পারে। ভালোবাসা বাঁচিয়ে রাখতে হয় প্রতিদিনের পরিচর্যায়। অনেকটা গাছের গোড়ায় নিয়মিত জল দেওয়ার মতো করে।

মডেল: তানজিন তিশা ও রোশান

সময়ের সঙ্গে ব্যস্ততা বাড়বে, এটা সত্য। তবে এরই ফাঁকে প্রিয়জনের জন্য কিছুটা সময় বরাদ্দ রাখা জরুরি। যেকোনো সম্পর্কেই যত্নের দরকার হয়। প্রেমিক–প্রেমিকা বা স্বামী–স্ত্রীর ভালোবাসা অটুট রাখতে একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা থাকাটা জরুরি।

যেভাবে বুঝবেন ভালোবাসা কমে যাচ্ছে কি না

  • বিনা কারণে সঙ্গীর সঙ্গে ঝগড়া করা। তাকে কটু কথা বলা।

  • আগে হয়তো সঙ্গীর জন্য হঠাৎ কিছু কিনতে ইচ্ছা হতো, এখন তা হয় না। এমনটা হলে বুঝবেন আপনার ভালোবাসা কমে যাচ্ছে।

  • সঙ্গীর সঙ্গে ঘুরতে গিয়ে আপনার মন হয়তো পড়ে আছে অন্যদিকে। আপনার উদাস মনোভাব সম্পর্কে চিড় ধরাতে পারে।

  • ঘটনা যেমনই হোক, সঙ্গীকে শাস্তি দেওয়া যাবে না। গায়ে হাত তোলা বা অন্য কোনো শাস্তি দিলে বুঝতে হবে ভালোবাসা মরে যাচ্ছে।

  • সামান্য কোনো বিষয় নিয়েও প্রিয়জনের প্রতি আপনার কঠোরতা ভালোবাসার দৈন্যই প্রকাশ করবে।

  • যেকোনো বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্ব বা মতভেদ দেখা দিলে বুঝবেন, ভালোবাসা কমে যাচ্ছে।

মডেল: তানজিন তিশা ও রোশান
  • আপনার যদি কখনো মনে হয় যে আপনি একা। কাছাকাছি থাকা মানুষটির (প্রিয়জন) ওপর যদি আপনি জোর করে কিছু চাপিয়ে দেন, তাহলে বুঝবেন ভালোবাসায় ঘাটতি আছে।

  • আপনার সঙ্গী যদি আপনাকে জোর করে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে, তাহলে বুঝবেন, তার ভালোবাসা কমেছে।

  • সঙ্গীর প্রতি যদি আপনার অবিশ্বাস জন্মে, তাহলে বুঝবেন সেখানে প্রেম শুকিয়ে যাচ্ছে।

  • দুজনের প্রতি দুজনের দোষারোপ বা অভিযোগের ঝুলি যত বড় হবে, ভালোবাসা তত কমে আসবে।

  • সঙ্গীকে সময় দিতে গিয়ে আপনার যদি কখনো মনে হয় যে আপনি অযথা সময় নষ্ট করছেন, তাহলে বুঝবেন আপনার ভালোবাসার পরিচর্যা দরকার।

  • কোনো কারণে যদি আপনার মনে হয় যে সঙ্গী খুব একটা আকর্ষণীয় নয়; কিংবা অন্য কারও সঙ্গে তাকে তুলনা করতে শুরু করেন, তখন বুঝবেন ভালোবাসা কমে যাচ্ছে।

ওপরের কারণগুলোর কয়েকটি আপনার সঙ্গে ঘটতে শুরু করলে বুঝবেন, আপনার এখন ‘রিস্টার্ট’ করতে হবে। অর্থাৎ আপনার পুরোনো ভালোবাসা জাগিয়ে তুলতে হবে।

ভালোবাসা বাড়াতে যা করবেন

মডেল: তানজিন তিশা ও রোশান
  • কোনো বিষয়ে মতের অমিল হলে রেগে না গিয়ে বুঝিয়ে বলুন। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করুন।

  • সঙ্গীকে পর্যাপ্ত সময় দিন। সে কী চায়, সেটা বোঝার চেষ্টা করুন।

  • সঙ্গীর ছোট ছোট ইচ্ছাকে প্রাধান্য দিন। আপনার ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ ঘটান।

  • হঠাৎ করে দুজন কোথাও ঘুরে আসুন। এক বিকেলে দুজন নাহয় কফি খেতে খেতে কিছুটা সময় কাটিয়ে ফেলুন।

  • কোনো বিষয়ে রাগ পুষে না রেখে, সঙ্গীর কোনো আচরণে কষ্ট পেলে সেটা তাকে বলে ফেলুন।

  • অনেক সময় শারীরিক যোগাযোগ কমে গেলেও দূরত্বের সৃষ্টি হতে পারে। তাই মনের পাশাপাশি শারীরিক সম্পর্কও ঠিক রাখতে চেষ্টা করুন।

  • একটা গোলাপ কিংবা ছোট্ট একটা কেক দিয়েও পাহাড় সমান অভিমান কমিয়ে ফেলা যায়।

  • চলার পথে যে কারও ভুল হতে পারে। তবে একই ভুল বারবার না করে শোধরাতে সতর্ক থাকতে হবে। ছোটখাটো ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখতে পারেন।

  • সঙ্গী মানে একজন আরেকজনের পরিপূরক। প্রতিদ্বন্দ্বী হলে চলবে না।

  • সঙ্গীর বদনাম করবেন না।

সূত্র: ফেমিনা, মাইন্ড বডি গ্রিন ডটকম, ফিজিওলজি টুডে ও চিটশিট ডটকম।