পাঠকের সুখ–দুঃখ, হাসি–আনন্দ, পছন্দ, ভালোলাগা, ভালোবাসাসহ যে কোনো না বলা কথা শুনতে চায় মনের বাক্স। প্রতি সপ্তাহে পাঠকের পাঠানো সেসব লেখা থেকে নির্বাচিত কিছু লেখা আজ প্রকাশিত হলো এখানে
বাড়ি থেকে বিদায় নেওয়ার সময় আমি কখনোই মায়ের দিকে তাকানোর সাহস করি না। কারণ, তাঁর ছলছল চোখ আমার হেঁটে চলার শক্তি কেড়ে নেবে। তাই কষ্ট বুকে চেপে, পেছনে না তাকিয়ে সামনে এগিয়ে চলি। দুটো টিউশন হয়েছে, সেই ভরসাতেই ব্যস্ততম নগরীতে আসা। ১ তারিখে ফোন দিলাম ছাত্রের বাসায়, তারা এখন বলছে আর কিছুদিন পর জানাবে। মেসে থাকার খরচ নিয়ে ভীষণ চিন্তায় পড়ে গেলাম। মায়ের সঙ্গে আমি ইচ্ছা করে ফোনে কথা বলি না। কারণ, আমি জানি, তখন আর কথা হবে না। দুপাশে শুধু কান্নার শব্দ শোনা যাবে। ছোটবেলায় যখন মা আমাকে রেখে কোথাও বেড়াতে যেতেন, আমি মায়ের কাপড় জড়িয়ে ধরে মায়ের গন্ধ শুঁকতাম। কেঁদেকেটে চোখের পানি ঝরাতাম। আজ রাতেও মায়ের কথা ভীষণ মনে পড়ছে। এলোমেলোভাবে মনে পড়ছে ছোটবেলার সেসব কথা। এখন অনেক রাত, সবাই ঘুমিয়ে পড়েছে। বাইরে বৃষ্টি পড়ছে, চারদেয়ালের মধ্যে আমার চোখেও বৃষ্টি পড়ছে।
মোহাম্মদ আবু হাসান, শিবচর, মাদারীপুর
আজও পথের শেষে দৃষ্টি! সীমান্তের ওপারে অধীর অপেক্ষায় চেয়ে থাকি, তুমি আসবে বলে। আজও স্নিগ্ধ আলোর জোৎস্না রাতে ডিঙির ওপর বসে থাকি খুব একা। এপাড়ে আমি, ওপাড়ে কেবল কাশবন। এর মধ্যখানে নীরব নিথর নদী। অনন্যা, সেদিন খুব আকাঙ্ক্ষা নিয়ে তোমার ঘরের দুয়ারে গেছি। বহু দ্বিধাদ্বন্দ্ব নিয়ে আস্তে করে দ্বার খুলি। তন্নতন্ন করে কেবল নুনে ভরা একটা চিঠি পেয়েছি। যতবার পড়ি কেবল কেঁচোর মতো ছটফট করি, সারা শরীরে নুনের জ্বালা। সেদিন মুঠোভরা বকুলগুলো ধরে রাখার শক্তিটুকু ছিল না। বকুলগুলো শুকিয়ে গেছে, তবু তোমার অভিমান শুকায়নি? শুকনো বকুল রোজ মেঝের ওপর গোঙায় আর ভাবে, কোন অপরাধে কারও গলায় মালা হতে পারিনি। কান পেতে শুনি, এ তো আমারই কণ্ঠের চাপা আর্তনাদ। তুমি কেন গেলে একবার বলে যাও। সেদিন দুটো বাদাম বেশি খেয়েছি বলে, নাকি জোর করে খোঁপায় গোলাপ গুঁজে দিয়েছি, সেই অভিমানে? পৃথিবীর সব ট্র্যাজেডি বোধহয় এমন অপ্রাপ্তিতে ভোগে আজীবন।
খালিদ মাহমুদ, কুষ্টিয়া
তুমি আমার সঙ্গে প্রেম করার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছ। বারবার আমাকে প্রস্তাব দিচ্ছ। তোমার প্রস্তাবে রাজি হচ্ছি না কেন জানতে চেয়েছ। তাহলে বলি শোনো, আমি নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। আমার পক্ষে তোমাকে ভালোবাসা সম্ভব নয়। গরিবের প্রেম-ভালোবাসা মানায় না। অনেক কষ্টের জীবন আমার। বড্ড দুঃখী মানুষ আমি। আমার ঠুনকো জীবনে তোমাকে জীবনসঙ্গিনী করতে চাই নে। আমার মাথার ওপরে ছাদ নেই, পায়ের তলায় মাটি নেই। এমন একটি অনিশ্চিত জীবনে তোমার প্রবেশ একদম বেমানান। তুমি চাইলেও তোমাকে গ্রহণ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। দয়া করে আমাকে জোর কোরো না। তোমার কী এমন ভালো লাগল আমার, আমি জানি না! পাগলামি কোরো না। ভালো থেকো। নিজের খেয়াল রেখো। আমার জন্য দোয়া কোরো, যেন অনেক বড় হতে পারি।
শিশির মাহমুদ, ঢাকা
অধুনা, প্রথম আলো, প্রগতি ইনস্যুরেন্স ভবন, ২০–২১ কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫। ই-মেইল: adhuna@prothomalo.com, ফেসবুক: facebook.com/adhuna.PA খামের ওপর ও ই-মেইলের subject–এ লিখুন ‘মনের বাক্স’