শরীরের পানির চাহিদা পূরণ করতে নানা ধরনের পানীয় গ্রহণ করা হয়ে থাকে। এসব পানীয়তে পানি ছাড়াও থাকে নানা পুষ্টি উপাদান। ‘ডিটক্স ওয়াটার’-ও এমনই এক পানীয়। ‘ডিটক্স ওয়াটার’ থেকে ভিটামিন বি ও সি পাওয়া যায় প্রচুর। শরীর সুস্থ রাখতে এবং রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে এসব ভিটামিন গ্রহণ করা প্রয়োজন রোজ।
এ দুই ধরনের ভিটামিনের বৈশিষ্ট্য হলো, এগুলো খুব সহজেই পানিতে মিশে যায়। রান্নার সময় পানিতে দ্রবীভূত এসব ভিটামিন কমে যায়, উত্তাপেও নষ্ট হয়ে যায় ভিটামিন সি। এসব উপাদান পেতে ডিটক্স ওয়াটার গ্রহণ তাই শরীরের জন্য উপকারী। ডিটক্স ওয়াটারের উপকারিতা এবং এই পানীয় তৈরির সঠিক উপায় সম্পর্কে জানালেন রাজধানীর গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সাইন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান।
নানা রকম টক ফল দিয়ে হতে পারে ডিটক্স ওয়াটার। কমলা, মাল্টা, আনারস—যা মন চায়। যেসব সবজি কাঁচা খাওয়া যায়, সেগুলোও এই পানীয়তে ব্যবহার করা যায়। এই যেমন শসা, গাজর বা টমেটো। ধনেপাতা, পুদিনাপাতা বা লেটুসপাতার মতো বাহারি পাতাও যোগ করা যায়।
ডিটক্স ওয়াটার তৈরি করার জন্য যে উপকরণ বেছে নিতে চান, তা বড় বড় টুকরা করে কেটে নিন। খোসা থাকলেও ক্ষতি নেই। কমলার কোয়াগুলো নিলেই চলে, আবার চাইলে খোসাও নিতে পারেন। ফল, সবজি, পাতার টুকরাগুলো এক-দুই ঘণ্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। তাহলেই তৈরি হয়ে যাবে ডিটক্স ওয়াটার। ভিজিয়ে রাখার সময় আপনি চাইলে পাত্রটি ফ্রিজেও রাখতে পারেন। তবে ফ্রিজে রাখুন আর বাইরেই রাখুন, পাত্রের মুখ ঢেকে রাখা ভালো।
স্বাদ ও পুষ্টির জন্য নানাভাবেই হতে পারে ফল, সবজি আর পাতার সমন্বয়। তরমুজের সঙ্গে ধনেপাতা ভিজিয়ে রাখতে পারেন। বাঙ্গিও ব্যবহার করতে পারেন। শসার সঙ্গে দিতে পারেন পুদিনাপাতা। আবার কয়েক রকম ফল কিংবা কয়েক রকম সবজির টুকরা দিয়েও তৈরি করা যায় ডিটক্স ওয়াটার। ফল আর সবজি মেশালেও ক্ষতি নেই। পুরোটাই আপনার পছন্দের ওপর নির্ভর করছে। এতে কোনো লবণ, চিনি বা মসলা দিতে নেই।
ডিটক্স ওয়াটার তৈরি হয়ে যাওয়ার পর দেড়-দুই ঘণ্টার মধ্যে খেয়ে নিতে হবে। কারণ, এরপর এর পুষ্টিগুণ কমে যেতে থাকে। আপনি হয়তো কর্মক্ষেত্রে যাচ্ছেন, তার আগে ঝটপট পানির পাত্রে কয়েক টুকরা ফল মিশিয়ে নিতে পারেন। অফিসে পৌঁছে খানিকক্ষণ কাজ করার পরই খেয়ে নিতে পারেন এই ডিটক্স ওয়াটার। পানিটুকু খেয়ে নেওয়ার পর তলানি হিসেবে পড়ে থাকা ফল, সবজি বা পাতার টুকরাও চাইলে ভাতের সঙ্গে খেতে পারেন। তবে তা থেকে পাবেন কেবল আঁশ, অন্যান্য পুষ্টি উপাদান তো আগেই গ্রহণ করে ফেলেছেন। আঁশও কিন্তু শরীরের জন্য প্রয়োজনীয়।