খাওয়ার একটু পরই কেন ক্ষুধা লাগে

খাওয়ার একটু পরই ক্ষুধা লেগে যাওয়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এমন মুশকিলে অনেকেই পড়েন। আবার ওজন কমাতে ও সুস্থ জীবনধারা বজায় রাখতে খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণও জরুরি। তাই কী করলে এমন ভোগান্তিতে পড়তে হবে না, সেটি জানতে হবে। এ জন্য আগে আপনাকে এর পেছনের কারণগুলো অবশ্যই জানতে হবে।

খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের অর্থ এই নয় যে সব ধরনের খাবারের পরিমাণই কমিয়ে দিতে হবে
ছবি: প্রথম আলো

পর্যাপ্ত আমিষ না খাওয়া

খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণের অর্থ কিন্তু এই নয় যে আপনাকে একেবারে সব ধরনের খাবারের পরিমাণই কমিয়ে দিতে হবে। আমিষজাতীয় খাবার কম খেলে অন্যান্য খাবার খেয়েও আপনি পুরোপুরি তৃপ্তি পাবেন না। খাওয়ার খানিক পরই ক্ষুধা পেয়ে যাবে। তাই ভাত, রুটি, আলু, বিস্কুট, নুডলস, পাস্তার মতো শর্করাজাতীয় খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দিন। কমিয়ে ফেলুন খাবারের তেল-চর্বির পরিমাণ। কিন্তু আমিষ গ্রহণ করুন পর্যাপ্ত। সকালের নাশতায়ও রাখুন আমিষজাতীয় খাবার। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ ছাড়াও উদ্ভিজ্জ আমিষ গ্রহণ করতে পারেন। রোজকার খাদ্যতালিকায় নানা রকম ডাল ও বীজ রাখতে পারেন।

পর্যাপ্ত আঁশসমৃদ্ধ খাবার না খাওয়া

আঁশসমৃদ্ধ খাবার পরিপাক হয় ধীরে ধীরে। এ ধরনের খাবার খেলে পেট ভরা থাকে লম্বা সময় পর্যন্ত। এগুলো কম পরিমাণে খেলেও আপনার চট করে ক্ষুধা পেয়ে যাবে। তাই বেশি পরিমাণে শাক গ্রহণ করুন। রাতে শাক খেলেও কিন্তু ক্ষতি নেই। পর্যাপ্ত আঁশ পাওয়ার জন্য কাঠবাদাম, পেস্তাবাদাম, চিয়া বীজ এবং আঁশসমৃদ্ধ সবজি, যেমন ফুলকপি, গাজর, ব্রকলিও খাবেন। খেতে পারেন গোটা শস্যের তৈরি খাবারও, যেমন লাল চালের ভাত বা লাল আটার রুটি। ওটমিলও খেতে পারেন।

খাবারে মনোযোগ না দেওয়া, দ্রুত খাওয়া

কোনোমতে নাকেমুখে দুটো গুঁজে নিয়েই ভাবছেন আপনার খাওয়া হয়ে গেল? এমনটা করলে আক্ষরিক অর্থে আপনার খাওয়া হলো ঠিকই, কিন্তু আপনার মস্তিষ্ক কিন্তু তৃপ্তির সংকেত দিতে পারবে না। তাই মনোযোগ দিয়ে খাবেন। ধীরেসুস্থে খাবেন।

যথাসময়ে পানি না খাওয়া

খাওয়ার ১৫-২০ মিনিট আগে এক গ্লাস পানি খেয়ে নিলে আপনার পেট ভরা ভরা অনুভব করবেন। খাদ্যাভ্যাস নিয়ন্ত্রণ করতে তাই এ অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। একটু ক্ষুধার্ত অনুভব করলেও খানিকটা পানি খেয়ে নিতে পারেন। ক্ষুধা জোরালো হওয়ার সুযোগ পাবে না।

খাওয়ার ১৫-২০ মিনিট আগে এক গ্লাস পানি পান করুন

মানসিক চাপ

মানসিক চাপে থাকলে কর্টিসোল হরমোনের আধিক্য হয়, সেটির প্রভাবে আপনি খাবার খেয়ে পরিতৃপ্ত না-ও হতে পারেন। তাই চাপ সামলে জীবনের পথে এগিয়ে চলার চেষ্টা করুন। চাপ সামলাতে শ্বাসের ব্যায়াম, যোগব্যায়াম, ধ্যান করতে পারেন।

কম ঘুমানো

ঘুম কম হলে ক্ষুধা লাগতে পারে বারবার। তাই ঘুমের সময়ের ব্যাপারে আপস করবেন না। সময়মতো ঘুমানো এবং ঘুম থেকে ওঠার চর্চা করুন।

প্রয়োজনের তুলনায় কম খাবার খাওয়া

সুস্থ থাকার জন্য আপনার রোজ যতটা খাবার প্রয়োজন, তার চেয়ে কম খেলে কিন্তু মুশকিল। তাতে খুব সহজেই আপনার ক্ষুধা পেয়ে যাবে। তাই সুষম খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে, পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে হবে। আর কোনো পুষ্টি উপাদান একেবারে বাদ দেওয়াও যাবে না।

ব্যায়ামের পর ক্ষুধা লেগে যায় অনেকের

অতিরিক্ত কায়িক পরিশ্রম

কায়িক পরিশ্রম বেশি করলে স্বাভাবিকভাবেই শরীরে খাবারের চাহিদা বাড়বে। তাই ভারী ব্যায়ামের চর্চা করলেও খাবার খাওয়ার পর ক্ষুধা লেগে যেতে পারে অল্প সময়ের মধ্যেই।

ডায়াবেটিস ও হরমোনের সমস্যা

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তির বারবার ক্ষুধা লাগতে পারে। লেপটিন নামক হরমোনের সমস্যায়ও এমনটা হতে দেখা যায়।

সূত্র: হেলথলাইন ও মায়ো ক্লিনিক